ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী অনিলকুমার দাসের আবাদান আজও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। 

0
53

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ই এক বাঙালি বিপ্লবী ছিলেন অনিলকুমার দাস ।অনিলকুমার দাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী, যিনি ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ব্রিটিশ শাসকের অমানুষিক অত্যাচারে মারা যান।

জন্ম ——–

অনিলকুমার দাস ১৯০৬ সালের ১৮ জুন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় তাঁর পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন।   পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় পাইকপাড়া।   পিতা ছিলেন নিবারণচন্দ্র দাস, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী।   মা কিরণবালা দেবী।   তাদের তিন পুত্রের মধ্যে (অন্য দুইজন হলেন সুনীল দাস এবং পরিমল দাস) এবং এক কন্যা (লতিকা সেন), অনিলকুমার ছিলেন জ্যেষ্ঠ।   এরা সবাই স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত ছিলেন।

শিক্ষা——–

অনিলকুমার ঢাকার একজন ধনী ব্যবসায়ী প্রবোধচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা শুরু করেন।   ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ছাত্রজীবন শুরু হয় এবং তখন থেকেই তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত হন।   ঢাকার পাইকপাড়ায় যুবদল ‘শ্রীসংঘ’-এর ব্যানারে বিপ্লবী সাধনায় জড়ো হয়।   বিশিষ্ট ছাত্রনেতা সুবোধ মজুমদার (ডাক নাম মন) এই যুবদলের অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন।   তিনি স্নাতক পর্যন্ত তার মায়ের সাথে পড়াশোনা করেছেন।   এরপর অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে।   এখানে তার সহপাঠী ছিলেন বিপ্লবী শৈলেশ রায়, রেবতী মোহন বর্মণ, হরিপদ চক্রবর্তী এবং অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা।   পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।   তিনি ১৯২৮ সালে রসায়নে M.Sc পাশ করেন।

বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ——

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সরকারি চাকরি না করে ‘শ্রীসংঘ’-এর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন।   বিপ্লবী অনিল চন্দ্র রায় এবং নেতা লীলা নাগকে সহকর্মী হিসেবে পান।   নিজের আয়ের জন্য তিনি গণিতের কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।   এদিকে, ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে এবং ফলস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার সমস্ত বিপ্লবীদের গ্রেফতার করতে থাকে।   যথারীতি অনিলকুমারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি।   পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করলে সে আত্মগোপনে চলে যায়।   ১৯৩০ সালের ১০ মে তার নেতৃত্বে ভৈরবাজারে ট্রেন ডাকাতি হয়।   এ ঘটনায় গত ৬ জুন বিক্রমপুরের তালতলা স্টিমার ঘাট থেকে তাকে আটক করা হয়।   ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ওপর চলতে থাকে অমানবিক নির্যাতন।   অবশেষে, ১৯৩২ সালের ১৭ জুন, তিনি নির্যাতনের ফলে মারা যান।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।