অভিজিৎ হাজরা,বাগনান, হাওড়া :- বাগনান খালোড় অঞ্চলের শিবালয় হলে বাগনান আদর্শ যোগ অনুশীলন মিশন তথা যোগাচার্য আশ্রমের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গুরু পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠান। প্রথমেই শ্রীশ্রী সিদ্ধিদাতা গনেশজী মহারাজের পূজা পাঠের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা হয়। পুষ্পাঞ্জলি হোম যজ্ঞ এবং গীতা পাঠ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানের মুখ্য বিষয় হলো গুরুজনদের চরণ বন্দনা। প্রথমেই সৃষ্টিকর্তা আদি গুরু শ্রী মহাদেবের চরণ বন্দনা করে এই আশ্রমে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা তথা আচার্য মাননীয় শ্রী প্রদীপ গুড়িয়া মহাশয় অনুষ্ঠানটির শুভউদ্বোধন করেন ।তারপর একে একে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
এ অনুষ্ঠানের প্রধান বিষয়টি হলো আমাদের প্রথম গুরু অর্থাৎ পিতা-মাতার চরণ বন্দনা ও চরণধৌতি। আমরা জানি আমাদের প্রথম গুরু আমাদের পিতা এবং মাতা। তাদের জন্যই আমাদের পৃথিবীতে আসা ।সেই পিতা এবং মাতার চরণ বন্দনা ও চরনধৌতি করে আশীর্বাদ গ্রহণ করে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা ।এবং পিতা-মাতাকে মধ্যমণি করে সকল ছাত্রছাত্রীরা সাতবার পরিক্রমণ করে সকলেই তাদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড পরিক্রমন বা পরিভ্রমণ সম্পন্ন করে।
বাগানের আদর্শ যোগ অনুশীলন মিশন তথা যোগাচার্য আশ্রমের কর্ণধার মাননীয় আচার্য শ্রী প্রদীপ গুড়িয়া মহাশয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল উনি ওনার এই আশ্রমটিকে প্রকৃত মানুষ গড়ার পিঠস্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চান, করতে চান সংস্কৃতি শিক্ষার অন্যতম পাঠাগার হিসাবে গঠন করে তুলতে । উনার চোখে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী সন্তান তুল্য এবং একটি কাদার ডেলা ।তাদেরকে উনি যেভাবে খুশি গড়ে তুলতে পারেনা ।তাই উনি যে আদর্শ গ্রহণ করেছেন তা হলো মানুষ গড়ার আদর্শ ।ওনার মুখেই শোনা গিয়েছে গেল শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের সেই বাণীর কথা যে “মানুষ আপন টাকা পর যত খুশি মানুষ ধর”। তাই উনি ওনার সান্নিধ্যে যারাই এসেছেন তাদেরকেই প্রকৃত মানুষ হবার মূল মন্ত্র দিয়েছেন। সেই জন্যই এই গুরু পূর্ণিমার মহতী দিনে এই অনুষ্ঠান করে উনি সমস্ত মানুষ জনকে বুঝিয়েছেন, যে গুরুজনদের প্রকৃত মান্যতা দেওয়া আগামী দিনের সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় সাতশো থেকে আটশো জন মানুষ,যারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওনার বিভিন্ন কথা শুনেছেন এবং সমগ্ৰ অনুষ্ঠান দেখেছেন। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম যে অংশটি দেখা গেল,যে বিশিষ্ট সমাজসেবী যাদের আমরা সাধারণত চিনতে পারি না সেই মানুষদের উনি মঞ্চে উপস্থিত করে সসম্মানের সঙ্গে তাদের সংবর্ধনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সংবর্ধনা দিয়েছেন যোগাচার্য আশ্রম এর যে সকল ছাত্র -ছাত্রী উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ন্যাশনাল যোগ চ্যাম্পিয়ন শিপে সাফল্য পেয়েছেন তাদের।যে প্রাক্তন ছাত্র -ছাত্রীরা যারা বিশেষ বিশেষ কর্মের শীর্ষে উপনীত হয়েছেন তাদের ও সম্মান প্রদর্শন করেন।আসন্ন যোগা লিগের জার্সি উন্মোচন হয় এই অনুষ্ঠানে। আশ্রমের ছাত্র -ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,যে তাদের সকলের উদ্দেশ্য ও প্রধান লক্ষ্য, তাদের গুরু আচার্য্য শ্রী প্রদীপ গুড়িয়া এর শিক্ষানুযায়ী ভারতীয় শিক্ষা- সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এই বাংলাকে যোগের দিক থেকে তারা অনেক উপরে নিয়ে যেতে চায়।কারণ তাদের সকলেরই উদ্দেশ্য যোগের প্রসার ও যোগের প্রচার। সারাদিন ধরে চলা এই গুরু পূর্ণিমার অনুষ্ঠানটি সমবেত ভারতীয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটে।