পশ্চিমবঙ্গে কোন ঘটনা ঘটলে এই সরকার সামলাতে পারেনা, তার তদন্ত করতে পারে না, দোষীদের সাজা দিতে পারে না চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে : দিলীপ ঘোষ।

0
390

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা,৮এপ্রিলঃ—দুই দিনের মোর্চার প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে মালদায় আসেন দিলীপ ঘোষ। এদিন মালদে ঠাউন স্টেশনে —

রাজ্যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম আসা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন—

পশ্চিমবঙ্গে কোন ঘটনা ঘটলে এই সরকার সামলাতে পারেনা, তার তদন্ত করতে পারে না। দোষীদের সাজা দিতে পারে না চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। স্বাভাবিক ভাবে মানুষের ডিমান্ড থাকে সত্য উদঘাটন হোক। তাই বারবার চিঠি লেখা হয় হ,আবেদন করা হয়। আর প্রায়ই ঘটনাতেই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম আসে। যেহেতু এত বড় ঘটনা ঘটেছে সারা দেশে সারা বিশ্বে আলোচনা হচ্ছে। বিজেপির মনে হয়েছে এর সত্য জানার দরকার আছে। কারণ রিপোর্ট সময় মত আসে না। তাই তারা আসবেন যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

সরকারি কর্মচারীরা বলেছেন এই রাজ্যে উৎসব করতে হলে সেন্ট্রাল টিম দিয়ে করতে হয়। ভোটে যদি কেন্দ্রীয় টিম না থাকে তাহলে তারা ভোট করতে যাবেন না।—

এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একজন মাস্টারমশাই রায়গঞ্জে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কি করে মারা গেল কেউ জানতে পারলো না দোষীরা সাজা পেয়েছে কিনা আমরা বলতে পারব না। তো সরকারি কর্মচারীরায় ভোটটা পরিচালনা করেন। যদি তাদের জীবনে সুরক্ষা না থাকে তবে তারা কি করে ভোট দিতে যাবেন। ভোটেরাই ভোট দিতে পারেন না,নমিনেশন করতে দেওয়া হয় না। তাই টেনশনের মধ্যে নির্বাচন করতে যাওয়াটা খুব রিস্কি। সেই জন্য তারা চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এটা ঠিক যে উৎসব,পরব,বিশেষ করে হিন্দুদের কিছু উৎসব হলেই ইচ্ছে করে গন্ডগোল করা হয়। যাতে পরবর্তীকালে পারমিশন দেওয়া না হয়। ধীরে ধীরে মেলা,উৎসব,পরব বন্ধই হয়ে যাবে এখানে। এটা বোধহয় এই সরকারের একটা চক্রান্ত। তাই এইভাবে রাজনৈতিক লাভ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আজকে এখানে এসছি মোর্চার প্রশিক্ষণ শিবির আছে সেখানে যোগ দিতে আমি মালদায় এসেছি। সেই উপলক্ষে আমি তিনটি জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম নেব। মালদা উত্তর,দক্ষিণ ও দক্ষিণ দিনাজপুর।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন—

বাংলায় এইরকমই হয়। কিভাবে নির্বাচন হবে সরকার কিভাবে নির্বাচন করবে তার ওপর নির্ভর করছে। আমরা আমাদের মত প্রস্তুতি ঠিক করে রেখেছি।এরপর তিনি মালদহের এক বেসরকারী হোটেলে ওঠেন। সেখানেই এই প্রশিক্ষন শিবিরে যোগদেন।
এরপর মালদহে দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান,

সুকন্যা মণ্ডলকে দিল্লিতে চলক প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন—

এই তরফ চলতে থাকবে যতক্ষণ না ওরা সহযোগিতা করবে। এরপর পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। ওর বাবা দশবার ঢাকার পর গিয়েছিলেন। ইনিও হয়তো ১০-১২ বার অপেক্ষা করছেন। তবে যেতে একদিন হবেই। যদি উনি নির্দোষ হন তবে সেটাও তিনি বলতে পারেন তথ্য প্রমাণ দিয়ে। আর যদি কিছু গন্ডগোল করে থাকেন তাহলে তার সাজা ভুগতে হবে।

ডিএ আন্দোলনকারীদের দিল্লি যাত্রা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন—

যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা এই সরকারকে চালাচ্ছেন তারা যখন আন্দোলনে বসেন সরকার গুরুত্ব দেয়নি। তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন। বা কোন একটা পার্টির লোক বলে ছাপ্পা মেরে দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তারা তাদের আন্দোলনের গতিকে বাড়িয়েছেন। অন্যান্য সরকারি কর্মচারী তারাও বুঝতে পেরেছেন। অনেকে বোঝায় সদস্য পদ ও ছেড়ে দিয়েছে। কারণ এটা তাদের ন্যায্য দাবি। সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি না দিয়ে। তাদের কুকুর ছাগল বলেছেন। তাই তাদের জেদ চেপেছে তারা আন্দোলন করেই যাচ্ছে। আমাদেরও তাদের প্রতি নৈতিক সমর্থন আছে। মমতা ব্যানার্জি যদি কেন্দ্রের টাকার জন্য ঝর্ণা দিতে পারেন। তাহলে তারা ডিয়ের জন্য ধর্না দিতে পারেন।
*কুর্মি আন্দোলন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন*, প্রতিটি সমাজ নিজেদের জন্য আন্দোলন করছেন। উনারাও আন্দোলন করছেন। তাদের জাতিগত রিজার্ভেশনের জন্য আন্দোলন করছে। দেশে একটা কমিটি আছে ব্যবস্থা আছে সেখানে আপিল করা তথ্য প্রমাণ দেওয়া উচিত। তারা যদি মনে করে পাওয়ার যোগ্য তাহলে অবশ্যই দেবে।

কলকাতা কর্পোরেশনের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন—

দুর্নীতি তো হচ্ছে সবাই জানে। আগে কেউ অভিযোগ করতো না এখন অভিযোগ করতে আরম্ভ করেছে। মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন মাছ মাংস খাওবেন কিন্তু সাপ খাওয়াচ্ছেন। টিকটিকি খাওয়াচ্ছেন। এই অধিকার কে দিয়েছেন। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টের দুর্নীতি হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে টাকা আসছে কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে না। কিছু কিছু জানা যাচ্ছে নেতাদের বাড়ি গাড়ি দেখে বোঝা যাচ্ছে। হিসেব দিতে পারছেন না কারণ টাকা অবৈধ ভাবে খরচ হয়ে যাচ্ছে। টাকার জন্য আন্দোলন করছেন চেঁচামেচি করছেন। ধর্না দিচ্ছেন তাতে কিছু হবে না। টাকা নিন খরচা করুন হিসেব দিন।

কলকাতা কর্পোরেশনের পার্কিং ফি প্রত্যাহার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন—

মমতা ব্যানার্জি উপার্জন বাড়াতে চাই না। জি এস টি তে ১৩ নম্বরে আছে ওয়েস্ট বেঙ্গল কেন? কারণ কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, ব্যবসা নেই। তাই টাকা যদি উপার্জন করতে হয় ট্যাক্স বাড়াতে হবে। হয়তো সেই জন্য ফিরহাদ হাকিম ভেবেছিলেন আমি পার্কিং ফ্রি বাড়ায়। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি ইনকাম বাড়াবেন না খরচা বাড়াবেন কেন্দ্রের টাকায় ফুর্তি করবেন। তাই ওটা বন্ধ করেছেন। এই সরকারের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। কোন বার্তা নেই । কেবল আন্দোলন করতে ব্যস্ত। প্রশাসনে মন নেই। তাই এই ঘটনা ঘটেছে।

দক্ষিণ দিনাজপুরের দণ্ডীকাটা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন—

নিন্দনীয় অমানবিক ঘটনা। যে আদিবাসী মহিলাদেরকে টিএমসি তে যোগদানের জন্য দন্ডী কাটতে বাধ্য করা হচ্ছে এক কিলোমিটার। এই সভ্য সমাজের এটা মেনে নেওয়া যায় না। টিএমসি এবং মমতা ব্যানার্জি বারবার বলছেন, আমরা আদিবাসীদের সঙ্গে আছি মহিলাদের সঙ্গে আছি। তাদের টিএমসিতে আসার জন্য কাটতে হবে কেন। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। আপনি অর্জুন সিংহ, রাজীব ব্যানার্জিকে দন্ডি কাটান‌ নি।তারা তো বিজেপিতে এসেছিল তৃণমূলে চলে গেছে। গরিব বলেই কি আদিবাসী মহিলাদের দন্ডি কাটাতে হবে। এই চোখে তারা মহিলাদের দেখে আদিবাসীদের দেখে। এতে প্রমাণ হয়ে গেল এরা কি চান। এটা একটা অমানবিক পার্টি। মহিলা বিরোধী,আদিবাসী বিরোধী, দলিত বিরোধী।

জাল নোট এবং মাদক পাচার নিয়ে দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া–

মালদার কালিয়াচক এলাকা দিয়ে জাল নোট এবং মাদক সবচেয়ে বেশি আসে। করিডর এটা? বন্ধ কেন হচ্ছে না। ওখানে রাস্তা তৈরি করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার জন্য অনেক লড়াই হচ্ছে। রাজ্য সরকার যদি না চায় এটা বন্ধ হবে না। হয়তো এদের লোকেরাই যুক্ত আছে। তার থেকে পার্টি উপকৃত হচ্ছে তাই। এর জন্য কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয় সারা ভারতবর্ষের সুরক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই এটা বন্ধ করা উচিত। কেন্দ্রের সাথে কথা বলা উচিত।সহযোগিতা চাওয়া উচিত।