২০০০ সালের ২২ জুলাই পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং তার রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর ২১ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

0
22

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে 22শে জুলাই, 2000 তারিখে 14 বছরের কারাদণ্ড এবং রাজনীতি থেকে 21 বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল, একটি যুগান্তকারী রায় যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়কে চিহ্নিত করেছিল।

1999 সালের অক্টোবরে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া শরীফ, তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে বহনকারী একটি বিমানকে করাচিতে অবতরণ করা থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা সম্পর্কিত দুর্নীতি, হাইজ্যাকিং এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।

করাচির একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত এই রায় প্রদান করে, যেটি রায় দেয় যে শরীফ বেআইনিভাবে কাজ করেছেন এবং মোশাররফের বিমান অবতরণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আদালত তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে।

এই শাস্তিকে শরীফের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন)-এর জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। শরীফের সমর্থকরা এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে আপিল করার অঙ্গীকার করেছেন।

1999 সালের অক্টোবরে শরীফের সমস্যা শুরু হয় যখন তিনি করাচিতে মোশাররফের বিমানকে অবতরণ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। মোশাররফ শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ফিরছিলেন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তাকে সতর্ক করেছিল যে শরিফ তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করছে।

শরীফের পদক্ষেপকে ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরার একটি মরিয়া প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হয়েছিল, এবং এটি দর্শনীয়ভাবে বিপরীতমুখী হয়েছিল। মোশাররফ, যিনি তখন সেনাপ্রধান ছিলেন, রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করেন এবং শরীফকে দুর্নীতি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করেন।

শরীফের বিচারকে ব্যাপকভাবে একটি প্রতারণা হিসাবে দেখা হয়েছিল, অনেক পর্যবেক্ষক বিশ্বাস করেছিলেন যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি বাতিল করা হয়েছে এবং বিচারটি একটি নিছক আনুষ্ঠানিকতা ছিল। রায়টি কখনই সন্দেহের মধ্যে ছিল না এবং শরীফের দোষী সাব্যস্ত হওয়াকে পূর্ববর্তী উপসংহার হিসাবে দেখা হয়েছিল।

এই বাক্যটি পাকিস্তানের রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে, যেটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শরীফ ও তার দলের আধিপত্য ছিল। শরীফের পতনকে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাক্কা হিসাবে দেখা হয়েছিল, যা বছরের পর বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

পরবর্তী বছরগুলিতে, শরীফের দল ধ্বংস হয়ে যায় এবং এর অনেক নেতাকে হয় জেলে পাঠানো হয় বা নির্বাসনে বাধ্য করা হয়। শরিফ নিজে জামিনে মুক্তি পাওয়ার আগে এবং অবশেষে সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়ার আগে বেশ কয়েক বছর কারাগারে কাটিয়েছিলেন।

শরীফের শাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে পাকিস্তানে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে, কেউ কেউ তাকে একজন দুর্নীতিগ্রস্ত এবং স্বৈরাচারী নেতা হিসেবে দেখেন যিনি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে ক্ষুন্ন করেছিলেন। অন্যরা তাকে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হিসাবে দেখেন যিনি সামরিক এবং তার সহযোগীদের দ্বারা অন্যায়ভাবে লক্ষ্যবস্তু ছিলেন।

কারো দৃষ্টিভঙ্গি নির্বিশেষে, যাইহোক, এটা স্পষ্ট যে শরীফের সাজা পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়কে চিহ্নিত করেছে, যা দেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতি করেছে।