এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ালো তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির।

0
34

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ালো তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে টাকা ফিরিয়ে না দিতে চাওয়ার অভিযোগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়েছে মালদার গাজোল ব্লকে। জানা গিয়েছে ওই ব্লকের এক চাকুরি প্রার্থীর কাছে ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। এমনকি টাকার বিনিময় চাকুরি প্রার্থীকে জয়েন লেটার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক স্কুলে নিযুক্ত হয়েছিলেন ওই চাকুরী প্রার্থী। জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে পড়ে তাকে জানানো হয় তার নিয়োগপত্রটি নকল । তারপরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এর কাছে দারস্ত হোন ওই চাকরি প্রার্থী কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে মালদহ জেলা আদালতের দ্বারস্থ হন চাকুরী প্রার্থী। নিম্ন আদালত টাকা ফেরত দেওয়ার রায় ঘোষণা করে। তারপরও এখনো পর্যন্ত টাকা দেয়নি ওই চাকরি প্রার্থীকে উল্টে তাকে হুমকি দিচ্ছে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী সুকুমার বালো, বাড়ি গাজলের শংকরপুর এলাকায়। তিনি জানান, আমার স্ত্রীকে ২০১৬ সালে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে গাজলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন তার কাছ থেকে ১২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নেয়। প্রাথমিক চাকরি পদে নিয়োগের নিয়োগ পত্র দেওয়া হয় তাকে এবং সেই নিয়োগপত্র নিয়ে গাজোলের একটি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তার স্ত্রী। তারপর দুই সপ্তাহ পর এসআই অফিস থেকে নিয়োগ পত্রটি দেখতে চাওয়া হয় এবং সেখানেই এসআই অফিস জানিয়ে দেন এই নিয়োগ পত্রটি বাতিল করা হয়। নিয়োগপত্রটি নকল। তারপর টাকা ফেরতের জন্য গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেনের কাছে আমরা যাই প্রথমে, টাকা দিতে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে তিনি একটি চেক দেন কিন্তু সেই চেক ব্যাংকে জমা দিলে সেই চেক বাউন্স খায় আমরা সেই বিষয়ে তাকে জানিয়েছি কিন্তু তিনি আমাদের টাকা দেননি। অবশেষে মালদা জেলা আদালতে আমরা দারুস্ত‌ হই ।মালদা জেলা আদালত
আমাদের পক্ষে রায় দেয়। অভিযুক্ত মোজাম্মেল হোসেন টাকা ফেরত এর জন্য জেলা আদালত নির্দেশ দেন তারপরেও আদালতের নির্দেশকে না মেনে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে তারা আবারও জেলা আদালতে দারস্ত হন। পাশাপাশি টাকা চাইতে গেলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
যদিও অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন গাজল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন। তিনি জানান সুকুমার বালো বলে তিনি কাউকে চিনেন না। এটা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র আমার নামকে বদনাম করার জন্য। আইন সবার জন্য যিনি অভিযোগ করেছেন সে ক্ষেত্রে তিনি যদি আমার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন তাহলে আমিও তার বিরুদ্ধে আদালতে দ্বারস্থ হবো

গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময়ী দেব বর্মন জানান অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকে রাজ্যের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন ধরনের আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন। শাসকদলের কিছু নেতা মন্ত্রীর জন্য আজকে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল ওরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট।
এরকম অবস্থায় আমাদের গাজলের বাসিন্দা সুকুমার বালো তার স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে 12 লক্ষ 70 হাজার টাকা গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন নেই। পরবর্তীতে সেই চাকরির নিয়োগপত্র নকল প্রমাণিত হয়। আজকে জেলা আদালত অভিযুক্ত কে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে তারপরও অভিযুক্ত নেতা-নেত্রীরা আজকে টাকা ফেরত দিচ্ছে না। রাজ্যের যে করুন অবস্থা যে দুর্নীতি তার একটি প্রমাণ গাজলেও দেখা গেলো।