পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- মাউথ অর্গান,একটি বিশেষ বাদ্যযন্ত্র। এই বাদ্যযন্ত্র সাধারণত মুখ দিয়ে বাজানো হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার মাধ্যমে মাউথ অর্গানি সুরের ঝংকার ওঠে। এই মাউথ অর্গান শুধু মুখ দিয়ে বাজানো নয় মুখের পাশাপাশি নাক দিয়ে বাজানোর অনায়াস কৌশল রপ্ত করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের এক ব্যক্তি। আর তাতেই তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত মাউথ অর্গান শিল্পী। তার ঝুলিতে রয়েছে একাধিক রেকর্ড ও সম্মান।পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছেন যারা জন্মগত বিরল প্রতিভার অধিকারী হয়। আবার কিছু মানুষ নিজেদের চেষ্টায় নিজেকে ব্যতিক্রমী করে তোলেন। সেরকমই একজন মহিষাদলের চয়ন চক্রবর্তী। পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে তাঁর একটাই পরিচিতি তিনি মাউথ অর্গান শিল্পী। কিন্তু তিনি মাউথ অর্গান মুখ দিয়ে বাজানোর পাশাপাশি অনায়াস ভাবে নাক দিয়ে বাজানোর কৌশল রপ্ত করেছেন। মুখের পাশাপাশি বিভিন্ন গানের সুর মাউথ অর্গানি নাক দিয়ে অনায়াস ভাবে বাজাতে পারেন তিনি। একটানা ১২ ঘণ্টা নাক দিয়ে মাউথ অর্গান বাজানোর জন্য তিনি লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের অধিকারী। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকে তিনি সম্মানিত হয়েছেন। বাংলার বেসরকারি টিভি চ্যানেলে জনপ্রিয় রিয়েলিটি শোতে ও অংশগ্রহণ করেছেন তাঁর এই বিশেষ প্রতিভার কারণে। মাউথ অর্গান শিল্পী চয়ন চক্রবর্তীর কথায়, ছোটবেলায় ১২-১৩ বছর বয়সে মাউথ অর্গান শিখবে বলে বাড়িতে জানান। বাবা সংগীত জগতের মানুষ ছিলেন। তাই ছেলের বাসনা পূরণ করার জন্য মাউথ অর্গান কে শেখায় তার খোঁজ শুরু করেন। অবশেষে হাওড়ার নামী এক মাউথ অর্গান শিল্পী শ্যামল সেন এর কাছে শুরু হয় মাউথ অর্গান এর তালিম। তারপর হঠাৎই নিজের একদিন মনে হয় মাউথ অর্গান নাক দিয়ে বাজালে কেমন হয়। সেই ভাবনার থেকে নাক দিয়ে মাউথ অর্গান বাজানোর চেষ্টা শুরু হয়। প্রথম প্রথম ঠিকঠাক হচ্ছিল না। কিন্তু দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বর্তমানে নাক দিয়ে মাউথ অর্গান বাজানো সহজ হয়ে উঠেছে। চয়ন চক্রবর্তী নিজের ছোট ব্যবসার পাশাপাশি নিজের শিল্পী সত্তাকেও সমানতালে বয়ে নিয়ে চলছেন। বর্তমানে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত মাউথ অর্গান শিল্পী ও শিক্ষক। ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি দুবাই কোরিয়া বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে রয়েছে তাঁর শিক্ষার্থী। অনলাইনের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন দেশের মাউথ অর্গান শিক্ষার্থীদের মাউথ অর্গান বাজানো শেখান। চয়ন চক্রবর্তী জানান একসময় মাউথ অর্গান ভারতের বিভিন্ন বিখ্যাত বিখ্যাত গানে ব্যবহার হয়েছিল। ধীরে ধীরে তার প্রভাব কমে। বর্তমানে আবারও মাউথ অর্গান স্বমহিমায় ফিরে এসেছে। বহু মানুষ মাউথ অর্গান শিখছে। তাঁর নিজের অফলাইন ও অনলাইন ক্লাসে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।