শঙ্খ ঘোষ এর জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২।তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী বাঙালি কবি এবং ভারতের বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক। তিনি একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। কাব্য সাহিত্যে তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাশের উত্তরসূরি।
বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষ অপরিসীম অবদান রাখেন। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
শঙ্খ ঘোষ প্রাথমিক ভাবে ‘কবি’ রূপে পরিচিত হলেও তার গদ্য রচনা বিপুলসংখ্যক। তিনি কবিতা এবং গদ্য মিলিয়ে কাজ করেছেন।
কাব্যগ্রন্থ———-
দিনগুলি রাতগুলি, এখন সময় নয়, নিহিত পাতালছায়া, শঙ্খ ঘোষের শ্রেষ্ঠ কবিতা, আদিম লতাগুল্মময়, মূর্খ বড় সামাজিক নয়, বাবরের প্রার্থনা, মিনিবুক, তুমি তেমন গৌরী নও, পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ, কবিতাসংগ্রহ -১, প্রহরজোড়া ত্রিতাল, মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, বন্ধুরা মাতি তরজায়, ধুম লেগেছে হৃদকমলে, কবিতাসংগ্রহ – ২, লাইনেই ছিলাম বাবা, গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ, শঙ্খ ঘোষের নির্বাচিত প্রেমের কবিতা, মিনি কবিতার বই, শবের উপরে শামিয়ানা, ছন্দের ভিতরে এত অন্ধকার, জলই পাষাণ হয়ে আছে, সমস্ত ক্ষতের মুখে পলি, মাটিখোঁড়া পুরোনো করোটি, গোটাদেশজোড়া জউঘর, হাসিখুশি মুখে সর্বনাশ, প্রতি প্রশ্নে জেগে ওঠে ভিটে, প্রিয় ২৫ : কবিতা সংকলন, বহুস্বর স্তব্ধ পড়ে আছে, প্রেমের কবিতা, শঙ্খ ঘোষের কবিতাসংগ্রহ, শুনি নীরব চিৎকার, এও এক ব্যথা উপশম, সীমান্তবিহীন দেশে।
গদ্যগ্রন্থ——————–
কালের মাত্রা ও রবীন্দ্রনাটক, নিঃশব্দের তর্জনী, ছন্দের বারান্দা, এ আমির আবরণ, উর্বশীর হাসি, শব্দ আর সত্য, নির্মাণ আর সৃষ্টি, কল্পনার হিস্টোরিয়া, জার্নাল, ঘুমিয়ে পড়া এলবাম, কবিতার মুহূর্ত, কবিতালেখা কবিতাপড়া, ঐতিহ্যের বিস্তার, ছন্দময় জীবন, কবির অভিপ্রায়, এখন সব অলীক, বইয়ের ঘর, সময়ের জলছবি, কবির বর্ম, ইশারা অবিরত, এই শহর রাখাল, ইচ্ছামতির মশা : ভ্রমণ, দামিনির গান, গদ্যসংগ্রহ ১-৬ , অবিশ্বাসের বাস্তব, গদ্যসংগ্রহ – ৭, সামান্য অসামান্য, প্রেম পদাবলী, ছেঁড়া ক্যামবিসের ব্যাগ, সময়পটে শঙ্খ ঘোষ : কবিতা সংকলন, ভিন্ন রুচির অধিকার, আরোপ আর উদ্ভাবন, বট পাকুড়ের ফেনা, গদ্যসংগ্রহ – ৮, দেখার দৃষ্টি, আয়ওয়ার ডায়েরি, নির্বাচিত প্রবন্ধ : রবীন্দ্রনাথ, নির্বাচিত প্রবন্ধ : নানা প্রসঙ্গ, নির্বাচিত গদ্যলেখা, গদ্যসংগ্রহ – ৯, হে মহাজীবন : রবীন্দ্র প্রসঙ্গ, বেড়াতে যাবার সিঁড়ি, অল্প স্বল্প কথা, নিরহং শিল্পী, গদ্যসংগ্রহ-১০, লেখা যখন হয় না, পরম বন্ধু প্রদ্যুমন , সন্ধ্যানদীর জলে :বাংলাদেশ সংকলন, ছেড়ে রেখেই ধরে রাখা।
ছোট ও কিশোরদের জন্যে লেখা————
বিদ্যাসাগর, সকালবেলার আলো, শব্দ নিয়ে খেলা : বানান বিষয়ক বই {কুন্তক ছদ্মনামে লেখা }, রাগ করো না রাগুনী, সব কিছুতেই খেলনা হয়, সুপারিবনের সারি, আমন ধানের ছড়া, কথা নিয়ে খেলা, সেরা ছড়া, আমন যাবে লাট্টু পাহাড়, ছোট্ট একটা স্কুল, বড় হওয়া খুব ভুল, ওরে ও বায়নাবতী, বল তো দেখি কেমন হত, অল্পবয়স কল্পবয়স, আমায় তুমি লক্ষ্মী বল, শহরপথের ধুলো, সুর সোহাগী, ছড়া সংগ্রহ, ছোটদের ছড়া কবিতা, ইচ্ছে প্রদীপ, ছোটদের গদ্য, আজকে আমার পরীক্ষা নেই।
বক্তৃতা / সাক্ষাৎকার ভিত্তিক সংকলন—————–
অন্ধের স্পর্শের মতো, এক বক্তার বৈঠক: শম্ভু মিত্র, কথার পিঠে কথা, জানার বোধ, হওয়ার দুঃখ।
অগ্রন্থিত রচনা সংকলন—–
মুখজোড়া লাবণ্য, অগ্রন্থিত শঙ্খ ঘোষ।
পুরস্কার———–
বাবরের প্রার্থনা” র জন্য সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার(১৯৭৭), মূর্খ বড়, সামাজিক নয়” নরসিংহ দাস পুরস্কার (১৯৭৭), ধুম লেগেছে হৃদকমলে” রবীন্দ্র পুরস্কার(১৯৮৯), সরস্বতী সম্মান “গন্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ”র জন্য (১৯৯৮), “রক্তকল্যাণ” অনুবাদের জন্য সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার (১৯৯৯), বিশ্বভারতীর দ্বারা দেশিকোত্তম পুরস্কার (১৯৯৯), বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট উপাধি (২০১০), ভারত সরকারের পদ্মভূষণ পুরস্কার (২০১১), শিবপুর ইন্ডিয়ান ইনস্টটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ডি. লিট (২০১৫), জ্ঞানপীঠ পুরস্কার (২০১৬), উত্তর ভারতের “অমর উজালা ফাউন্ডেশন”-এর সর্ব্বোচ্চ পুরস্কার “আকাশদীপ” (২০২০)।
জীবনাবসান ও শেষকৃত্য——
কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ২১শে এপ্রিল সকাল আটটা নাগাদ নিজ বাসভবনে তিনি প্রয়াত হন। শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুর আট দিনের মধ্যে তার স্ত্রী প্রতিমা ঘোষও ২০২১ সালের ২৯ শে এপ্রিল ভোর পাঁচ টায় করোনার কারণে প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।