নন্দকুমার, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ – পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নন্দকুমারের তাড়াগেড়্যা গ্রামের ভীম পুজো। শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথিতে শুরু হয় ভীম পুজো। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শনিবার নন্দকুমার থানার অন্তর্গত ব্যবত্তারহাট তাড়াগেড়্যা ঐতিহ্যবাহী ভীম মেলার শুভ আরম্ভ হয়েছে। রাঢ়বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভীম পুজোর প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। ভীম পুজোর ইতিহাস নিয়ে দু’ধরনের মতবাদ পাওয়া যায়। একটি হল মহাভারতের পঞ্চপান্ডব কে ঘিরে কাহিনী অন্যটি এক প্রভাবশালী রাজা ভীমকে ঘিরে। কথিত আছে পান্ডবদের অজ্ঞাতবাস কালে বর্তমান মেদিনীপুর শহরের গোপগড়ে পাণ্ডবরা বসবাস করেছিলেন বিরাট রাজার গোশালায়। পাণ্ডবরা এই অঞ্চলে বসবাস করায় প্রবল পরাক্রমশালী দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমের পরিচয় পায় সাধারণ মানুষেরা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভীম সাধারণ মানুষের বিভিন্ন বিপদে রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। ভীমের মহিমায় মহিমান্বিত হয়। ভীমকে দেবতার ন্যায় পুজো শুরু করেন। ওপর একটি লোক প্রচলিত কাহিনী হল, রাঢ়বঙ্গের চন্দ্রবংশীয় প্রবল পরাক্রমশালী রাজা ছিলেন ভীম। ভীম পুজো শুরু নিয়ে একাধিক মতবাদ থাকলেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাশাপাশি ব্লক তমলুক নন্দকুমারে দুটি ঐতিহ্যশালী ভীম পুজো হয়ে আসছে বহুকাল ধরে। নন্দকুমার ব্লক এর তাড়াগেড়্যা গ্রামের ভীম মেলাটি ৩৫৪ বছর ধরে চলছে বলে জানিয়েছেন গ্রাম কমিটির সম্পাদক গোপাল চন্দ্র গুড়িয়া ও সভাপতি অরুন ব্যানার্জি।
ভীম জীউর মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট এর বেশি।মূল ভীম মন্দিরটি প্রায় ৫ ডেসিমল জায়গার উপর ১ কোটি টাকা খরচ হয় নির্মিত হয়েছে। প্রতিবছর রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তরা তাদের মানত করা টাকার মালা ভীমের গলায় দান করেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে এসে উপস্থিত হন ।প্রতি বছর সেই টাকার পরিমাণ ২০থেকে ৩০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়। মেলা চালাতে প্রায় খরচ হবে ১৬ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে জেলা গোপালচন্দ্র গুড়িয়া জানান, লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় ভীম মন্দিরে। টাকার মালা বাতাসের মালা দিয়ে মানতের পুজো সারেন বহু মানুষ। মেলা চলে এগারো দিন।’ কয়েক লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ভক্তদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে শৌচালয় ও স্নানাগার নির্মিত হয়েছে।
৩৫৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী নন্দকুমারের ভীম পুজো শুরু হয়েছে।

Leave a Reply