আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ এক সর্বভারতীয় রিয়ালিটি শো’তে বাঁকুড়ার নাম উজ্জ্বল করলেন চার তরুণী। তরুণীরা অংশ নিয়েছিলেন ‘গোল্ডেন গার্লস’ ডান্স গ্রুপের হয়ে। দুর্দান্ত ফল করে বাঁকুড়ার মুকুটে নতুন পালক জুড়লেন তারা। বাঁকুড়ায় পা রাখতেই সমারোহে গ্রহণ করা হয় চারজনকে। এই চার তরুণীর নৃত্য কুশলতায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন বিচারকরা। এই চারজনের এক তরুণী হলেন মেঘা রুইদাস। চরম আর্থিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে নিজের স্বপ্ন তাড়া করেছেন তিনি। মেঘার বাবা একজন অটোচালক। গ্রাম এবং মফঃস্বলের মেয়েরাও পারে করে দেখাতে। করে দেখালেন মেঘা। ঘরে দারিদ্রতার ছাপ স্পষ্ট। তাও অজুহাত না দিয়ে মেঘা জানান যে তার যতটুকু রয়েছে সেটা নিয়েই তিনি খুশি।
‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’, তারই এক নিদর্শন দেখালেন বাঁকুড়ার মেয়ে মেঘা। চলতি অনুষ্ঠানের মাঝেই ডাক পান মেঘা রুইদাস। সেই মুহূর্তে পাননি কোনও ট্রেনের রিজার্ভেশন। স্বপ্নের হাতছানিকে উপেক্ষা করতে না পেরে অনিশ্চয়তা নিয়ে বাবার হাত ধরে বেরিয়ে পড়ে মেঘা। প্রায় আটচল্লিশ ঘন্টা ধরে জেনারেল বগির ভিড় উপেক্ষা করে তাঁরা পৌঁছান মুম্বাই। মেয়ের এই সফলতাতে আবেগ ঘন হলেন বাবা অরুণ রুইদাস।
ঘরে রয়েছে জায়গার সংকীর্ণতা। তার মধ্যেই অনুশীলন করেন মেঘা। বড় জায়গার দরকার হলে রাত ১০ টার পর রাস্তায় অনুশীলন করেছেন তিনি। স্বল্পতাকে আশ্রয় করেও সফলতার পথে মেঘা রুইদাস। মেঘার মা নিতু রুইদাস জানালেন সেই সংগ্রামের গল্প। বাঁকুড়া থেকে মুম্বাই যাওয়ার অভিযান মোটেই ছিলনা সহজ।
অজুহাত দেন না মেঘা। বাঁকুড়া শহরের পাঁচবাগা বিবাদীবাগ এলাকায় তাদের বাড়িতে মেঘার ঘরটি দেখলেই সেই কথাটা স্পষ্ট হবে। চুন সুরকি খসে পড়লেও আর পাঁচটা তরুণীর মতই পরিপাটি করে সাজানো রয়েছে তার ঘর। ঠিক একই ভাবে ধীরে ধীরে সেজে উঠছে নৃত্য নিয়ে মেঘার ভবিষ্যৎ।