তাপ এবং জলের সমস্যায় মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষতি তপন ব্লকে।

0
25

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট ঃ- তাপ এবং জলের সমস্যায় মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষতি তপন ব্লকে। মৎস দপ্তরকে এগিয়ে,আসার আবেদন ওই এলাকার মাছ চাষিদের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ৫৯ হাজার মেট্রিকটন মাছ চাষ হয় প্রতি বছর। যার মধ্যে তপন ব্লক উল্লেখযোগ্য। এজেলায় চাহিদার থেকে বেশি উৎপাদন হওয়া মাছ বাইরেও পাঠান মাছ চাষিরা। নদী, খালবিল তো বটেই, বড় অংশের মাছ মেলে পুকুর থেকে। তবে এবার তপন ব্লকে সমস্যা দেখা দিয়েছে এই চাষে। একদিকে পুকুরের জল কমে যাওয়া অপরদিকে খাবারের সমস্যা এই চাষে প্রধান অন্তরায়। সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে পাশে থাকার আর্জি মাছ চাষিদের।
তপন আজমতপুরের মাছ চাষি সন্দীপ চক্রবর্তী, স্বপন চক্রবর্তী জানান, তারা বাইরে থেকে কেনেন মাছের খাবার। যার দাম বেশি এবং গুনগতমান খারাপ। সেকারণে ছোট মাছ বাড়ছে না। আবার পুকুরে জল কম ও গরম থাকায় যে বড় মাছগুলি রয়েছে তা মরে যাচ্ছে। জলে গ্লুকোজ মিশিয়েও কাজ হচ্ছেনা। তাদের দাবি, মাছের খাবার সহ স্যালো বা সোলারের মাধ্যমে জল দেওয়া ব্যবস্থা করা হোক। এব্যাপারে মৎস দপ্তরকে এগিয়ে,আসার আবেদন তাদের।

শিশির চক্রবর্তী বলেন, “আমার পুকুরে বর্তমানে জল প্রচন্ড কমে গেছে। প্রত্যেক দিনই মাছ মারা যাচ্ছে এবং পুকুরের জলের উপর ভেসে উঠছে। পুকুরে জল কম হওয়ার জন্য মাছের এই মড়ক বলে আমরা অনুমান করছি। স্থানীয় এলাকার মধ্যে প্রায় কোন পুকুরেই জল নেই বলা চলে। বড় মাছের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৩ কেজি করে মাছের খাবার দুবেলা দিচ্ছি। দুদিন পর পর কল্যাণী রাইস ব্র্যান্ দিতে হয় পুকুরে। তা সত্ত্বেও মাছের বৃদ্ধি প্রচন্ড কম। মাছ বাড়ছে না বললেই চলে। আমরা যদি মৎস্য দপ্তর থেকে মাছের পোনা ও খাবার পাই তাহলে খুব ভালো হতো। আমরা ইতিমধ্যেই স্থানীয়Ghuma Jis Din ghoom aaega মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাদেরকে আমাদের গ্রামে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত মৎস্য দপ্তরের কোন আধিকারিক আমাদের গ্রামে আসেনি। আমরা দাবী করছি অবিলম্বে মৎস্য দপ্তর থেকে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। অন্যথায় জেলার মৎস্য চাষ ভীষণভাবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মৎস্য আধিকারিক অভিজিৎ সরকার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ক্ষুদ্র মৎস্যচাষীরা প্রকৃতির উপর অত্যন্ত বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল। যদি বৃষ্টি ঠিকঠাক হয় তাহলেই একমাত্র পুকুরে জল থাকে। অন্যথায় খরার মরশুমে কোন পুকুরেই সেভাবে জল থাকে না। যারা বড় মৎস্যচাষী রয়েছেন তারা নিজেরা জলের বন্দোবস্ত করে থাকেন সাব মার্শাল বা শ্যালো মেশিনের সাহায্যে। ছোট মৎসচাষীদের সে উপায় নেই। স্বাভাবিকভাবেই পুকুরে জল কমে গেলে মাছ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমরা যারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি আধিকারিক রয়েছি তাদের পক্ষে পুকুরে জল সরবরাহ করার কোন বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা নেই। আমাদের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তথা সারা রাজ্যেই কৃষির ক্ষেত্রে জলসেচ ব্যবস্থা প্রচলন আছে। কৃষি জলসেচের পর যে জল অবশিষ্ট থাকে সেই জল দিয়ে পুকুরে জল সরবরাহ করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু সেটা খুবই সীমিত। আমরা মাছচাষীদের প্রযুক্তিগতভাবে কেবলমাত্র সাহায্য করতে পারি। আমরা তাদেরকে কিভাবে মাছ বাড়বে বা কি ব্যবহার করলে মাছ চাষিরা উপকৃত হবেন তা কেবলমাত্র বলতে পারি। জেলার ক্ষুদ্র মাছ চাষীরা সার্বিকভাবে অনাবৃষ্টি এবং এবং প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই চিত্র সারা রাজ্যব্যাপী একই রকম। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই বর্ষাকাল আসবে এবং মাছ চাষের ক্ষেত্রে তা সহায়ক হবে।”