আজ ডায়াবেটিস সেবা দিবস। অধ্যাপক ডা. মো. ইব্রাহিমের মৃত্যু দিবস স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর ডায়াবেটিক হাসপাতালগুলোতে ৬ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়। অধিকাংশ দেশেই ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে, যদিও কিছু উন্নত দেশ এ বৃদ্ধির হারে লাগাম টানতে পেরেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগজনক হারে ডায়াবেটিসের রোগী বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যার ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি, ডায়াবেটিসজনিত স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এবং এতে মৃত্যু ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন ডায়াবেটিসকে বৈশ্বিক মহামারি হিসাবে ঘোষণা করে।
শহুরে জনসংখ্যার তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ডায়াবেটিক রোগী কম দেখা যায়, যা খাদ্য গ্রহণের পার্থক্যের কারণে হতে পারে । এই রোগ প্রতিরোধে শুধু সচেতনতা নয়, জীবনযাত্রার পরিবর্তনও জরুরি । বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং কম শারীরিক পরিশ্রমের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের শহরে বেশি দেখা যায় । ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে যেসব বিষয় জড়িত, সেগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় : পরিবর্তনযোগ্য-জীবনযাত্রা সম্পর্কিত বিষয় যেমন স্থূলতা, অলস জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, ওষুধ ইত্যাদি; পূর্বে চিহ্নিত প্রি-ডায়াবেটিস এবং গর্ভকালীন অপুষ্টি। অপরিবর্তনীয়-পারিবারিক ও বয়স/লিঙ্গ। গবেষণালব্ধ তথ্য ও প্রমাণসাপেক্ষে এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং এর জটিলতাগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা উপলক্ষে এ রোগের আধুনিকতম গবেষণার সঙ্গে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার বাস্তব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পথিকৃৎ ডা. ইব্রাহিম ।
ঢাকার সেগুনবাগিচাতে নিজস্ব চিকিৎসা কক্ষে এবং ব্যক্তিগত যন্ত্রপাতি দিয়ে তিনি ডায়াবেটিক চিকিৎসার সূচনা করেছিলেন। ১৯৮৯ সালের এইদিনে জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম মৃত্যুবরণ করেন।জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম মৃত্যুবরণের দিনের স্মরণে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।এদিন রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা, কীভাবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সে বিষয়ে রোগীদের জানানো হয়।
ডায়াবেটিস হলে শরীরে প্রয়োজনীয় ইনসুলিনের মাত্রা কমে যায়, শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না, প্রস্রাবের সঙ্গে শর্করা বেরিয়ে যায়। এতে রোগী দুর্বল হয় ও ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে যায়।
এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। শুধু তাতেই থেমে থাকেন নি এ চিকিৎসক। এটিকে একাধারে গবেষণা ও গবেষণা ফলাবর্তনানুসারী ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার উপায় ও উপলক্ষ নির্মাণ করেছিলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা উপলক্ষে এ রোগের আধুনিকতম গবেষণার সঙ্গে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার বাস্তব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পথিকৃৎ ডা. ইব্রাহিম ।
ঢাকার সেগুনবাগিচাতে নিজস্ব চিকিৎসা কক্ষে এবং ব্যক্তিগত যন্ত্রপাতি দিয়ে তিনি ডায়াবেটিক চিকিৎসার সূচনা করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে মাত্র ২৩ জন রোগীর ওপর গবেষণা ও তাদের চিকিৎসা অগ্রগতি তথা তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাত্রা ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা তিনি চালু করেছিলেন। পরে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় ও সমঝোতার মাধ্যমে রোগী রেফার করে চিকিৎসা করতেন।
১৯৮২ সালে যে বিশাল স্থাপনা ক্রমান্বয়ে গড়ে ওঠে, তা পরে ইব্রাহিম সেন্টার তথা অধুনা বারডেম নামে সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করে।
বর্তমান জীবনধারায় ডায়াবেটিস একটি বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। পরিবারে এখন দু-একজন ডায়াবেটিক থাকা যেন খুবই স্বাভাবিক । শুধু বয়স্করাই নয়, তরুণরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন । আমাদের দেশেও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেক ডায়াবেটিস রয়েছে এবং এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তাই ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আজকের দিনট পালিত হয়।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।