দীর্ঘ প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মানিকচকের মথুরাপুর অঞ্চলে এই রক্ষাকালী পুজো একই মতো হয়ে আসছে।

0
9

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- দীর্ঘ প্রায় ৩৫০ বছর ধরে মানিকচকের মথুরাপুর অঞ্চলে এই রক্ষাকালী পুজো একই মতো হয়ে আসছে। পূজার সূচনা প্রসঙ্গে জানাযায়,প্রায় ৩৫০ বছর আগে গোটা মানিকচক জুড়ে কলেরা রোগের মহামারী দেখা দিয়েছিলো।বহু মানুষ একের পর এক প্রাণ হারাচ্ছিলেন।রোগ প্রতিরোধের পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না মানিকচকবাসী।সেসময় মথুরাপুর অঞ্চলের সরকার পাড়াই এক অজ্ঞাত সাধুবাবা বটতলায় ধ্যান করতেন।তখন ওই সাধু এলাকাবাসীকে কলেরা মহামারী থেকে বাঁচতে মা রক্ষার আরোধনার পরামর্শ দেন।তারপর থেকে মথুরাপুরবাসী যৌথ হয়ে মা রক্ষাকালীর পুজো আরম্ভ করে।এলাকাবাসীর বিশ্বাস এই পুজো শুরুর পর থেকে আর এলাকায় কলেরার দেখা পাওয়া যায়নি।সেই থেকে শুরু পুজো যা এখনো একই মতো হয়ে আসছে। মঙ্গলবার আনন্দে মাতবে গোটা মানিকচক বাসি।

পুজো পরিচালন কমিটি আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রতিবছর শীতের শুরুতে কৃষ্ণ পক্ষে মায়ের পুজোর আয়োজন করা হয়।বর্তমানে মায়ের স্থাপিত বিশাল মন্দির রয়েছে। তবে এই পুজোয় মায়ের কিছু বিশেষ নিয়ম রীতি রয়েছে।মায়ের প্রতিমার উচ্চতা ৩ ফুট।পুজোর দিন সকালে সূর্যোদয়ের পর মায়ের প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু হয় এবং সূর্যাস্তের আগে বানানো শেষ করা হয়।কাঁচা অবস্থাতেই মায়ের পুজো হয়।পুজো শুরুর সময় থেকে মায়ের প্রতিমা বানিয়ে আসছে স্থানীয় বসাক পরিবারের সদস্যরা।বংশ পরম্পরায় বসাক পরিবারের সদস্য জিতেন বসাক বর্তমানে প্রতিমা বানাচ্ছে।তিনি কর্মসূত্রে কলকাতায় সহপরিবার বসবাস করেন।কিন্তু , মায়ের প্রতিমা বানানোর জন্য সমস্ত কাজ ফেলে গ্রামের বাড়ি ফিরে আসে।অর্থের জন্য নয়,মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেই।মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মায়ের পুজো আরম্ভ হবে,যা সারারাত ব্যাপী চলবে এবং ভোরের কাক ডাকার আগেই মায়ের প্রতিমা পাশের ফুলাহার নদীতে নিরঞ্জন করা হয়।পুজোর সারারাত বলি প্রথা চলে।প্রায় প্রতিবছর ১৫০০ বেশি পাঠা বলি হয়।তবে পাঠাবলির বিশেষ নিয়ম রয়েছে, প্রতি মিনিটে ৫ টি বলি হয়।তবে পিছিয়ে নেই মুসলিম সম্প্রদায়।মুসলিম সম্প্রদাযের মানুষ নিজেদের মানোত শোধ করে মায়ের চরণে দান ও পাঠা দেন,তবে সমস্তটাই গুপ্ত ভাবে।এক রাতের এই পুজোয় সারা মানিকচকবাসী মত্ত থাকেন।মায়ের মন্দিরের পাশে আম বাগানে বিশাল জাকজমক মেলা বসে।মায়ের দর্শনে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ এক রাতে জমায়েত হয় মন্দির চত্বরে।পুজো কমিটির মতে পুলিশ প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এই পুজোয় তাই শান্তিপূর্ণ ভাবে পরিচালনা করতে অনেকটা সুবিধে হয়।