রথযাত্রা, যা রথের উত্সব নামেও পরিচিত, ভারতে বিশেষ করে ওড়িশা রাজ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় উদযাপন। এটি একটি রঙিন এবং প্রাণবন্ত উত্সব যা ভগবান জগন্নাথ, ভগবান কৃষ্ণের একটি রূপ, পুরীর তাঁর মন্দির থেকে তাঁর মাসির বাসভবন, গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত যাত্রাকে স্মরণ করে, যা প্রায় 3 কিলোমিটার দূরে।
উত্সবের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়েছে, যা 12 শতকে ফিরে এসেছে। কথিত আছে যে ওড়িশার শাসক রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন যাতে ভগবান জগন্নাথ তাঁকে তাঁর সম্মানে একটি মন্দির নির্মাণের নির্দেশ দেন। রাজা পুরীর মহৎ জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ করেন, যা ভক্তদের জন্য একটি পবিত্র তীর্থস্থান হয়ে ওঠে।
রথযাত্রা উত্সবটি চন্দ্র ক্যালেন্ডারের উপর নির্ভর করে প্রতি বছর জুন বা জুলাই মাসে পালিত হয়। তিনটি বিশাল রথ নির্মাণের মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়, একটি ভগবান জগন্নাথের জন্য, একটি তার ভাই ভগবান বলভদ্রের জন্য এবং একটি তার বোন দেবী সুভদ্রার জন্য। রথগুলি জটিল খোদাই, পেইন্টিং এবং ফুল দিয়ে সজ্জিত এবং পুরীর রাস্তায় হাজার হাজার ভক্তদের দ্বারা টানা হয়।
উৎসবটি মন্দের উপর ভালোর বিজয়ের প্রতীক, কারণ ভগবান জগন্নাথ রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশ্যাপুকে পরাজিত করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি ভগবান জগন্নাথের ঐশ্বরিক যাত্রারও একটি উদযাপন, যিনি চূড়ান্ত বাস্তবতা এবং মানবতার ত্রাণকর্তা হিসাবে বিবেচিত।
উত্সবের সময়, সারা বিশ্ব থেকে ভক্তরা পুরীতে জড়ো হয় শোভাযাত্রায় অংশ নিতে এবং রথ টানতে। পরিবেশটি সঙ্গীত, নৃত্য এবং স্তোত্র ও মন্ত্র উচ্চারণে পরিপূর্ণ। উত্সবটি বিশ্বাস, ভক্তি এবং সম্প্রদায়ের চেতনার একটি সুন্দর প্রকাশ।
উপসংহারে, রথযাত্রা উত্সব একটি অনন্য এবং আকর্ষণীয় উদযাপন যা ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রদর্শন করে। এটি বিশ্বাস এবং ভক্তির শক্তির একটি প্রমাণ এবং আমাদের জীবনে সম্প্রদায় এবং আধ্যাত্মিকতার গুরুত্বের একটি অনুস্মারক।