স্মরণে বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের অগ্রণী সঙ্গীত পরিচালক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক।।।

0
23

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা।  তিনি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রাথমিক যুগের একজন শীর্ষস্থানীয় সঙ্গীত পরিচালক এবং প্লেব্যাক গায়ক ছিলেন।  রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তার বিশেষ অবদান ছিল।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯০৫ সালের ১০ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতার নাম মণিমোহন মল্লিক এবং মাতার নাম মনোমোহিনী দেবী।  সঙ্গীতের প্রতি মণিমোহনের গভীর আগ্রহ ছিল।  পঙ্কজ কুমার দুর্গাদাস ব্যানার্জির অধীনে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন।  তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে শিক্ষা শেষ করেন।  তারপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগ্নে অর্থাৎ দ্বীপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়।  ফলে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন।  পরে রবীন্দ্রনাথের স্নেহের হয়ে ওঠেন।  খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পঙ্কজ কুমার রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম প্রধান শিল্পীর খ্যাতি অর্জন করেন।১৯২৬ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি “নেমেছে আজ প্রথম বাদল” গানটি ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে রেকর্ড করেন।

১৯৩১ সাল থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর পঙ্কজ কুমার বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও তামিল চলচ্চিত্রে অবদান রাখেন। তিনি কুন্দন লাল সায়গল, শচীন দেব বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, আশা ভোঁসলে প্রমুখ সঙ্গীত পরিচালক ও শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রে তিনি কুন্দন লাল সায়গল, প্রমথেশ বড়ুয়া ও কানন দেবীর মতো শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়ও করেন। নীতীন বসু ও রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৩১ সালে তিনি মহিষাসুরমর্দিনীর অনুষ্ঠানটির সুর দেন।

চলচ্চিত্রের তালিকা——

চাষির মেয়ে, ইহুদি কি লেড়কি, মঞ্জিল, মায়া, কারোড়পতি, গৃহদাহ, দেবদাস, মুক্তি, দিদি, বাড়ি বেহেন, জীবন মরণ, ধর্তি মাতা, দেশের মাটি, অভিজ্ঞান, অভাগিনী, কপালকুণ্ডলা, দুশমন, বড়ি দিদি, জিন্দেগি, নর্তকী, ডাক্তার, মীনাক্ষী, দিক্ষুল, কাশীনাথ, মেরি বেহেন, দুই পুরুষ, রামের সুমতি, প্রতিবাদ, মঞ্জুর, রূপকথা, জলজলা, মহাপ্রস্থানের পথে, যাত্রীক, চিত্রাঙ্গদা, রাইকমল।

১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।

১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।