নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি,২৬শে আগষ্ট:-
সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শুক্রবার দুপুরে শিক্ষক ভবনে এবিপিটিএ হলে জেলা সাংগঠনিক কনভেনশন সংগঠিত হয়। কনভেনশনের সভাপতিত্ব করেন সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মোক্তাল হোসেন, সংগঠনের ৭ বছরের চলার পথ এবং আগামী দিনের সাংগঠনিক পরিকাঠামো বৃদ্ধির লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সংগঠন বিস্তারের লক্ষ্যে সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক হরিহর রায় বাসুনিয়া। সম্পাদক তার সাংগঠনিক প্রতিবেদনে তুলে ধরে গোটা দেশ তথা রাজ্যের সাথে যেভাবে কৃষি জমি দিনে দিনে বিভক্ত হচ্ছে মানুষ কৃষিতে অর্থ উপার্জন করতে না পেরে জমি অন্যের মাধ্যমে চাষ করিয়ে কৃষির পাশাপাশি বিকল্প পেশার সাথে যুক্ত হচ্ছে, শহর ও শহর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক কাজের নিশ্চয়তা না পেয়ে স্বল্প সময়ের কৃষি শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে ফলতো সংখ্যার বিচারে প্রতি বছর খেতমজুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্যি কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের প্রলোভনে অনেক গরিব মানুষ সাময়িক লাভের আশায় তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। লকডাউনের সময় আমরা প্রথম জানতে পেরেছি, গোটা রাজ্যের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক রাজ্যে কাজ না থাকার কারণে দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরে অসংখ্য সংগঠিত শ্রমিক হিসাবে সামান্য মজুরির আশায় দিনের পর দিন পড়ে আছেন। এই সমস্ত অসংগঠিত শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর কাজ বামপন্থীরাই করেছে সরকার কোন দায়িত্ব নেয়নি।
শুধু কৃষি শ্রমিক নয় এক বিরাট অংশের অপসংগঠিত শ্রমিকদের সাথে এখনো যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি সাংগঠনিক পরিকাঠামোর অভাবে। সাংগঠনিক কনভেনশনের প্রধান বক্তা হিসেবে আলোচনা করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ।
তুষার ঘোষ তার আলোচনায় বলেন এবছরের শেষে বা সামনের বছর শুরুতে সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সম্মেলন এ রাজ্যে সংগঠিত করার ভাবনা চলছে তার আগে অঞ্চল কমিটি থেকে শুরু করে ব্লক কমিটি জেলা কমিটি রাজ্য কমিটির সম্মেলন সংগঠিত করতে হবে। বামপন্থীদের আন্দোলনের ফসল ১০০ দিনের কাজ পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ হয়ে রয়েছে। যারা কাজ করেছেন তারা বকেয়া মজুরি পাচ্ছেন না নতুন কাজের কোন অ্যালটমেন্ট হচ্ছে না গোটা রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। আবাস যোজনার ঘর নিয়ে গোটা রাজ্যে বিরাট দুর্নীতি হয়েছে, ইতিমধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে গ্রামের মানুষের এই সমস্ত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময় বামপন্থীদের শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে চোর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদিন মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে, আগামী দিনে পঞ্চায়েত সমিতির জেলা পরিষদ অভিযান করবে গ্রামের গরীব মানুষ। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক কনভেনশন থেকে আগামী দিনে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলা ডাক দেন রাজ্য সভাপতি।
কনভেনশনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত কৃষক সভার নেতৃত্ব সলিল আচার্য, সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের নেতৃত্ব সমিজ উদ্দিন আহমেদ, কৌশিক ভট্টাচার্য, মানিক চক্রবর্তী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। গোটা জেলার শতাধিক নেতৃত্ব সংগঠকদের নিয়ে কনভেনশন থেকে আগামী দিনে জেলা জুড়ে গরিব মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।