তিলোত্তমা -র বিচার চেয়ে রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি রাষ্ট্রপতি কে প্রেরণ । ‌ ‌

0
9

অভিজিৎ হাজরা, হাওড়া :- ‌ ২০২৪ সালের ৯ আগষ্ট সকাল প্রায় সাড়ে নয় টা নাগাদ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কলেজ শাখার সেমিনার হল থেকে একজন মহিলা চিকিৎসক এর মৃতদেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।৩১ বছর বয়সী এই চিকিৎসকের দেহে মারাত্নক আঘাতের চিহ্ন ছিল। মৃতদেহের সুরতাল প্রমাণপত্রে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়।ঐ ঘটনার পর সারা দেশ তথা সারা বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিবাদের জন্ম দেয়। এই ঘটনার পর পরই হাসপাতাল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে সারা বিশ্বে। কলকাতা সহ সারা বিশ্বের নারীরা – মেয়েরা ” রাত দখল করো ” শিরোনামে একটি প্রতিবাদী মিছিল করে। ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে স্থান করে নেয়।সারা দেশে বিশেষ করে চিকিৎসাগতৎ পেশার সঙ্গে জড়িত সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার সঠিক বিচার – দোষীদের শাস্তির দাবিতে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্তদের পাশাপাশি ছাত্র -ছাত্রী, সমস্ত স্তরের শিল্পী, অভিনেতা – অভিনেত্রী, কলাকুশলীরা, খেলোয়াড় থেকে বুদ্ধিজীবী মহল এমনকি সাধারণ মানুষ, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন অরাজনৈতিক ব্যানারে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। প্রতিদিনই রাজ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের আর জি কান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে ন্যায় বিচার ও দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে মৌন মিছিল, মশাল মিছিল, মোমবাতি মিছিল, প্রতিবাদ মিছিল, ধর্ণা চলছে। এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সি সি বি আই তদন্ত করছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় ঘোষ,আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মন্ডল গ্ৰেপ্তার হয়েছে। ধর্ষণ ও খুনের ইস্যুতে ন্যায় বিচার ও দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার আমতা ২ নং ব্লকের হাওড়া ও হুগলি জেলার প্রান্তিক এলাকার ঝিখিরা গ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকার সম্পুর্ন অরাজনৈতিক ঝিখিরা হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র – সমাজ ঝিখিরা বারোয়ারী বিল্ডিং এ এক অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন তিলোত্তমার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ন্যায় বিচার ও দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে। এই ধরনের প্রতিবাদ – আন্দোলন জেলা তথা রাজ্যের কোনো জায়গায় হয় নি। তিলোত্তমার উপর নারকীয় ও বর্বোরোচিত অত্যাচার, ধর্ষণ ও শেষে খুন করার প্রতিবাদে ন্যায় বিচার ও দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে রক্তদান ও রক্ত দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখলেন। ওই ওয়ান্ট জাস্টিস,ওই ডিমান্ড জাস্টিস, ” লাগে রক্ত আর ও দেবো, ন্যায় বিচার আদায় করেই নেবো ” এই শ্লোগান দিয়ে ছয় জন মহিলা সহ পঞ্চাশ জন রক্তদান করেন। এই রক্তদান শিবিরে দেখা গেল এক স্বাস্থ্যকর্মী (নার্স) সহকর্মীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঠিক বিচার ও দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে রক্তদান করাকালীন শোকে বিহ্বল হয়ে অঝোরে কেঁদে ফেললেন। রক্তদান করার কিছুক্ষণ পরেই রক্তদাতারা ও উপস্থিত অন্যান্য বক্তবর্গ ডিসপোজেবল সিরিঞ্জের মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত নিয়ে ঐ ডিসপোজেবল সিরিঞ্জের সূচের সাহায্যে এক একজন এক একটি আর্ট পেপারে রক্ত দিয়ে লিখলেন “ওই ওয়ান্ট জাস্টিস,ওই ডিমান্ড জাস্টিস “। কোনো আর্ট পেপারে লিখলেন ” ওই ওয়ান্ট জাস্টিস ফর আর জি কর, তিলোত্তমার বিচার চাই,” ফাইট ফর জাস্টিস, জাস্টিস ফর আর জি কর,লাগে রক্ত আর ও দেবো- ন্যায় বিচার আদায় করেই নেবো। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়,রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি ও প্রতিবাদপত্র ডাকযোগে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। যদিও রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি ও প্রতিবাদপত্র এই ধরণের প্রতিবাদের কাজকে সঠিক প্রন্থা নয় বলে অনেকে অভিমত পোষণ করেন।রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি ও প্রতিবাদপত্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার চাইতে এই প্রন্থা বলে উদ্যোক্তাদের মন্তব্য।