নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট:- শীততাপ নিয়ন্ত্রিত দুটি বগি বাতিল করা হল বালুরঘাট থেকে দিল্লি হয়ে ভাতিন্ডা যাওয়ার ফারাক্কা এক্সপ্রেস ট্রেনের। চরম ক্ষোভ যাত্রী মহলে। রেলের খামখেয়ালিপনার বিরুদ্ধে সরব একলাখি-বালুরঘাট রেলযাত্রী কল্যান ও সমাজ উন্নয়ন সমিতি। দূরপাল্লার ট্রেনে কিভাবে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগি আচমকা তুলে নেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন। এই ট্রেনকে বালুরঘাট থেকে উঠিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে দাবি এই সমিতির। কটাক্ষ তৃণমূলের।
বালুরঘাট স্টেশন থেকে দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর সহ দক্ষিণ ভারতের যাওয়ার মত দূরপাল্লার একাধিক ট্রেনের দাবি ছিল বরাবর। গত ১৫ মার্চ নির্বাচন ঘোষনার ঠিক কয়েকঘন্টা আগে রেল একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয় মালদা-ভাতিন্ডাগামী ফারাক্কা এক্সপ্রেসটি বালুরঘাট থেকে চলাচল করবে। যেটিতে দিল্লি যাওয়া যাবে। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রককে দিয়ে তড়িঘড়ি এই বিজ্ঞপ্তি জারি করানো হয়েছিল বলে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এরমধ্যেই আবার ১৫ এপ্রিল কোনোরকম উদ্বোধন ছাড়ায় বালুরঘাট থেকে চালু হয় ওই ট্রেনটি। যেটি বালুরঘাট স্টেশন থেকে ছাড়ার সময় দেওয়া হয় বিকেল ৫ টা। সপ্তাহে প্রতিদিন চলাচল করে এটি। প্রথমদিকে ওই ট্রেনটি সময়মত এই স্টেশন থেকে ছেড়ে যেত। কিন্ত নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ওই ট্রেন সময়মত ছাড়েনা এই স্টেশন থেকে। যা নিয়েই কার্যত ক্ষোভ ছিল যাত্রীদের। এবার ওই ট্রেন থেকে তুলে নেওয়া হল একটি এসি থ্রি টায়ার এবং একটি ইকোনমিক্যাল এসি বগি। রেল সূত্রে খবর, মোট ২২ বগি নিয়ে চলাচল করে ওই ট্রেন। যার মধ্যে এসি বগি ছিল মোট ১০ টি। বাকি ১২ টি রয়েছে জেনারেল ও স্লিপার ক্লাস। কিন্ত এবার এসি করা হল ৮, স্লিপার ৬ এবং জেনারেল ৮ টি। দূরপাল্লার ট্রেনে এই এসি দুটি বগি কমানো নিয়েই ক্ষোভ। শুক্রবার এই নতুন সিদ্ধান্তেই ওই ট্রেন চলাচল করে বলে জানানো হয়েছে একলাখি-বালুরঘাট রেল যাত্রী কল্যান ও সমাজ উন্নয়ন সমিতির তরফে। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার আহবান করা হয়েছে সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের।
একলাখি বালুরঘাট রেল যাত্রী কল্যান ও সমাজ উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান স্মৃতিস্বর রায় বলেন, এই ট্রেনটিকে বালুরঘাট থেকে উঠিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে আমরা মনে করছি। বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার রেল পরিষেবা নিয়ে খামখেয়ালিপনা চলছে। আমাদের এখান থেকে চলা সবচেয়ে দূরপাল্লার ট্রেন এটি। আড়াই দিন সময় লাগে। এখানে এসসি অত্যন্ত জরুরি। আমরা আরও দুটি এসি কামরা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। উলটে কমিয়ে দেওয়া হল। বিষয়টি জানা মাত্রই রেলওয়ে কাটিহার ডিভিশনের সব মহলে চিঠি দিয়েছি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে। জেলার রেল উন্নয়নের স্বার্থে লাগাতার আন্দোলন জারি রাখছি আমরা।
অন্যদিকে, তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ চাকি জানান, এই ট্রেনটি চালুই করা হয়েছিল লোকসভা নির্বাচনের ললিপপ হিসেবে। নির্বাচন শেষ হতেই যা হওয়ার তাই হচ্ছে। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।বালুরঘাট একলক্ষি উন্নয়ন কমিটির স্মপাদক পিযুস কান্তি দেব জানান,রেল দপ্তর ভাতিন্ডা রেল সহ শিলিগুড়ি ট্রেন নিয়ে জেলাবাসিকে নানান ভাবে বঞ্চিত করছে। এনিয়ে খুব শিঘ্রই আন্দলোনে নামব।