নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, বালুরঘাট, ১০ ডিসেম্বর ——- বালুরঘাটের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটনা এলাকায় ইটভাটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর দুর্ঘটনা। মন্ডল ব্রিকস নামে ওই ইটভাটার অগ্নিসংযোগের সময় আগুন ছড়িয়ে দগ্ধ হলেন পাঁচজন। যাদের মধ্যে দুজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠেছে ইটভাটার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে, অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিরও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ডল ব্রিকস নামে ওই ইটভাটার উদ্বোধনী উপলক্ষে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। যেখানে শুধু কর্মীরাই নয়, আশপাশের গ্রামের কয়েকশো মানুষও সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন। যেখানে অগ্নিসংযোগের সময় আচমকা আগুন উলটো দিকে ছড়িয়ে পড়লে পাঁচজন ঝলসে যান। যাদের মধ্যে একজন ভাটার গাড়ি চালকও রয়েছে। ঘটনার পর হুড়োহুড়িতে আহত হয়েছেন আরও বেশকয়েকজন।যে দুর্ঘটনার পর কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগও তুলেছে আহতদের পরিবার। তাঁদের দাবি, এত বড় দুর্ঘটনার পরও কর্তৃপক্ষ সেভাবে তৎপর হয়নি। এক আহতের আত্মীয় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, “অগ্নিসংযোগের মতো বিপজ্জনক কাজে কেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না? এত মানুষের সামনে এই ঘটনা কীভাবে ঘটল?”
আহতর স্ত্রী ক্ষিরো পাহান বলেন, তারা আমন্ত্রিত হয়ে ইটভাটায় গিয়েই এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ঘটনার পর মালিক পক্ষের সেভাবে কোন সহায়তা মেলেনি।
যদিও এনিয়ে ইটভাটার মালিকপক্ষের তরফে সৌরভ কর্মকার দাবি করেছে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়রা অগ্নিসংযোগ স্থলের কাছে চলে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যেই কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে জোর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা। তিনি জানান, “ফায়ার ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কোনও ইটভাটা চালানো যায় না। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, এমন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার গাফিলতি অমার্জনীয়। প্রাথমিক তদন্তে প্রশাসন জানতে পেরেছে, ভাটার আশপাশে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বলয় ছিল না। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা ও ভাটার মালিকের দায় নিয়ে যথেষ্টই প্রশ্ন তুলেছেন কাটনার বাসিন্দারা। যার তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের দিকেই তাকিয়ে এখন গোটা এলাকা।