সেখ ওলি মহম্মদ, দুবরাজপুরঃ- আগে যা ছিল বর্তমানে সমস্ত কিছু আছে। কিন্তু তবুও আগের মতো সেই জৌলুসতা নেই। বিশ্বকর্মা পুজোয় জৌলুসতা হারিয়েছে বীরভূম জেলার দুবরাজপুর বিধানসভার খয়রাশোল ব্লকের পাঁচড়ার ময়ূরাক্ষী কটন মিলের বিশ্বকর্মা পুজো। এই কটন মিলের প্রতিষ্ঠাতা বীরভূম জেলার ভবানীপুরের বাসিন্দা শান্তি রায়। তিনি প্রথমে কল্যাণীতে একটি স্পিলিং মিল তৈরি করেছিলেন। তারপর ভাবলেন যে বীরভূমেরই তিনি বাসিন্দা তাই এখানে একটি কটন মিল তৈরি করা যাক। সেই মতো তিনি এখানে একটি মিল তৈরি করেন। কিন্তু এই কটন মিল ঠিক ঠাক চলার পর রুগন্ অবস্থায় পরিণত হয়। ফলে এই মিল ১৯৯০ সালে তৎকালীন বামফ্রণ্ট সরকার অধিগ্রহন করে। আগে শ্রমিকদের মধ্যে ভালো উদ্যম ছিল বিশ্বকর্মা পুজোয়। তখন আনুমানিক ৭৫০-৮০০ জন কর্মী কাজ করতেন। তাঁরাই চাঁদা তুলে জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে এই পুজোর আয়োজন করতেন। কিন্তু বর্তমানে কর্মীর অভাবে এই কটন মিলের রুগন্ অবস্থা। আগে এখানে ছয় হাজার কেজি সুতো উৎপাদন হত। কিন্তু এখন ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি সুতো উৎপাদন হয়। তাই এখন সরকারী হিসেবে কর্মী রয়েছেন ১০৮ জন এবং অস্থায়ী ৯৪ জন কর্মী রয়েছেন। তাছাড়াও করোনা অতিমারীর জন্য বিগত দু’বছর সেভাবে পুজো করা হইনি। তবে আগেকার মতো জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে বিশ্বকর্মা পুজো নাহলেও ছোট্ট করে পুজো হচ্ছে ময়ূরাক্ষী কটন মিলে। আজকের দিনে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই মিল। এদিন এখানে বসে একবেলার মেলা। প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে। ময়ূরাক্ষী কটন মিলের স্টোর ইনচার্জ পার্থ দে জানান, আগে শ্রমিকদের মধ্যে উদ্যম ছিল এই পুজো করার। এমনকী তাঁরা চাঁদা তুলে বিশ্বকর্মা জাঁকজমক ভাবে করত। এখন তো প্রোডাকশন কমে গেছে। কিন্তু আগে এই মিলে ভালো প্রোডাকশন হত তাই পার্টিরাও ভালো চাঁদা দিত। কিন্তু এখন সেরকম আর কিছু নেই। তাই জৌলুসতা হারিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পাঁচড়া কটন মিলের আইএনটিটিইউসির সেক্রেটারী তরুন গড়াই জানান, এই মিল ১৯৬৭ সালে শান্তি রায় তৈরি করেছিলেন। তারপর ১৯৯০ সালে তৎকালীন বামফ্রণ্ট সরকার অধিগ্রহন করে। কিন্তু আগের তুলনায় এখন কর্মী সংখ্যা যেমন কমে গিয়েছে তেমনি উৎপাদনও কমে গিয়েছে। আগে ৭৫০-৮০০ জন কর্মী কাজ করতেন বলে বিশ্বকর্মা পুজো ধুমধাম করে হত। কিন্তু এখন কর্মী সংখ্যা কমে যাওয়ায় ছোট্ট করে পুজো হয়। এক কথায় বলা যায় জৌলুসতা হারিয়েছে।