রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর ডিজিটাল ফার্ম স্কুল থেকে উপকৃত সুন্দরবন নিবাসী কৃষক।

0
1065

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- প্রশান্ত গিরি (৪৮), দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলী ব্লকের বৈকন্ঠপুর গ্রামের কৃষক এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর ডিজিটাল ফার্ম স্কুল এর একজন সক্রিয় সদস্য। এই অঞ্চলটি ভীষণভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকা, বিগত ইয়াস, আম্প্যানের মতো দুর্যোগে এলাকার চাষের খুবই ক্ষতি হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ার জন্য মাটিতে নোনা জল প্রবেশ করে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করেছে, যা আঘাত করেছে মানুষের জীবন জীবিকার উপর। প্রশান্ত বাবু রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর সাথে বিগত চার বছর ধরে যুক্ত। মূল জীবিকা ধান ও সবজি চাষ।
সম্প্রতি মে ২০২২ সালে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ধান চাষের সাথে যুক্ত কৃষক দের নিয়ে এই অঞ্চলে একটি “ডিজিটাল ফার্ম স্কুল” শীর্ষক একটি অভিনব প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পে বর্তমানে বৈকন্ঠপুর ও তার পার্শ্ববর্তী গ্রামের প্রায় ১০০ জন ধান চাষী এই প্রকল্পে যুক্ত। মূলতঃ জৈব ও আধুনিক কৃষি পদ্ধতির সাথে কৃষককে দক্ষ করে তুলে তাঁর রোজগার বাড়ানোই মূল লক্ষ্য। বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্ত আছেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ও কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী। বিগত মরশুমে গোবিন্দ বাবু এই ফার্ম স্কুল থেকে ধান চাষের উদ্ভাবনী বিষয়গুলি রপ্ত করে প্রায় দুই বিঘা জমিতে এই জেলার বিখ্যাত বর্ষাকালীন দুধেশ্বর ধান চাষ করেছেন। ফার্ম স্কুল এর শিক্ষা ছাড়াও হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ থেকেও প্রয়োজনমতো তথ্য আদানপ্রদান করে নিজের দক্ষতাই শুধু বাড়ান নি, ধান চাষকে করে তুলেছেন লাভজনক। পাশাপাশি মাটি পরীক্ষা করে মার্টির স্বাস্থ্য অনুসারে সার প্রয়োগ করে বাড়িয়েছেন উৎপাদন, বেড়েছে মাটির উর্বরতা শক্তি। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে ধান চাষ করে আগের বছরের থেকে এবছর উৎপাদন ১৬ বস্তা থেকে ২০ বস্তা (প্রতি বস্তা ৫৬ কেজি) হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য বস্তা প্রতি ৯৫০/- টাকা। শুধু তাই নয়, এই ডিজিটাল ফার্ম স্কুল থেকেই কৃষকরা জৈব চাষের বিষয়গুলিও রপ্ত করে ধীরে ধীরে ঝুঁকছেন জৈব চাষের দিকে, কারণ তাঁরা আজ বুঝতে পেরেছে জৈব চাষিই পারে মাটির লবনাক্ত ভাব কমিয়ে পূর্বাবস্থা ফেরাতে। পাশাপাশি অনেক কৃষক মালচিং পদ্ধতি এবং নদীর পাড়ের উঁচু জায়গায় সবজি চাষ করেও বিকল্প কৃষির সংস্থান করে বাড়াতে পারছে লাভের পরিমান। এভাবেই প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের প্রকৃত অর্থেই কৃষক বন্ধু রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন।