আজ আর্ন্তজাতিক আর্কাইভস দিবস, জানুন আর্ন্তজাতিক আর্কাইভস দিবস কি, কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।।

0
91

আজ আন্তর্জাতিক আর্কাইভস দিবস। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন আর্কাইভস (আইসিএ) এর উদ্যোগে ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছরের ৯ জুন দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ দিবসের মূল লক্ষ্য, সাধারণ মানুষ ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আর্কাইভস ও নথি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। জাতীয় আর্কাইভসে জমা থাকে দেশের সব সরকারি সংস্থা, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তির ঐতিহাসিক তথ্যের রেকর্ড বা নথি। এগুলোকে বলা যায় জাতির স্মৃতির আকর। একটি দেশ বা জাতির অস্তিত্বের বেড়ে ওঠার বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ করে জাতীয় আর্কাইভস।
আন্তর্জাতিক আর্কাইভস দিবস। ১৯৪৮ সালের ৯ জুন ইউনেস্কোর অঙ্গ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন আর্কাইভস (আইসিএ) এর যাত্রা শুরু হয়। আইসিএ’র উদ্যোগেই ২০০৮ সাল থেকে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আর্কাইভ দিবস।

মূলত ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি আর প্রশাসনের নীতিনির্ধারকদের সামনে আর্কাইভসের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্যই এ দিবসের সূচনা করে আইসিএ।
, ‘আর্কাইভস সিদ্ধান্ত, কাজ ও স্মৃতিকে ধারণ করে। আর্কাইভস একটি অনন্য ও অপ্রতিকল্পনীয় ঐতিহ্য, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বহমান থাকে। আর্কাইভস তার মূল্যবোধ ও মান সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আর্কাইভস তথ্যের বিশ্বাসযোগ্য উৎস, যা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার ভিত্তি নির্মাণ করে। এটি ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্মৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে। আর্কাইভসে প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত রাখার মাধ্যমে মানবসমাজ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে, গণতন্ত্রকে সচল রাখে, নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা করে এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করে।’

উদ্দেশ্য—–

আর্কাইভস হলো ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন সরকারি ও বেসরকারি নথিপত্র, দলিলাদি, পুরনো বিরল পুস্তকাদি, পান্ডুলিপি ইত্যাদির সংগ্রহশালা। বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস চর্চা, শিক্ষা ও গবেষণা, রেফারেন্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাতীয় আরকাইভসের গুরুত্ব অপরিসীম। সম্ভবত প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায় আর্কাইভ জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের উদ্ভব হয় এবং মধ্যযুগেও এগুলির অস্তিত্ব বজায় থাকে। গ্রিক ‘আর্কিয়ন’ শব্দ থেকে আর্কাইভস এর উদ্ভব, যা দ্বারা বোঝায় কোনো দফতরের আয়ত্তাধীন কর্মপ্রণালী। আর্কিয়ন এসেছে ‘আর্ক’ শব্দ থেকে যা দ্বারা আবার প্রারম্ভ, উদ্ভব, সর্বময় কর্তৃত্ব, সাম্রাজ্য, ম্যাজিস্ট্রেসি, দফতর ইত্যাদি বোঝায়। ল্যাতিন ‘আর্কিভিয়াম’ এসেছে গ্রিক আর্কিয়ন শব্দ থেকে, আর ল্যাতিন থেকে এসেছে ফরাসি ল্যা-আর্কাইভ। বিভিন্ন বস্তুর সন্নিবেশ বোঝাতে ফরাসি থেকে ইংরেজি ‘আর্কাইভ’ শব্দটির উৎপত্তি। অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান আর্কাইভসকে সজ্ঞায়িত করেছে এমন একটা স্থান হিসেবে যেখানে সংরক্ষণের নিমিত্ত সরকারি নথিপত্র বা ঐতিহাসিক দলিলাদি সংগৃহীত হয়। টি.আর. শ্যালেনবার্গ আর্কাইভস-এর আধুনিক সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে, যে কোনো সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেই সকল নথিপত্র যেগুলি কোনো গবেষণায় তথ্য-উপাত্ত হিসেবে প্রয়োগের উদ্দেশ্যে স্থায়ী সংরক্ষণের উপযুক্ত বলে বিবেচনা করে সেভাবে কোনো সংগ্রহশালায় রক্ষিত হয়েছে বা রক্ষণের জন্য বাছাই করা হয়েছে। আর্কাইভ এখন একটা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণাগার; একটা জাতির স্মৃতিময় তথ্যের ভান্ডার।

আরকাইভসের গুরুত্ব—

আরকাইভসের গুরুত্ব তুলে ধরতে ১৯৪৮ সালের এ দিনে ইউনেস্কোর অঙ্গ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন আর্কাইভস (আইসিএ) যাত্রা শুরু করে। ২০০৪ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বিশ্বব্যাপী আর্কিভিস্টদের বা নথিরক্ষকদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ থেকে দুই হাজার প্রতিনিধি যোগ দেন। সম্মেলন শেষে তাঁরা একটি সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা জাতিপুঞ্জকে (ইউনাইটেড নেশন্স) অনুরোধ করবেন যেন বিশ্বব্যাপী একটি দিবস ‘আন্তর্জাতিক আর্কাইভস দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এরই মধ্যে বেশ কিছু দেশ তাদের দেশে ‘জাতীয় আর্কাইভস’ বা জাতীয় দলিলপত্র দিবস পালন করছে। দিবসটি পালন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের মধ্যে আর্কাইভস বা দলিলপত্র সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং একই সঙ্গে দেশের নীতিনির্ধারকদের আর্কাইভসের গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিফহাল করানো। ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি আর প্রশাসনের নীতিনির্ধারকদের সামনে আর্কাইভসের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্যই এ দিবসের সূচনা করে আইসিএ। মূলত ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন আর্কাইভস (আইসিএ) এর উদ্যোগে ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছরের ৯ জুন দিবসটি পালিত হচ্ছে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।