শরীরে বসিয়েছে ক্যান্সারের থাবা তবুও সংসার চালাতে কাজ করছে অন্যের বাড়িতে, উদাসীন সমাজ।

0
22

বাঁকুড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  হিন্দু সমাজের বাড়িতে বাড়িতে যখন লক্ষী পূজোর রমরমা তখন এক হতভাগ্য, ক্যান্সার আক্রান্ত জীবন্ত লক্ষ্মীর নিত্য দিনের কঠিন সংগ্রাম উঠে এলো আমাদের সাংবাদিক আব্দুল হাই এর ক্যামেরায়। যদিও খোঁজ নিলে সমাজে এরকম হাজার হাজার জীবন্ত লক্ষ্মীকে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করার জীবন্ত চলচ্চিত্র উঠে আসবে। অথচ সমাজ চলছে গড়গড়িয়ে, উন্নয়ন চলছে হর-হরিয়ে।
আজকের এই গল্প ঠিক প্রদীপের আলোর মতো, প্রদীপ তার আলো দিয়ে মুগ্ধ করে, মুছে দেয় অন্ধকার আবার কখনো কখনো দেখায় অন্ধকারে পথও অথচ প্রদীপের নিচে থেকে যায় বরাবরই অন্ধকার।

মৃত্যুঞ্জয় পাগড়ের স্ত্রী আদুরি পাগড়ে, দুই মেয়ে এক ছেলের বাবা-মা হলেও বর্তমানে দুই সন্তানের বাবা-মা।
উল্লেখ্য সমাজের আরেকটি রোগ , – ছেলে বড় হয়ে বিয়ে করে বাবা-মাকে দেখেনা , বউকে নিয়ে চলে যায় অন্যত্র নিমবা থাকে অন্যত্র, এখানে অবশ্য এরকম কিছু ঘটেনি, ঘটেছে আর এক মর্মান্তিক ঘটনা।
ছেলে নেই, মারা গেছে, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধার দুই মেয়ে করছে শ্বশুরবাড়িতে সংসার।
ষাট-উর্ধ্ব আদুরি পাগড়ে এবং মৃত্যুঞ্জয় পাগড়ের বাড়ি হুগলির আরামবাগের হরিণখোলার আমগ্রাম এলাকায়। একটা সময় দু’জনেই কাজ করতো অন্যের বাড়িতে , রোগের যন্ত্রণা এবং অভাবে তারনাই দুর্বল শরীরে মৃত্যুঞ্জয় পাগড়ে আর পারে না লোকের বাড়িতে কাজ করতো কিন্তু আদুরী পাগড়ে ক্যান্সার নিয়েও ক্লান্ত অবসন্ন শরীরেও কোনক্রমে অন্যের বাড়িতে যায় কাজ করতে। যদিও শরীর দিতে চায়না তবুও স্বামী-স্ত্রীর দুটো খাবারের জন্য এবং সময়ে-অসময়ে ঔষধপত্র কেনার জন্য যেতে হয় কাজে,— যদিও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় আনোয়ারা বেগমের বাড়িতে আদুরি পাগড়ে কাজ করে আর সেই বাড়ির গৃহবধূরা খুবই দয়াশীল তাই তেমন কিছু জোরজবস্তি করিয়ে কাজ করাই না বরঞ্চ এই চরম দুঃসময়ে তারাই আদুরি এবং মৃত্যুঞ্জয়ের পরম আত্মীয় হয়ে উঠেছে।
একটা সময় দু’জনে ক্ষেত খামারে কাজ করেছে ফলিয়েছে ফসল যদিও অন্যের ক্ষেত খামার তবুও সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মুখে অন্নের ব্যবরস্থানের কাজে লিপ্ত থেকেছে অথচ সেই মানুষগুলি আজ অভাব-অনাটনের এবং দুরারোগ্য ক্যান্সারের মতো রোগে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে তখন সমাজের এবং সরকার বাহাদুরের সার্চলাইট পরবে না তাদের উপর, বাড়িয়ে দেবে না সাহায্যের হাত।
এখানে উল্লেখ্য হয়তো এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা ১০০০ করে ২ হাজার টাকা প্রতি মাসে পাচ্ছেন কিন্তু সেই টাকায় কি ক্যান্সার আক্রান্ত এক বধূর এবং তার দুয়ারোগ্য স্বামীর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট , এ প্রসঙ্গে কি বলছেন সমাজের সর্বস্তরের মধ্যমনিরা ?
প্রশ্ন থাকছে সবার কাছে , উত্তর দেবে কি ভবিষ্যৎ ? অপেক্ষা – অপেক্ষা, – আর অপেক্ষা —