দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- বোমা ফাটানোর সাহস থাকলে আজই বলো, বালুরঘাটের সভা থেকে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা মমতার।আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক বিস্ফোরণ হবে, সামলাতে পারবে না তৃণমূল’। শনিবার রতুয়ার সভা থেকে হুংকার দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (। রবিবার বালুরঘাট ও কুমারগঞ্জের জনসভা থেকে এভাবেই নাম না করে শুভেন্দুকে পালটা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে শুভেন্দুকে গদ্দার বলেও কটাক্ষ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা সব চেয়ে বড় ডাকাত, সব চেয়ে বড় গদ্দার, উনি মাঝেমধ্যেই ইডি, এনআইএকে দিয়ে গ্রেফতার করান। মনে হয় যেন কেন্দ্রের সরকারটা উনিই চালান। কাকে কখন গ্রেফতার করা হবে, বদলি করা হবে, খুন করা হবে, উনিই বলছেন। বলছে নাকি বোমা ফাটাবে। বোমটা কি মেরে ফেলার বোম? সাহস থাকলে আজই বলো।’’রবিবার প্রথমে বালুরঘাটের প্রার্থীর হয়ে কুমারগঞ্জের চকরাম রায় গ্রাউন্ডে সভা করেন মমতা।সেই সভা শেষ করেই চপারে বিপ্লব মিত্রের সমর্থনে বালুরঘাট টাউন ক্নাব সমর্থনে দ্বিতীয় সভা করতে আসেন তিনি।দুজায়গা থেকেই আজ তৃনমুল নেত্রী শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমন করেন।এদিন মমতা বলেন, ‘কার বিরুদ্ধে বোমা ফাটাবি? সাজিয়ে গুছিয়ে বোমা? মনে রাখবে উপরের দিকে থুতু ফেললে নিজের গায়ে লাগে। বোমা ফাটালে জবাবটা হবে কালিপটকা দিয়ে। কারণ তোমাদের আমরা গুরুত্ব দিই না।’ নাম না করে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, ‘গদ্দার ইডি, সিবিআই, এনআইএ থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছে। বিজেপি কাল থাকবে না, তোমাদের মতো গদ্দারদের কোনওদিন জায়গা দেব না।’ তিনি আরো বলেন গদ্দার এখনও বিষয়টি সাজিয়ে উঠতে পারেনি, তাই আজ নয় কালকের কথা বলছে।প্রসংগত আগামী কালকেই ওই কুমারগঞ্জে সভা করতে আসছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সুতরাং আগামীকালই তিনি বোমাটা ফাটান কিনা সেদিকে সবার তীক্ষন নজর।
প্রথম দফার ভোট মিটে গিয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিল রয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। বাংলায় এই দফাতেও তিন আসনে ভোট রয়েছে। দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটে ভোট রয়েছে।দ্বীতিয় দফা ভোটের আগে শেষ রবিবাসরীয় প্রচারে সুকান্তর গড়ে এলেন তৃনমুল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। আর পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকান্ত অবশ্য তৃনমুল নেত্রীকে সৌজন্যতা দেখিয়ে তার বাড়িতে চায়ের নেমন্তন করেছেন।সুকান্তর বক্তব্য এলে জেলার উন্নয়ন নিয়েই তার সাথে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ ইতিমধ্যে সংবাদ মধ্যমের কাছে জানিয়ে রেখেছিলেন। সেই সৌজন্যতা বজায় রেখেই আজ খোদ বিজেপির প্রার্থী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গড় বালুরঘাটে এসে তৃনমুল সুপ্রিমো সুকান্তকে কোন আক্রমন না করে শুধু শুভেন্দুকেইআক্রমন করে গেলেন সেটা বোঝা গেল না। তবে তৃনমুল নেররী তার ৩৫ মিনিটের ভাষনে একবারের জন্যেও সুকান্তর নাম যেমন নেন নি, তেমনি তার কাজ নিয়েও কোন বিরুপ মন্তব্য করেন নি। যেমন গত ১০ এপ্রিল তপনে সভা করতে এসে বলেছিলেন এখানকার সাংসদের অভিযোগের জন্য কেন্দ্র তাদের প্রাপ্য টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে আটকে রেখেছে। আজ কিন্তু নেত্রী এই প্রসংগে একটি শব্দ খরচ করেন নি।যা অনেককে অবাক করেছে।তবে একেবারে যে ১০০ দিনের বকেয়া নিয়ে বলেন নি তা নয়, নেত্রী বলেন বালুরঘাটের সভা থেকেও ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে সরব মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির অনেক টাকা আছে, তা-ই মিথ্যে কথা বলে রোজ কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অথচ ১০০ দিনের কাজের টাকা নেই। তিন বছর টাকা দিল না গরিব লোকগুলোর।’’মুখ্যমন্ত্রী রবিবারের জনসভা থেকে আরো বলেন, ‘‘৩৫০ কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েছ। ওরা বলছে দুর্নীতি হয়েছে, আরে অনেক জ্বালিয়েছ। আমি ১০ দিন ধরে বলে যাচ্ছি শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের এজি রিপোর্ট-সহ শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। আমি দেখতে চাই কে চোর, আর কে সাধু।’’
আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র, বালুরঘাটের সভা থেকে মোদী সরকারকে আবার নিশানা করেন মমতা। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘‘ভোটের পর ১১ লক্ষ বাড়ি আমরাই করে দেব। এই বছরের শেষে একটা কিস্তি দেব, পরের বছরের শুরুতে একটা কিস্তি দেব। আমরা ভিক্ষা চাইব না।’’
তিনি এদিনের সভাতে এও বলেন, আমাদের সরকার কী করছে বলতে গেলে একটা রামায়ণে কুলাবে না’, বালুরঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা।বালুরঘাটের উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে তৃণমৃল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী করেছে, তা বলতে শুরু করে তবে দিনরাত একাকার হয়ে যাবে। একটা রামায়ণ, একটা মহাভারত, একটা কোরান, একটা বাইবেলে কুলাবে না।’’পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে বালুরঘাটে বিমানবন্দর নিয়ে মোদীকে খোঁচা মমতার। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে বলে গিয়েছেন মমতাজি করতে দিচ্ছে না। আমি বলছি চোখ খুলে দেখুন। বালুরঘাট বিমানবন্দরের কাজ হয়েছে কি হয়নি? আমরা তো বেলুরঘাট নয়, বালুরঘাটে এসে বলছি। বিমানবন্দর পুরো তৈরি, কিন্তু আপনি বিমান দিচ্ছেন না। তাই চালু হচ্ছে না।’’বালুরঘাটের সভা থেকেও দূরদর্শনের লোগোর রং গেরুয়া করা নিয়ে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘দূরদর্শনটা দেখেছেন তো? আর কেউ দেখবেন না। ওটাকে দূর করে দিন। একদিন এটা আমাদের গর্ব ছিল। কাল থেকে গেরুয়া করে দিয়েছে।মমতা বলেন, ‘‘দূরদর্শন দেখেছেন? মন কি বাত, তিনি নিজেই বলেন। নিজেই শোনেন। কাউকে বলতে দেন না। আজ পর্যন্ত প্রেস মিট করতে দেখিনি ওঁকে। নিজেরাই সাজিয়ে গুছিয়ে সমাজমাধ্যমে বসিয়ে দাও।’’বালুরঘাটের সভা থেকে মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বের করে দেওয়া নিয়েও সরব হতে দেখা যায় নেত্রীকে। বলেন বালুরঘাটের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের সাংসদেরা জীবন দিয়ে লড়াই করে। আর তোমরা তাঁদের পেটাও, তোমরা বাতিল করে দাও। মহুয়া মৈত্র একজন মহিলা সাংসদ, তাঁকে তোমরা বার করে দিয়েছ।’’
এরপরেই তিনি বলেন সুকান্ত কে কেন ভোট দেবেন,
বিজেপি বিদেশ থেকে টাকা এনে আপনাদের একাউন্টে দেবে বলেছিল, দিয়েছে দেয় নি, তাহলে দেবেন কেন, চাকরি দিয়েছে, অথচ ১১ লক্ষ চাকরি মজুত আছে,
আজও তিনি ১০০, আবাস, নিয়ে কেন্দ্রকে দুষে বলেন, টাকা দিচ্ছে না, তাহলে কেন ভোট দেবেন এখন
বিজেপি কল সেন্টার থেকে বলছে ভোট দিলে বাড়ি পেয়ে যাবেন, । এরপাশাপাশি মমতার কথায়, ‘‘ওরা বলে, আমি এনআরসি করতে না দেওয়ার কে? কোন হরিদাসপাল। আমি বলেছি করতে দেব না। অসমে করেছিল। সেখানে প্রতিবাদ করেছিল একমাত্র তৃণমূল।
তিনি আরো বলেন ওসব সার্ভে বিশ্বাস করবেন না, ওগুলো বিজেপি পয়সা দিয়ে করানো, তারপরেই জোর দিয়ে বলেন বিজেপি ২১ এর নির্বাচনে ২০০ পার করবে বলেছিল, কত পেয়েছিল, এবারও ওরা বলছে ৪০০ পার আর আমি বলছি ওরা নীল হবে ২০০ পাওয়া তো দূর অস্ত।
এদিন সভা শেষে ফের বি এস এফ কে নিশানা করে তৃনমুল নেত্রী মমতা বলেন আমি একটি এফ আই আর পেলাম, আবতারুদ্দিন মিয়া, ১৯ তারিখ বি এস এফ, বি জেপি কে ভোট দেবার জন্য মারতে থাকে এমনকি বিজেপি কে ভোট না দিলে গুলি করে মারব
আমি দেখিনি আগে কোন কেন্দ্রীয় বাহিনী কি করে মৃত্যুর পরোয়না জারি করতে পারে।তিনি এরপরেই বলেন নির্বাচন কমিশনের উচিত বিষয়টি দেখুক।তিনি এও অভিযোগ করেন সীমান্তে গরু পাচার কেন রুখতে পারেন না, অথচ গুলি চালাতে পারে, তিনি এও পরামর্শ দেন বি এস এফ বাহিনীকে ঠিক মত সীমান্তে পাহারা দিন, আমরা বাড়ি থেকে রান্না করে খাইয়ে আসব।