মূল্যবান মনুষ্য জীবন ও বিশ্বকর্মা পূজা : স্বামী আত্মভোলানন্দ(পরিব্রাজক)।

0
8

আগামীকাল দেবশিল্পী ভগবান বিশ্বকর্মা পূজা, এই বছর 17 সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার 2024-এ (বাংলা ৩১ভাদ্র মঙ্গলবার ১৪৩১) বিশ্বকর্মা পূজা পড়েছে। দেবশিল্পী ভগবান বিশ্বকর্মা, দেবতাদের ঐশ্বরিক স্থপতি এবং প্রকৌশলী হিসাবে পরিচিত, পুরাণে তাঁর অতুলনীয় কারুকাজ এবং দক্ষতার জন্য সম্মানিত। এই উত্সবটি কর্মক্ষেত্র এবং কারখানাগুলিতে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, যেখানে জীবিকা এবং সাফল্যের উপকরণ হিসাবে হাতিয়ার এবং যন্ত্রপাতি পূজা করা হয়। হিন্দু স্থাপত্য দেবতা বিশ্বকর্মার সন্তুষ্টি লাভের আশায় এই পূজা করা হয়। তাকে স্বয়ম্ভু এবং বিশ্বের স্রষ্টা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের বিশ্বকর্মা পূজা বা বিশ্বকর্মা জয়ন্তী হচ্ছে একটি হিন্দুধর্মীয় উৎসব।

তিনি ভগবান কৃষ্ণের রাজধানী দ্বারকা শহরটি ও পাণ্ডবদের মায়া সভা নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি রামায়ণে বর্ণিত লঙ্কা নগরী, রামায়ণে উল্লিখিত ব্রহ্মার পুষ্পক রথ, দেবতাদের বিভিন্ন গমনাগমনের জন্য বিভিন্ন বাহন, দেবপুরী এবং বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিব এর ত্রিশূল, কুবের এর অস্ত্র, ইন্দ্রের বজ্র, কার্তিকের শক্তি সহ দেবতাদের জন্য বহু কল্পিত অস্ত্রের স্রষ্টা। তিনি এই বিশ্বের সব কর্মের সম্পাদক। তিনি সব ধরনের শিল্পের প্রকাশক। শিল্পবিদ্যায় বিশ্বকর্মার রয়েছে একচ্ছত্র অধিকার। তিনি নিজেই চতুঃষষ্টিকলা, স্থাপত্যবেদ এবং উপবেদ এর প্রকাশক। কথিত আছে, পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথমূর্তিও তিনিই নির্মাণ করেন। তাকে স্বর্গীয় সূত্রধরও বলা হয়।

বিশ্বকর্মা পূজা শুধুমাত্র কারুশিল্প এবং দক্ষতাই উদযাপন করে না বরং শ্রমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা ও বন্ধুত্বের ধারনাও জাগিয়ে তোলে। এটি দৈনন্দিন জীবনে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে, কাজের সঙ্গে জড়িত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের পূজা করা হয়। তিনি সৃষ্টিশক্তির দেবতা এবং পরম সত্যের প্রতিরূপ। ঋগ্বেদ অনুযায়ী, তিনি সময়ের সূত্রপাতের আগে থেকেই অস্তিত্বমান ছিলেন। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে, কাজের সাথে জড়িত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের ও পূজা করা হয়।
বিশ্বকর্মা পূজা ভারত জুড়ে অত্যন্ত উত্সাহের সাথে পালিত হয়। উন্নত ভবিষ্যৎ, নিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সর্বোপরি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করে, বিভিন্ন ধরনের পেশার মানুষ এদিন বিশ্বকর্মার পুজো করেন। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি তিথিকে ‘কন্যা সংক্রান্তি’ বলা হয়। পুরাণ মতে এই তিথিতেই বিশ্বকর্মার জন্ম হয়। আমাদের হিন্দু ধর্মে সব দেব -দেবীর পুজোর তিথি স্থির হয় চন্দ্রের গতি প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে। বিশ্বকর্মা পুজোর তিথি স্থির হয় সূর্যের গতির উপর নির্ভর করে। দেবশিল্পী ভগবান বিশ্বকর্মার শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ আপনাদের সকলের শিরে বর্ষিত হোক,এই প্রার্থনা করি…!
স্বামী আত্মভোলানন্দ(পরিব্রাজক)