সরকারি দুয়ারে রেশন সীমান্তবর্তী গ্রামে নিয়ে যেতে বাধা বিএসএফ-এর!

0
45

নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, বালুরঘাট:- সরকারি দুয়ারে রেশন সীমান্তবর্তী গ্রামে নিয়ে যেতে বাধা বিএসএফ-এর! বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী গ্রামে নিয়ে যেতে বাধা দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ গ্রামবাসীদের। দক্ষিণ দিনাজপুরে অমিত শাহ-র সভার পূর্বে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুসছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা। উল্লেখ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কাটাতারের ওপাড়ে ভারতীয় ভূখন্ডে রয়েছে একাধিক গ্রাম। যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হাড়িপুকুর, উচা গোবিন্দপুর, উজাল প্রভৃতি। গ্রামগুলিতে ঢোকার আগেই রয়েছে গেট। যে গেট প্রহরার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন বিএসএফ জওয়ানরা৷ হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ বিএসএফ তাদের গ্রামে ঢুকতে দেয় না দুয়ারে রেশনের গাড়ি। রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় যেখানে রাজ্য জুড়ে দুয়ারে রেশন সাধারণ মানুষদের কার্যত দুয়ারে দুয়ারে পৌছছে, সেখানে বিএসএফ-এর বাধায় সীমান্তবর্তী গ্রামেই ঢুকতে পারছে না দুয়ারে রেশনের গাড়ি। ফলে নিজের গ্রাম থেকে দূরস্থান থেকে সরকারি রেশন সামগ্রী নিতে বাধ্য হচ্ছেন হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দারা, এমনটাই বক্তব্য হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দাদের। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুমোদিত রেশন ডিলার নিতাইপদ সাহা-র বক্তব্যও একই। নিতাইপদ সাহা বলেন কাটাতারের ওপাড়ে বিএসএফ রেশন নিয়ে যেতে দেয় না, সরকারি রেশন হলেও যেতে দেবে না। দূরস্থান থেকে সরকারি রেশন সংগ্রহ করেও গ্রামে নিয়ে যেতে গ্রামবাসীদের বিএসএফ-এর হাজারো জবাবদিহির মধ্যে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দা রাবিয়া খাতুন বিবি বলেন সরকারি রেশন কেন নিয়ে যেতে পারব না, তা তো কাউকে বলে বোঝাতে পারছি না, ২ কিলোমিটার দূরে রেশন নিতে আসতে হচ্ছে৷ হাড়িপুকুর গ্রামের অপর এক বাসিন্দা মামনি খাতুন বলেন রেশন নিয়ে যেতে বিএসএফ বাধা দেয়। গ্রামবাসীদের এও অভিযোগ সরকারি রেশন সামগ্রী ছাড়াও এক কেজি চালও যদি বাড়িতে খাবারের জন্য কিনে নিয়ে যেতে হয় তাহলেও বিএসএফ-এর বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন এখন তাদের একটাই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তারা যদি নিজেদের বাড়িতেই নিয়ে যেতে না পারেন তাহলে খাবেন কি আর বাচবেন কিভাবে। প্রায় বছর খানেকেরও বেশী সময় ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বর্তমানে ক্ষোভে ফুসছে সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা। অপরদিকে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই খবর লেখার সময় অবধি কোন বিবৃতি জারি করা হয়নি। তবে বিশেষ সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীদের সমস্যা নিয়ে ইতিপূর্বে বিডিও, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক এবং বিএসএফ কর্তৃপক্ষ বৈঠকও করেছে। যদিও তারপরেও কাটাতারের ওপাড়ে ভারতীয় গ্রামে ঢুকতে দেওয়া না সরকারি দুয়ারে রেশনের গাড়ি। এই প্রসঙ্গে হিলি ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মিহির সরকার বলেন অবৈধ কাজ যারা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক বিএসএফ, কিন্তু সাধারণ মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যাবে সেখানে বিএসএফ নিয়ে যেতে দেবে না এটা বরদাস্ত করা হবে না। তিনি গ্রামবাসীদের এই সমস্যার জন্য বিএসএফ-এর পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে দূষেছেন। গ্রামবাসীদের এই সমস্যার জন্য বিএসএফ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন সিপিআই(এম)-ও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সিপিআই(এম)-এর জেলা সম্পাদক নন্দলাল হাজরা বলেন ইদানীং কালে বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতার আসার পরে বিএসএফকে দিয়ে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানুষের ব্যক্তিগত জীবন যাপন করবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে কাটাতারের ওপারের বাসিন্দাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। আমরা রিপোর্ট পেয়েছি। ভয় ভীতি সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছে যাতে ঐ মানুষগুলো পায়ে পড়ে যাতে তারা বিজেপির দিকে যায়। অপরদিকে গ্রামবাসীদের সমস্যা প্রসঙ্গে তৃণমূল এবং সিপিআই(এম)-এর অভিযোগ প্রসঙ্গে হিলি-র বিজেপির মন্ডল সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাবেন।