বালুরঘাট-দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা :- শতাব্দী প্রাচীন বালুরঘাটের প্রসিদ্ধ বুড়ামা কালীমাতার পুজো ঘিরে ভক্তদের ভিড়। ভিড় সামাল দিতে মন্দিরে মোতায়ন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাথরের বিগ্রহে সারা বছর রুপোর মুখা থাকলেও, দীপান্বিতা উপলক্ষে পড়ানো হয়েছে স্বর্ণমুখা। স্বর্ণ অলংকারে সজ্জিত করা হয়েছে বুড়ামা কালী মাতা কে। এই মুহূর্তে দলে দলে ভক্ত আসছেন দর্শন এবং পুজো দিতে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শতাব্দী প্রাচীন কালী পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট তহবাজার এলাকার বুড়ামা কালী মাতার মন্দিরের কালী পুজো।
এখনো পুরোনো রীতি রেওয়াজ মেনেই বালুরঘাট বুড়ামাকালী মাতার পুজো হয়। তবে কাল স্রোতে ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে পুজোর নিয়ম রীতির কিছু পরিবর্তিত হয়েছে। শতাব্দী প্রাচীন বুড়ামা কালী মাতার পুজোকে কেন্দ্র করে দিনের পর দিন ভক্তদের ভীড় আরো বাড়ছে। এদিন সকাল থেকেই বুড়ামাকালী মাতার মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে এবং সন্ধ্যার পর থেকেই বুড়ামাকালী মাতার মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের ভিড় আরো বাড়তে থাকে। পুজোয় ভিড় সামাল দিতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বুড়ামা কালী মন্দিরে।
সারা বছর রূপার অলঙ্কারে সজ্জিত থাকলেও, কালী পুজো উপলক্ষে বুড়ামা কালী মাতাকে স্বর্ণালংকারে এদিন সাজানো হয়।
জানা যায়, কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়ামাকালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে আত্রেয়ী নদী বইতো। মন্দির সহ পুরো এলাকাটা ঘন জঙ্গল ছিল। শতাব্দীর প্রাচীন এই পুজোর সঠিক বয়স কত তা কেউ বলতে পারে না। এক তান্ত্রিক সেই সময় একটি প্রস্তর খন্ড কে বিগ্রহ রুপে পুজো শুরু করেন। পরবর্তী তে বুড়ামা কালী মাতার নিত্যপুজো শুরু হয়। শতাব্দী প্রাচীন বিগ্রহের কারণেই বুড়ামা কালী নামে পরিচিত হন দেবী। বর্তমানে বুড়ামা কালী মন্দির থেকে অনেকটা পশ্চিমে সরে গেছে আত্রেয়ী নদী। প্রথম দিকে টিনের ঘেরা দেওয়া মন্দিরে বুড়ামাকালী মাতার পুজো শুরু হয়। বর্তমানে বিশাল আকার মন্দিরের পুজিত হন বুড়ামা কালী মাতা।
জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় নাটোরের রানী ভবানী এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন নাটোরে।