পটাশপুর-পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নং ব্লকের পঁচেটগড় রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওড়িষ্যার আটঘর এলাকার বাসিন্দা আদি পুরুষ কালামুরারি দাস মহাপাত্র। তিনি ওড়িশার জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্য দিন সঙ্গীত পরিবেশন করতেন তিনি। সেই সঙ্গীতেই মুগ্ধ হয়ে রাজা তাকে মন্দির পরিচালনা র দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্দিরের পাশে পেয়েছিলেন জমি সেই জমিতে জগন্নাথ দেবের নিত্য সেবার জন্য তুলশি চাষ করতেন। পরবর্তী সময় জাহাঙ্গীর এর নজরে পড়ে যান। তাকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। কাজটি তিনি সূচারু ভাবে করতে প্রথমে পটাশপুর এলাকার খাঁড় কল্যানপুরে বসবাস করতেন তিনি। সেই সময় রাজা কালু মুরারির মোহন তার রাজ কর্ম চারিদের থেকে জানতে পারেন ওই এলাকার কোনো এক গভীর জঙ্গলের নির্যন এক যায়গায় উচু এক মাটির ঢিপির ওপর প্রতিদিন কিছু গরু গিয়ে দাড়ায় তারপর গরু গুলির বাট থেকে দুধ ঝরে পড়ে মাটির ঢিপির ওপর অলৌকিক এই ঘটনা শুনে রাজা কালুমুরারি নির্দেশ দেন ওই জঙ্গল কেটে পরিস্কার করতে। তারপর রাজা নিজে দাড়িয়ে থেকে ওই মাটির ঢিপি খনন করেন খনন করার সময় মাটির নিচে পরবর্তী সময়ে উদ্ধার হয় শিবলিঙ্গ। খনন কার্যের সময় আঘাত লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিবলিঙ্গটি আঘাত লেগে ভেঙ্গে যায় এই ঘটনায় চিন্তায় পড়েন রাজা মহাশয়। ডাক পড়ে রাজ পুরোহিতের। রাজ পুরোহিতের নির্দেশে শিবলিঙ্গের চার পাশে বেনারস থেকে এনে আরো চারটি শিবলিঙ্গ বসানো হয়। ঐ শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধিরে ধিরে পঞ্চেশ্বর নামটি প্রচার হতে থাকে পঞ্চেশ্বর থেকেই আজ পঁচেট গ্রামের নাম করন হয় পঁচেট। এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজ বাড়ি। রাজ বাড়ীর রাজারা শৈবে পরিনত হন শক্তি আরাধনায় শিবের পুজো করতেন। পরবর্তি কালে শ্রী চৈতন্যদেব যখন পটাশপুর হয়ে পুরী গিয়ে ছিলেন তখন জমিদার বাড়ির সদস্যরা শৈব থেকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন। পরে জমিদার বাড়ির কুলদেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন কিশোররাই জিউ। যাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কার্ত্তিক পূর্নিমা থেকে শুরু হয় রাস উৎসব। এছাড়াও রাজ বাড়ীতে রয়েছে নারায়ন জিউ মন্দির ও শিতলা মন্দির। পঁচেট গড় রাজবাড়ীর এই শিব মন্দিরে শিব চর্তুরদশিতে জল ঢালতে আশে এলাকার অসংখ্য মানুষ। কথিত আছে এই এলাকায় অনাবৃষ্টি দেখা দিলে বৃষ্টি না হলে এই শিব মন্দিরে ১০৮ টি বেলপাতা সহকারে পুজো দিয়ে ১০৮ কশলি জল ঢালা হয় যার ফলে তৎকালীন বৃষ্টি নেমে আসে। এই মন্দির ঘিরে বসছে এবছর ১০ দিনের মেলা মেলা দেখতে ভিড় জমাবেন এলাকার মানুষ।