বালুরঘাট, নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজ্যপাল হলো তার নিয়োগ কর্তা, অথচ তার ডাকে দুই দুই বার কোন কারন দর্শনো ছাড়াই রাজভবনে না গেলে রাজ্যপাল তার এক্তিয়ার অনুযায়ী কাজ করবেন। এটাই স্বাভাবিক, তা ছাড়া এক্ষেত্রে হাইকোর্ট ও তাকে ভৎসনা করে বলেছে না পারলে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দেবার কথা, তাই এক্ষেত্রে রাজ্যপাল তার এক্তিয়ার প্রয়োগ করেছেন। আজ বালুরঘাটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি এরপরে রাজীব সিনহার আজ পদত্যাগ করতে পারে এই নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অন্দরে ওঠা গুঞ্জন প্রসংগে এক প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত জানান বিষয়টি একদম তার নিজস্ব ব্যাপার, যদি সে পদত্যাগ করে তবে রাজ্যপাল তার সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী পরবর্তী কমিশনার নিয়োগ করতে পারেন। এছাড়াও হাইকোর্টের নির্দেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০১৩ চেয়ে ডাবল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ প্রসংগে বলতে গিয়ে সুকান্ত বলেন হাইকোর্টের নির্দেশ তিনি কেন আমরা সবাই মানতে বাধ্য। সেই মত তিনিও তাই করতে বাধ্য হবেন। তারপরে হয়তো মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঝামটা খাবেন কিনা সেটা তিনি বুঝবেন। এর পাশাপাশি রাজ্যপাল ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই দড়ি টানাটানির মধ্যে পড়ে কি রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশংকা রয়েছে ।এই প্রশ্নের উত্তরে সুকান্তর দাবি এরকম কোন সম্ভবনা নেই বললেই চলে কেননা ভোট ঘোষনা হয়ে গেছে, প্রার্থীরা নমিনেশন জমা দিয়ে দিয়েছে, সুতরাং এই মুহুর্তে ভোট পেছনোর সম্ভবনা নেই বললেই মনে হয় আমার, বলে তিনি জানান।
অপরদিকে ইসলামপুরের বিক্ষুদ্ধ আবদুল করিম ও তৃনমুলের আরেক বিক্ষুদ্ধ বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী তাদের দল টিকিট না দেওয়া সম্বন্ধে এক প্রশ্নের উত্তরে বলতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, আমি তো আগেই বলেছিলাম যত ভোট এগিয়ে আসবে ততই তৃনমুলের মধ্যে নব্য ও আদী নেতাদের মধ্যে গোষ্টীদ্বন্দ বাড়বে। তাছাড়া এখন তো ভাইপো তৃনমুল যত সব বড় বড় চোর ডাকাতদের নিয়ে দল চলছে।তাই স্বাভাবিক ভাবে এসব পুরনোরা পাত্তা পাবেন না। এই দলে এগুলো নতুন কিছু নয় বলেই মন্তব্য তার।
এই ভোটে বামেদের প্রচার ও প্রার্থী দেওয়া নিয়ে উত্থান প্রসংগে বলতে গিয়ে সুকান্ত বলেন পুরোটাই তৃনমুলের যোগসাজশে ফোলানো বেলুন।পিন দিয়ে ফুটো করলেই বেলুন চুপসে যাবে। বিজেপির ভোট কেটে তৃনমুলকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্য বামেদের এই তোড়জোড় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এবার ভোটে বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় প্রার্থী জেতার সংখ্যা ১৩ ও ১৮ সালের থেকে অনেক কম, এ প্রসংগে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৮ আর ২৩ সাল এক নয়, আমরা এবার তৃনমুলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বেশি করে প্রার্থীর মনোনয়ন জমা করতে পেরেছি, তাই এই ফিগারটা কমে এসেছে, এর পেছনে মানুষের অধিকার রকঝার বিষয়টিই এবার অরাধান্য পেয়েছে।নির্বাচন কমিশনের কোন অবদান নেই।পাশাপাশি তার দাবি এত কিছুর পরও তারা শাসক দলের হুজ্জতি হাংগামার ও সন্ত্রাসের জন্য ডায়মন্ডহারবার সহ বেশ কিছু জায়গায় যেমন প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করতে পারিনি, তেমনি পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে অনেক প্রার্থীকে মনোনয়ন তুলে নেবার মত ঘটনার জন্য ও সব জায়গায় প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয় নি বলে তিনি দাবি করেন।
অপর দিকে স্কুল শিক্ষকরা তাদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর জন্য দাবি করার বিষয়টির ব্যাপারে বলতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি ২০১৮ সালের ইটাহারের এক বুথের শিক্ষক পোলিং অফিসারের প্রথমে বুথ থেকে নিখোজ পরে তার দেহ রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধারের প্রসংগ টেনে এনে বলেন এরপরেও তারা তাদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি যুক্তি সংগত বলেই মনে করি। তিনি আরো বলেন ভোট যাবে ভোট আসবে কিন্তু ওই মানুষটি আর ফিরে আসবে না, ভাবুন তো একবার তার পরিবারের অবস্থাটা। সে ঘটনার কোন তদন্তের রিপোর্ট কিন্তু এখনও সামনে আসেনি।পুরোটাই ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে রাজ্যের ১৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য্যহীন, যার ফলে রেজাল্ট নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে সুকান্ত এর জন্য পুরোপুরি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে অযোগ্য হিসেবে দায়ি করে বলেন, উনি নাটকের মানুষ ওসব নিয়েই থাকুন, অযোগ্য লোকেদের হাতে পরে আজ শিক্ষা ব্যবস্থ্যাটাই লাটে ওঠা জোগাড় বলে তিনি মন্তব্য করেন।