ময়নাগড়ে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নৌকা।

0
31

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:– পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নাগড় জলে ঘেরা একটি বিচ্ছিন্ন ভূমি। আজও রাজ পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম ময়নাগড়ের অভ্যন্তরে বাস করে। কিন্তু এই ময়নাগড় রাজবাড়ির পুরোটাই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে। ফলে ময়নাগড়ে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নৌকা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যে কটি রাজবাড়ী রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম ময়নাগড় রাজবাড়ী। দুটি পরীক্ষা দ্বারা বেষ্টিত একটি ভূখণ্ড। যেখানে রাজ পরিবারের মানুষজন আজও বাস করে। আর তাদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হল নৌকা। প্রাচীন এই ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মের হাতে সযত্নে লালিত পালিত হচ্ছে।

কালিয়াদহ ও মাকড়দহ এই দুটি পরিখা দ্বারা বেষ্টিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ ময়নাগড়। ময়নাগড়ের ইতিহাস অনেক পুরনো। দুটি বড় পরিখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন এই ভূ ভাগে রয়েছে নানান ঐতিহাসিক নিদর্শন। বর্তমানে একটা পরিখার ওপর রাস্তা তৈরি হলেও। এখনও একটি পরিখা ওপর কোন রাস্তা হয়নি। বলা ভালো এ বিষয়ে রাজ পরিবারের সদস্যরা কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। আর তার কারণ হল ময়নাগড়ের ঐতিহ্যকে বহন করে নিয়ে চলা। ফলে এখনও ময়নাগড়ের ভেতর যেসব রাজ পরিবারদের সদস্যদের বাস তাদের বাড়ি থেকে বেরোলেই নৌকো হয়ে ওঠে যাতায়াতের প্রধান অবলম্বন।

ময়নাগড় রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা ময়নগড়ের ভেতরেই বসবাস করে। তাদের যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা রয়েছে প্রত্যেক বাড়ির। প্রতিদিন দৈনন্দিন কাজে এই নৌকা গুলো তাদের যাতায়াতের প্রধান অবলম্বন হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য কৌশিক বাহুবলীন্দ্র জানান, অতীতের ঐতিহ্য এখনও বর্তমান ময়নাগড়ে। ময়নাগরে রাজ পরিবারের যাতায়াতের সদস্যদের জন্য প্রত্যেক বাড়ির নিজস্ব ঘাট রয়েছে আর ঘাটে বাঁধা থাকে নৌকো। ময়নাগড়ে প্রতিটি মানুষ এই ডিঙ্গি নৌকো চালাতে জানে। প্রতিদিন নৌকোয় করে পরিখার জল পথ পেরিয়ে যাতায়াত চলছে। এই ঐতিহ্য আগামীতেও বজায় থাকবে।’
ধর্মমঙ্গল খ্যাত লাউসেনের কাহিনী আজও মানুষের মুখে মুখে ঘুরে। গৌড় থেকে লাউসেন তার রাজধানী ময়না স্থানান্তরিত করে। হাজার বছর ধরে আজও পূজিত হয় রঙ্কিনী দেবী। ধর্মমঙ্গল কাহিনীকে বাদ দিলেও ময়না গড়ের বয়স কিন্তু কম নয়। কলিঙ্গ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ‘জলৌতি দণ্ডপাট’ এর অধিকারী ছিল বাহুবলিন্দ্র রাজ পরিবারের পূর্ব পুরুষেরা। ‘জলৌতি দণ্ডপাট’ এর রাজধানী ছিল বালিসিতা গড়। এই বালিসীতা গড় থেকেই ১৫৬১ সালে বাহুবলীন্দ্র রাজ পরিবারের পূর্ব পুরুষ গোবর্ধননন্দ বাহুবলীন্দ্র প্রথম ময়নাগড়ে রাজধানী স্থাপন করেন। যা আজও মানুষের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।