যাদবপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- এবারের লোকসভা নির্বাচন রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। দেশজুড়ে ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যাবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন । ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি জোর প্রচার চলছে পশ্চিমবঙ্গেও। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি আসনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হলো যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র, যা একদা বাম দূর্গ হিসেবেই পরিচিত ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর সময়। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যা এখন তৃণমূলের দখলে। যদিও রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে স্থায়ী বলে কিছুই হয় না। শাসক দলের সদা বিতর্কে থাকা প্রার্থী সায়ানী ঘোষের বিপরীতে বিজেপির প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছেন সচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব ডক্টর অর্নিবান গঙ্গোপাধ্যায়। প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার প্রথম দিন থেকেই যিনি প্রচারে নেমে পড়েছেন মনুষের সঙ্গে জনসংযোগে। প্রতিদিন ই তিনি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে চোষে বেড়াচ্ছেন যাদবপুর কেন্দ্রের প্রতিটি ওলিগোলি। প্রতিদিনের প্রচারে মানুষের ঢল ও উৎসুক জনতার ভীড় যে কিছু একটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে তা বলাইবাহুল্য।
প্রতিদিনের মতন আজও ডক্টর গঙ্গোপাধ্যায় প্রচারে ঝড় তুললেন টালিগঞ্জের প্রতিটি এলাকায়। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই নেমেছিল মানুষের ঢল । করজোড়ে নিলেন মানুষের আশীর্বাদ ও ভালবাসা। পথিমধ্যে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সুশাসন ও মোদী গ্যারান্টির তত্ত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি পূরণের অপর নাম শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মানুষের জন্য পরিশ্রুত জল, খাদ্যশস্য প্রদান, পাকা রাস্তা, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, সহ দেশের আর্থিক উন্নয়ন – সর্বক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাশয় যে সাফল্য সুনিশ্চিত করেছেন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে তা বিরল। তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি বিগত ১০ বছর ধরে মানুষের সেবায় নিজেকে নিমগ্ন করেছেন।
বিগত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাশয় এর নেতৃত্ব ভারতবর্ষ বিশ্ব গুরুর আসন লাভ করেছে। একদিকে যেমন আর্থিক উন্নয়ন, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন – সবক্ষেত্রেই তিনি সকলের মঙ্গলের জন্য কাজ করেছেন, সকলের জন্য কোভিডের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা থেকে শুরুকরে চন্দ্রযান পাঠানো সব ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পেয়েছেন। তেমনি, অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গে ঠিক উল্টো চিত্র – এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের কুশাসনে মানুষ বীতশ্রদ্ধ ও বিপর্যস্ত।
যাদবপুর বিধানসভার ৩ নম্বর মণ্ডলে জনসংযোগযাত্রায় বেরিয়ে তিনি বলেন, “যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সকল মানুষের কাছে আমাদের অনুরোধ – যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একজোট হয়ে বিজেপি কে জয়যুক্ত করুন – যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিশ্বমানের হাসপাতাল তৈরি, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, পরিশুদ্ধ জল সরবরাহ, পাকা রাস্তা তৈরির মাধ্যমে বিশ্বমানের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তাই এইবার বিজেপি কে সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানাই”।
– তাই দেশের সার্বিক ও সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হাত শক্ত করার ও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিবারের মতন এবারেও দেশের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলের আলাদা কৌতুহল রয়েছে। একদিকে যেমন বঙ্গের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ও মোদী ফ্যাক্টর, অপরদিকে তেমনিই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে এমন আলাদা কৌতূহলের মূল কারণ । শাসক দলের ঘোষিত প্রতিটি আসনের পেছনে সর্বদা তাঁর মুখ অদৃশ্যে ভেসে ওঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করে বিরোধীরা এগিয়ে যান কেন্দ্র বিরোধী যেকোনো ইস্যুকে হাতিয়ার করে। স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমবঙ্গের ফলাফল লোকসভায় কেমন হবে তা নিয়ে চরম কৌতূহল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এবং এক গোপন সমীক্ষায় এমনই এক তথ্য উঠে এসেছে যে, একদিকে যেমন বিজেপি স্বছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন মানুষ ডক্টর অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে দাঁড় করিয়ে মানুষের মধ্যে পজিটিভ ভাইব্রেশন ছড়িয়েছে, তেমনি অপরদিকে হিন্দু দেবতাদের নিয়ে কুমন্তব্য করা সায়নী ঘোষ কে -ঐ কেন্দ্রে দাঁড় করিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে তৃণমুল। ফলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, সামান্য কিছু মার্জিনে তৃণমুল ও বিজেপির জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি হবে । তাই লড়াই হবে সমানে সমানে সমানে। ইন্ডিয়া জোটের অংশ হলেও বাংলায় তৃণমূল প্রতিটা আসনেই আলাদা প্রার্থী দিয়েছে। একদিকে, গেরুয়া শিবির বাংলায় আসন বাড়বে বলে দাবি করছে, অন্যদিকে, ৪২ আসনেই জোড়াফুল প্রার্থীদের জয় নিয়ে আশাবাদী তৃণমূল সুপ্রিমো। আশাবাদী বিজেপি ও। এখন দেখার বিষয় মানুষ শেষ পর্যন্ত কাকে গ্রহন করে।