স্মরণে কিংবদন্তি বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা – অনুপ কুমার।

0
54

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন——-

বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে এক অতি পরিচিত নাম অনুপ কুমার। তাঁকে চিনেন না এমন বাঙালি পাওয়া খুব দুষ্কর। তিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতায় মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

অনুপ কুমার ছিলেন একজন ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা।  যদিও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, তিনি মূলত একজন থিয়েটার কর্মী ছিলেন।   অনুপকুমার ব্রিটিশ ভারতের উত্তর কলকাতায় ১৯৩০ সালের ১৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন।   তার আসল নাম সত্যেন দাস।   পিতা নজরুল সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার ধীরেন্দ্রনাথ দাস এবং মাতা বিজয়া দেবী।   তাদের আদি নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার পান্ডুয়া।   অনুপকুমার কলকাতার ডাফ স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।   তিনি খুব অল্প বয়সে অভিনয় শুরু করেছিলেন এবং তার বাবার দ্বারা হাতেখড়ি হয়েছিল। ১৯৩৮ সালে যখন তিনি মাত্র আট বছর বয়সে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত “হাল বাংলা” ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন।   শিশিরকুমার ভাদুড়ীর ‘শ্রীরঙ্গম’-এ শিক্ষা শুরু হয়।

অভিনয় জীবন——

চোদ্দ বৎসর বয়সেই পেশাদারি মঞ্চে “টিপু সুলতান” নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন অনুপ কুমার। শ্রীরঙ্গম, বিশ্বরূপা, কাশী বিশ্বনাথ মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করতেন। পেশাদারি মঞ্চে আনুমানিক ৫০ টি নাটকে অভিনয় করেছেন।অনুপকুমার ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ থেকেই পেশাদার মঞ্চে নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল –

ছদ্মবেশী মল্লিকা, অঘটন, নূরজাহান, শ্যামলী, হঠাৎ নবাব, চন্দনপুরের চোর, কী বিভ্রাট, জয় মা কালী বোডিং, রাম শ্যাম যদু।

সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেকে একজন বিশিষ্ট কৌতুক অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।   অভিনয়ে খুব ভালো ছিলেন।   বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র ও ‘যাত্রাপালা’ ছবিতে অভিনয় করেন।    “নিমন্ত্রণ” ছবিতে সেরা অভিনেতার জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন।   বাংলা চলচ্চিত্রে তার অভিনয় মূলত পার্শ্ব চরিত্রে।   তবে কয়েকটি ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।   তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং অনেক চলচ্চিত্র ইতিহাসে পাতায় স্থান করে নিয়েছেন।

তাঁর অভিনিত উল্লেখযোগ্য ছায়াছবিগুলি হল –

বরযাত্রী, কানামাছি, পলাতক, অমৃতকুম্ভের সন্ধানে, শহর থেকে দূরে, বালিকাবধূ, নিমন্ত্রণ, বসন্ত বিলাপ, এক যে ছিল দেশ, মৌচাক, দাদার কীর্তি, প্রতিশোধ।

হিন্দি সিনেমা-

চন্দ্রশেখর,  পরিবর্তন, কিতনে পাস কিতনে দূর।

পুরস্কার ও সম্মাননা—-

বিএফজেএ’পুরস্কার পান (১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ),   স্টার থিয়েটার থেকে পান রূপার পদক(১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে),  পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পুরস্কার  ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ),  শিরোমণি পুরস্কার (১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ), দীনবন্ধু পুরস্কার ( ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ),   শ্রেষ্ঠ পরিচালকের স্বীকৃতি (১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ)।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।