গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ ও জন্মদিন পালন অনুষ্ঠান।

0
45

দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক অধ্যাপক হিমাংশু কুমার সরকার মহাশয়ের ৮৯ তম জন্মদিন পালন ও ‘নতুন গবেষণার আলোকে সেন রাজবংশের ইতিহাস’ গ্রন্থ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হলো আজ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে। এই মহতী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দেবব্রত মিত্র এবং বিশেষ অতিথির আসন অলংকৃত করেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দীপক কুমার রায়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস, অধ্যাপক সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, পরম্পরা প্রকাশনের সম্পাদক গৌতম দাস, ইতিহাস অনুসন্ধান পরিষদের সম্পাদক ড. নবকুমার দাস, বিশিষ্ট কবি ও সমাজসেবী বঙ্গরত্ন বিশ্বনাথ লাহা, স্বপন কুমার বিশ্বাস, হরিপদ সাহা, মন্দিরা রায়, সুধাংশু লাহা, অমল বসু, মৃণাল চক্রবর্তী, অমিয় জানা সহ আরো অনেকে। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন সোমদত্তা চক্রবর্তী। অধ্যাপক সরকারের জন্মদিনে তাঁর মুখে পায়েস তুলে দেন তা সহধর্মীনী শিক্ষিকা অঞ্জলি সরকার ও তার সুযোগ্য কন্যা সঞ্চিতা সরকার ও সংহিতা সরকার। জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটার সময় ভায়োলিন বাজিয়ে অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়। বিশিষ্ট শিল্পী সুদেষ্ণা লাহা ভায়োলিন বাজায় । এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দরা সকলে অধ্যাপক সরকারের এই জন্মদিনে তাকে পুষ্পস্তবক এবং বিভিন্ন উপঢৌকানে আপ্লুত করে তোলেন অনুষ্ঠান। অধ্যাপক হিমাংশু কুমার সরকার মহাশয় তাঁর এই নতুন বইটি সম্পর্কে বলেন, ‘বাঙালি জাতি মস্তকে বহন করে চলেছে দু’টি কলঙ্কের ডালি, সপ্তদশ অশ্বারোহী সেনার আক্রমণে নগ্নপদে পশ্চাদ্বার দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাংলার রাজা লক্ষ্মণসেন এবং বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা জীবন দিয়েছিলেন আত্মীয়-পরিজন ও দেশবাসীর বিশ্বাসঘাতকতায়। এই দু’টি ঘটনা স্মরণ করলে হেঁট হয়ে যায় বাঙালির মাথা। ইতিহাসের পাতা থেকে কোনোদিন মুছে যাবে না এই দু’টি ঘটনা, বাঙালিও হবে না কলঙ্ক-মুক্ত। ইতিহাসে বাঙালির অনেক উজ্জ্বল ঘটনার পাশে এই দু’টি দুরপনেয় বলয় পীড়া দেয় আমাদের সবাইকে। সিরাজউদ্দৌল্লার ক্ষেত্রে ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের বিষয় সামনে এনে আমরা পেতে চাই কিছু সান্ত্বনা। কিন্তু লক্ষ্মণসেনের পলায়ন কাহিনি নিয়ে প্রকৃত অর্থে হয়নি গবেষণামূলক অনুসন্ধান। তাই উদঘাটিত হয়নি প্রকৃত ঘটনা এবং তারা পশ্চাৎপট। বঙ্গদেশের ইতিহাস চর্চায় নিয়োজিত থেকে যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছেন, অন্তদৃষ্টিতে যতটুকু অনুভব করতে পেরেছেন তিনি, সেই অনুভব সত্তায় এই ভূখণ্ডের প্রাচীন ও আদি মধ্য যুগের ইতিহাসের গতিপথ কিছুটা উন্মুক্ত হয়েছে তাঁর সম্মুখে। সম্ভব হয়েছে অনেকগুলি মিসিং লিঙ্কের উদ্ঘাটন। তার অন্যতম হচ্ছে সেন রাজবংশের ইতিহাসের জটিলতার উন্মোচন। বিশেষ করে সপ্তদশ তুর্কি অশ্বারোহী সেনার আক্রমণ এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে লক্ষ্মণসেনের ভূমিকার ঐতিহাসিকত্বের উপরে নতুন আলোকপাত করা হয়েছে এই গ্রন্থে। অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস অনুসন্ধান পরিষদের সম্পাদক ড. নবকুমার দাস। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সঞ্জয় কর্মকার এবং সহযোগিতা করেন গৌরাঙ্গ শীল ও সূরজ দাশ ।