রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণে উপকৃত বীরভূম নিবাসী পশুপালক তোতন মন্ডল।

0
3563

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বীরভূম জেলার লাভপুর ব্লকের অন্তর্গত কাশিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা তোতন মন্ডল (৪৮) এলাকায় একজন সফল পশুপালক হিসেবে পরিচিত মুখ। তোতন বাবুর প্রাণিপালনের অভিজ্ঞতা দীর্ঘ ২২ বছরের, যদিও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার আগে মূলতঃ প্রথাগত পদ্ধতিতেই পশুপালন করতেন। সাত সদস্য বিশিষ্ট যৌথ পরিবারটির জীবন জীবিকা সম্পূর্ণ ভাবেই বাণিজ্যিক পশু খামারের উপরেই নির্ভরশীল। বর্তমানে তোতন বাবুর ১৫টি ছাগল, ২৫ টি গরু, যার মধ্যে গাভী রয়েছে ১৫টি এবং বাছুরের সংখ্যা ১০টি।
তোতন বাবু রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন সম্পর্কে জানতে পারেন ২০২০ সালে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মাধ্যমে। পরবর্তী কালে পরিচয় ঘটে ফাউন্ডেশনের জেলা প্রতিনিধি মৃনাল কান্তি মন্ডলের কাছ থেকে টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০৪১৯৮৮০০ এবং জীবিকা বিকাশ কার্যক্রমের অন্যান্য পরিষেবা সম্পর্কে অবহিত হন। প্ৰয়োজনমতো হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে প্রাণী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুদের সাথে কথা বলে তথ্যের আদান প্রদান করতে থাকেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে তোতন বাবুর গরুর দুধের পরিমান আচমকাই কমতে থাকে এবং দুধের গুণমান এরও সমস্যা দেখা দেয়। সেই সময় তার গরু গুলোর ৭৫ কেজি দুধ হয় অথাৎ ৪৫ কেজি দুধ কমে যায়। এরপর ফাউন্ডেশনের জেলা প্রতিনিধির উদ্যোগে ৭ই ফেবরুয়ারি ২০২২ তারিখে ভারচুয়াল প্রোগামে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের ভেটেনারি ডাক্তার এর কাছে সমস্যার কথা জানালে তিনি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও নির্দিষ্ট গো-খাদ্যের সুপারিশ করেন। তোতন বাবু সুপারিশ গুলি মানার এক সপ্তাহের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। এখন তার গরু গুলোর প্রায় ১২০ কেজি দুধ হয়। বর্তমানে স্থানীয় ডেয়ারিতে গড়ে দৈনিক ৫০-কেজি দুধ বিক্রি করছেন ৫০/- কেজি দরে এবং বাজারে সরাসরি বিক্রি করছেন দৈনিক ২৫-কেজি দুধ ৪০/- কেজি দরে। বাকি ৪৫ কেজি দুধ থেকে ১২ কেজি ছানা হিসেবে পেতো এবং ২০০ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করতো।মোট দুধ বিক্রি করে উনার ৫৯০০ টাকা আয় হয়।যেখানে তার খরচ হয় প্রতিদিন ৪৬৫০ টাকা। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশের সহায়তায় প্রতিদিন ৪৫ কেজি দুধের উৎপাদন বাড়িয়েছেন এবং যার ফলে তিনি প্রতিদিন প্রায় ১২৫০ টাকা করে লাভের মুখ দেখতে পান।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণে উপকৃত তোতন মন্ডল আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন “পশুপালনই আমাদের পরিবারের মূল জীবিকা, যখন দুধের পরিমান কমতে থাকে তখন খুবই চিন্তায় ছিলাম, কারণ আমাদের পক্ষে দূরবর্তী পশু হাসপাতালে গিয়ে সব সময় চিকৎিসা পাওয়া সবসময় সম্ভব হয় না। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা এখন হাতের মুঠোয় আধুনিক প্রাণী পালনের বিষয়গুলি করায়ত্ত করতে পারছি “।
এভাবেই গ্রাম বাংলার কোনায় কোনায় কৃষিজীবী ও প্রাণী পালকদের কাছে জীবিকা বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ।