বজ্রাঘাতে মৃত্যু হলো কুশিদা পঞ্চায়েতের দৌলা খেজুরবাড়ি এলাকার এক দম্পতির।

0
51

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- —এক কামরার মাটির বাড়ির দরজায় এখনও জ্বলজ্বল করছে গোলাপি রঙে লেখা ‘শুভবিবাহ।’দু’মাস ২১ দিন আগে অগ্নিসাক্ষী করে একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিয়েছিলেন তাঁরা।আনন্দ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে শুরু করেছিলেন নতুন সংসার।কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত একনিমেষেই সব শেষ করে দিল।নববধূর সঙ্গে প্রাণ গেল স্বামী হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলা খেজুরবাড়ির বাসিন্দা নয়ন রায়ের।এই দম্পতিকে হারিয়ে শোকে পাথর গোটা পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মাঠে পাট নিড়াতে গিয়েছিলেন নয়ন রায়(২৪)।সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা সিংহ রায়(২০)।আচমকা কালো মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ।ওঠে ঝড়-বৃষ্টি।একের পর এক বাজ পড়তে থাকে।বাড়িতে ফেরার সুযোগ পাননি। বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় কুশিদা পঞ্চায়েতের দৌলা খেজুরবাড়ি এলাকার এই দম্পতির।ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার তাঁদের দেহ ফেরে বাড়িতে।এরপরই কান্নার রোল ওঠে এলাকায়। পাড়া-প্রতিবেশীদের বিলাপ,সবে জীবনটা শুরু করেছিল।সব শেষ হয়ে গেল।
এদিন সন্ধ্যায় শেষকৃত্য হয়েছে বজ্রাঘাতে মৃত ওই দম্পতির।গোটা বাড়ি গ্রাস করেছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা।তারই মধ্যে নজর কাড়ছে বিয়ের অনুষ্ঠানের চিহ্ন হিসেবে নয়নের ঘরের দরজার পাশে লাল রঙে আঁকা আলপনা।শূন্য দৃষ্টিতে সেদিকেই চেয়ে ছিলেন নয়নের মা সুমিয়া রায়।
তিন ভাইয়ের মেজো নয়ন। ‘দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন বাবা।নয়নের সঙ্গেই থাকতেন বৃদ্ধ মা।সংসারে নয়নই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে।বিয়ের সময় মায়ের নামে ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন। সেই টাকার কিছুটা দিয়ে শ্বশুরবাড়ি কুর্শাডাঙিতে জমি লিজ নিয়ে পাট চাষ করেছিলেন নয়ন‌।সেই জমিতেই নিড়ানি দিতে গিয়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় সস্ত্রীক।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবার‌ দুটিকে শুক্রবার দু লক্ষ করে দুটি চেক দেওয়া হয়।