বটুকেশ্বর দত্ত – ভারতের স্বাধীনতা অন্দোলনের অগ্নিপুরুষ -প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

0
23

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে বটুকেশ্বর দত্ত একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। বটুকেশ্বর দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
বটুকেশ্বর দত্ত ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী।  তিনি ভগৎ সিং-এর সাথে ৮ এপ্রিল ১৯২৯ সালে নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা হামলার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।  পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা দুটি বোমা ফেলে, যাতে কেউ আহত না হয়।  ফরাসি নৈরাজ্যবাদী বিপ্লবী বেইলআউটের মতো, ভগৎ সিং-এর বক্তব্য ছিল  ‘বধিরকে শোনাতে উচ্চকণ্ঠ প্রয়োজন’।  বটুকেশ্বর দত্ত এবং তিনি তাদের বক্তব্যের সমর্থনে লিফলেট বিতরণ করেন, স্লোগান দেন এবং নীরবে গ্রেফতার হন।
বটুকেশ্বর দত্ত  ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী এবং ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল ভগৎ সিংয়ের সাথে নয়া দিল্লীর কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা ফাটানোর জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। তাঁরা পরিকল্পনা মোতাবেক দুটি বোমা ফেলেন, যাতে কারো কোনো ক্ষতি না হয়। ফরাসী নৈরাজ্যবাদী বিপ্লবী বৈলেয়ন্টের মতোই ভগৎ সিংহের বক্তব্য ছিল ‘বধিরকে শোনাতে উচ্চকণ্ঠ প্রয়োজন’। বটুকেশ্বর দত্ত ও তিনি ইস্তাহার ছড়িয়ে দেন নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে, স্লোগান দেন এবং শান্তভাবে গ্রেপ্তারবরণ করেন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—-
বটুকেশ্বর দত্ত ১৯১০ সালের ১৮ নভেম্বর বর্তমান ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার খন্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  পিতা গোষ্টবেহারী দত্ত।  শৈশবে তিনি গ্রামে ‘মোহন’ নামে পরিচিত ছিলেন।  জন্মের পর কিছুদিন ওয়াদি গ্রামে থাকার পর বটুকেশ্বর ব্যবসার কাজে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে গেলে বাবার সঙ্গে চলে যান।  ১৯২৫ সালে তিনি সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। সেখানেই তিনি বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ এবং ভগৎ সিং-এর সংস্পর্শে আসেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন।  বিপ্লবী দলে যোগ দিয়ে তিনি প্রথমে আগ্রা, পাঞ্জাব এবং অন্যান্য স্থানে গিয়ে দলকে সংগঠিত করেন।  তাদের সংগঠনের নাম ছিল হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন।  কানপুরে কলেজে পড়ার সময় তিনি বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ এবং ভগত সিং-এর সংস্পর্শে আসেন এবং বিপ্লবী রাজনীতিতে যোগ দেন।  বিপ্লবী সদস্যদের কাছে বটুকেশ্বর দত্ত বি.কে নামে পরিচিত ছিলেন।
বন্দী জীবন—-
তাদের গ্রেপ্তারের পর, ব্রিটিশ সরকার তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইন লঙ্ঘন এবং হত্যার চেষ্টার জন্য একটি বিচার চালায়।  জেলে থাকাকালীন, তিনি এবং ভগত সিং ভারতীয় রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে এবং রাজবন্দীদের অধিকারের জন্য ঐতিহাসিক অনশন শুরু করেছিলেন এবং তাদের জন্য কিছু অধিকার অর্জন করতে সক্ষম হন।  এই অনশনে শহীদ হন বিপ্লবী যতীন দাস।  বটুকেশ্বর ১৯৩৮ সালে মুক্তি পায়, কিন্তু বাংলা, পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশে তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।  ১৯৪২ সালে তাঁকে আবার গ্রেফতার করা হয় এবং তিন বছর গৃহবন্দী রাখা হয়।
মৃত্যু—–
যক্ষ্মাজনিত কারণে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েও স্বাধীন ভারতে তিনি সমাদৃত হননি এবং দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে জীবন কাটিয়েছেন।  ২০ জুলাই, ১৯৬৫ তারিখে, তিনি দিল্লির একটি হাসপাতালে প্রায় নীরবে প্রয়াত হন।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।