পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- আশ্বিনের শারদ প্রাতে…। আর প্রতি বছরের মতো এবছরও বাড়ির মাঝবয়সী মানুষটিও ধুলো ঝাড়ছেন পুরানো রেডিওর। একবার পরখ করে দেখে নেওয়া, আদৌ এতে মহালয়া শোনা যাবে তো? স্মার্টফোনের যুগেও হারিয়ে যেতে বসা রেডিওর নস্টালজিয়ায় ভাসছে আম বাঙালি।
প্রযুক্তির যুগে রেডিওর কদর কমলেও মহালয়ার ভোরে প্রবীনদের কাছে রেডিওর কদর এখনও বিদ্যমান
মহিষাসুরমর্দ্দিনী বাঙালির চিরন্তন এক আগমনী। মহালয়ার আগে অনেকের ফের মনে পড়ে যাচ্ছে রেডিওর কথা। কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার যুগে টিভি, মোবাইল ও ইন্টারনেটের যুগে রেডিওর ব্যবহার বিলুপ্তির পথে। মোবাইল ফোন আর ডিজিটাল মাধ্যমের আগমনে রেডিওর কদর এখন অনেক কমেছে। রেডিওর ব্যবহার সচরাচর দেখা যায় না বললেই চলে। কিন্তু বছরের এই একটি দিন যেন তাকে ছাড়া চলে না একাংশ প্রবীণদের। তাই বাড়ির আর পাঁচটা অকেজো জিনিসের সঙ্গে এককোণায় পড়ে থাকা রেডিওর ধুলো ঝাড়তে ও ব্যাটারি কেনার প্রস্তুতি নেবেন প্রবীণদের একাংশ। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে রেডিওতে মহিষাসুরমর্দিনী শুনতে ভালো বাসেন গ্রামের প্রবীণ মানুষ। ভোরে রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে সংস্কৃত স্তোত্রপাঠ শুনেই পুজোর আমেজ পান। তার কন্ঠের চণ্ডীপাঠ শুনতে আজও আগ্রহী প্রবীণরা। মহালয়ার ভোরের সেই ঘোর থেকে আজও বেরিয়ে আসতে পারেন না কেউ কেউ। তাই এখনও মহালয়ার বেশকিছু দিন আগে থেকে পুরোনো রেডিও নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় অনেক প্রবীণের। তাই প্রযুক্তির যুগে রেডিওর কদর কমলেও মহালয়ার ভোরে প্রবীনদের কাছে রেডিওর কদর এখনও বিদ্যমান।
অনেকের বাড়িতে এখনও আছে সেই রেডিও। অনেকে আবার ভাঙাচোরা জিনিসপত্রের সঙ্গে কবেই বাড়ি থেকে বিদায় করে দিয়েছেন একসময়ের সাধের রেডিওকে। তবে মহালয়ার ঠিক আগের দিন খোঁজ পড়ে সেই রেডিওর। অনেকের বাড়ির রেডিওই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে অনেকদিন। আর সারানোর তাগিদ অনুভব করেননি কেউই। এভাবেই হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে বঙ্গজীবনের হারিয়ে যেতে বসা এই অঙ্গ।
সেই আলো না ফোটা ভোরবেলায় পাশের বাড়ি থেকে ভেসে আসত মহিষাসুরমর্দিনীর সুর। তার মানে পুজো এসে গেল। ঘুম চোখে এবার বাড়ির রেডিওটা অন করার পালা। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেই শনিবার দেখা যায় রেডিও, টিভির দোকানে ভিড় জমতে শুরু করেছে। অনেকেই চাইছেন তাড়াহুড়ো করে রেডিওটা সারাই করে নিতে। কেউ কেউ আবার কম পয়সায় রেডিও কিনতে চাইছেন।