প্রথম মেয়েবেলা শুরু, তোর সাথে হলো প্রথম আলাপ ঐ যে পুকুর পাড় তমাল গাছের তলে
মনে নেই বুঝি?
দু’জনের ছিলো না আগে পরিচয়, জানা ছিলোনা নামধাম, তমাল গাছে ঠেস দিয়ে চোখ মুদে একফালি প্রতিচ্ছায় বসে অস্ফুট মৃদু ধ্বনি হলেও আমার কাছে মধুর ছিলো!
আমার বিড়ালছানাকে প্রক্ষালন করবো তাই গিয়েছিলাম- তোর মৃদু ধ্বনি কানে এলো,দাড়িয়ে ছিলাম মান্যতা দেবার জন্য।
কেমন করে যেন প্রেম এলো মনে,
তখন ছিলোনা কোন ভয়-লজ্জা ও অপমানের জ্বালা!
তাই না বল?
দু’জনের মন ছিলো বিশ্রামহীন অস্থির উড়ু উড়ু,
থাকাটাই তো স্বাভাবিক তাই না ?
সন্ধ্যায় রোজ আসতি পুকুর পাড়ে আমি এসেছি কিনা দেখতে, কখনো না এলে তুই চলে যেতি বাড়িতে ডাকতে, কোন এক কালে মনে হয় ভীষণ আপন ছিলি তুই!
একমাত্র তোকেই খেলার সাথি করেছিলাম-
তুই ছাড়া কেউ ছিলো না দোসর ভবের মাঝে-
ধীরে ধীরে তুই হোলি আমার একান্ত স্বজন!
কত না করেছি ছুটোছুটি হাত ধরাধরি করে,
পুকুরের এপ্রান্ত থেকে ওপান্তে, হেসে লুটাপুটি
তোর কি মনে পড়ে অতীতের সেসব দিনের কথা, আমার মতো?
শেষের দিকে দিবালোকের মত স্পষ্ট হলো পাঁচমিশালী টুকরো টুকরো গানের সুর! আমি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নেচে নেচে দিতাম তাল জানিস আমার কিন্তু একটুও
করত না লজ্জা!
তখন মন হতো চঞ্চল, আমি যে ছোট্ট খুকী-
সবে গায়ের গন্ধ বাতাসে ওড়ে, বুঝতামনা তোর গানের মর্মার্থ, যদিও তুই আমার অনেকটা বড় তবুও তোকে ভালো লাগতো ভালোবাসায়।
একদিন আচমকা দিনের হল সূচনা, স্তব্ধ হল সব,
প্রকৃতির এটাই বুঝি নিয়ম, পশ্চিমেতে অংশুমালী ঠায় দাঁড়িয়ে রেগে যাচ্ছে না কেনো চলে–
বুঝেছি, এবার আমার থাকতে হবে অন্যের
অগোচরে একান্তে নিরালায় ঘরের কোণে।
যৌবন যে বিকশিত তাই তো পরিজনরা বলে
চপল মতি আর নয় অনেক করেছো শূন্যেধাবন-
তোমাকে পরের ঘরে যেতে হবে-
আর হলো না দেখা, তোকে কিভাবে বলবো?
অতি কষ্টে গেলাম শ্বশুরালয়-
আজ তুই তমাল গাছের তলে অতীতের সাথে সঙ্গীহীন নির্জনবাসি|