সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকারদের একজন – স্মরণে ছন্দের যাদুকর।

0
21

“ তুমি বঙ্গভারতীর তন্ত্রী-‘পরে একটি অপূর্ব তন্ত্র এসেছিলে পরাবার তরে এ শুধু প্রিয়জনের প্রশংসা নয়, এ এক ঐতিহাসিক সত্য।” —- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকারদের একজন, রবীন্দ্রযুগের বিখ্যাত “ছন্দোরাজ” কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ছড়া তৈরির কীর্তি, শব্দ ও ভাষার যথাযথ ব্যবহারের জন্য তাঁকে ছন্দের যাদুকর বলে অভিহিত করেছেন।  কবিতা  মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৌরাণিক কাহিনী ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়ে তিনি সুপণ্ডিত ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন——–

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮২ সালে কলকাতার কাছে নিমতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তাঁর পৈতৃক বাড়ি বর্ধমানের চুপি গ্রামে পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মা মহামায়া দেবী। পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।  বিভিন্ন ভাষার শব্দগুলি নিপুণ ছন্দে একত্রিত হয়।  এছাড়া তিনি বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদের কাজও করেছেন সত্যেন্দ্রনাথ সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন (বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে এফএ পাস করেছেন।  কিন্তু পরে বিএ পরীক্ষায় ফেল করেন

কর্মজীবন——-

তিনি ছিলেন ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম কবি৷ প্রথম জীবনে তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, অক্ষয় কুমার বড়াল প্রমুখের দ্বারা প্রভাবিত হন৷ পরে রবীন্দ্র অনুসারী হলেও তিনি স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন৷ বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি-ফার্সি শব্দের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির প্রাথমিক কৃতিত্ব তাঁরই৷ অনুবাদের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ ঘটান৷ নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর প্রভৃতি ছদ্মনামে তিনি কবিতা লিখতেন৷ মেথরদের মতো অস্পৃশ্য ও অবহেলিত সাধারণ মানুষ নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন৷ কবিতায় ছন্দের সমৃদ্ধতার জন্য তিনি ছন্দের রাজা ও ছন্দের যাদুকর বলে খ্যাত।

সাহিত্যকর্ম————

কাব্যগ্রন্থ—–– সবিতা (১৯০০), সন্ধিক্ষণ (১৯০৫), বেণু ও বীণা (১৯০৬), হোমশিখা (১৯০৭), ফুলের ফসল (১৯১১), কুহু ও কেকা (১৯১২) , তুলির লিখন (১৯১৪), মনিমঞ্জুষা (১৯১৫), অভ্র-আবীর (১৯১৬), হসন্তিকা (১৯১৭), বেলা শেষের গান (১৯২৩), বিদায় আরতি (১৯২৪)।

অনুবাদ—– 

তীর্থ সলীল (১৯০৮), তীর্থ রেণু (১৯১০), ফুলের ফসল (১৯১১)।

দেহাবসান———

মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ জুন তারিখে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পরলোকগমন করেন৷

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।