বাগনানে যাত্রী ও দর্শনার্থীদের ত্রাতা ।

0
20

অভিজিৎ হাজরা, হাওড়া :- ‌ বাগনান রেল স্টেশনের ৫ নং প্লাটফর্ম। এই ৫ নং প্লাটফর্মের টিকিট কাউন্টারের পাশে একটি চায়ের দোকান আছে। এই চায়ের দোকানের মালিক বাগনানের খালোড় গ্ৰামের সেখ আক্তার আলি।রক্তে তার সমাজসেবার মানসিকতা।সারা বছর ধরে তিনি আর্ত, অসহায় মানুষের সেবা, অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া,দুঃস্থ ও অসহায় মানুষকে সাধ্যমত অর্থ সাহায্য করা।রেলযাত্রী ও পথচারীদের দূর্ঘটনায় আহত জনদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা সহ ঔষধ বিতরণ সম্পুর্ন বিনামূল্যে করে চলেছেন বিগত ২০ বৎসর যাবৎ। কোনো রেলযাত্রী, পথচারী মানুষ বিপদে পড়ে ফোন না থাকায় বা ফোন সচল না থাকার কারণে আত্নীয় স্বজন দের ফোনে যোগাযোগ করার জন্য ওনার সাহায্য চাইলে তিনি বিনামূল্যে ফোন করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ‌ রেলযাত্রী ও পথচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিনিয়ত বার্তা দেন – পায়ে হেঁটে রেল লাইন পার হবেন না।ওভার ব্রিজ ব্যবহার করুন।ফোনে,ও হেড ফোনে কথা বলতে বলতে রেল লাইন পার হবেন না। মহিলা কামরায় কোনো পুরুষ যাত্রী উঠবেন না। প্লাটফর্মে বা ট্রেনের মধ্যে কোনো জিনিষ পড়ে থাকলে হাত দেবেন না। প্লাটফর্মে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আইন নিজের হাতে নেবেন না,রেল প্রশাসনের সাহায্য নিন।আর- পি- এবং এবং জি-আর-পি-এফ কে জানান। ইসলাম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও বাঙালিদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গোৎসবে নিজেকে সামিল করেন সমাজসেবামূলক কাজে। শারদোৎসবের চারদিন তিনি সদা ব্যস্ত থাকেন পথচারী ও প্রতিমা দর্শনার্থীদের সেবামূলক কাজে।প্রতিমা দর্শনার্থীদের জন্য তিনি বিনামূল্যে পানীয় জল,বাতাসা,বেবী ফুড,অতি ছোট শিশুর জন্য গরম দুধ, বিস্কুট, বিতরণ করেন। সামান্য অসুস্থদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা সহ ঔষধ বিতরণ করেন সম্পুর্ন বিনামূল্যে। এহেন সমাজসেবামূলক কাজ প্রসঙ্গে সেখ আক্তার আলি বলেন,” চা দোকান চালাতে গিয়ে আমি দেখলাম অনেকেই আমার কাছে আসে যে কোনো বিপদে তাদের নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার জন্য, রেললাইন পারাপার করতে গিয়ে দূর্ঘটনা, দূর্ঘটনায় অঙ্গহানি দূর্ঘটনায় মৃত্যু।কোন ট্রেন কোন সময়ে কোন প্লাটফর্মে আসছে তার রেল কতৃপক্ষের ঘোষণায় বুঝতে না পারে না।তারা জিজ্ঞাসা করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মহা উৎসব শারদোৎসবের সময় দর্শনার্থীরা পানীয় জলের সমস্যায় পড়েন। সঙ্গে থাকা শিশুদের জন্য গরম দুধ পায় না। এই অবস্থা উপলব্ধি করে তখন থেকেই কিছু করার মানসিকতা আসে। চায়ের দোকান থেকে প্রতিদিন যে সামান্য আয় হয় তা থেকে কিছু অর্থ প্রতিদিন একটি ভাঁড়ে সঞ্চয় করতে থাকি। শারদোৎসবের সময় সেই সঞ্চিত অর্থ দিয়ে নানান জিনিস ও ঔষধ কিনে এই কাজ করতে থাকি। বতর্মানে আমার এই সেবামূলক কাজে উৎসাহিত হয়ে অনেক সহৃদয় মানুষজন এখন অর্থ, বিতরণ করার জন্য বিভিন্ন সামগ্ৰী,ঔষধ দিয়ে সহযোগিতা করছে ” । আক্তার আলি আরও বলেন,” আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন এই সেবামূলক কাজ করে যাবো।তবে কোনো সময়ই কোনো রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে বা কোনো রাজনৈতিক নেতা – নেত্রীদের কাছ থেকে সাহায্য নেব না ” । তাঁর এই সমাজসেবামূলক কাজের জন্য সকলেই প্রসংশা, সাহায্যপ্রাপ্তরা আর্শীবাদ করছেন।