দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পায়েল পালের আগামী চার বছরের জন্য কলেজে পড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিল বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

0
43

দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- শারীরিক দিক থেকে বিশেষভাবে সক্ষম এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২% নম্বর পাওয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পায়েল পালের আগামী চার বছরের জন্য কলেজে পড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিল বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয়ের এক প্রতিনিধি দল পায়েলের কামারপাড়ার বাড়িতে গিয়ে মহাবিদ্যালয়ের তরফ থেকে তাকে ৫০০০ টাকার চেক, কলম, ডায়েরি, উত্তরীয় এবং মানপত্র তুলে দেওয়া হয়।
বিমান চক্রবর্তী, বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় এর অধ্যক্ষ জানান, বুধবার আমরা পায়েলের বাড়িতে গিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানালাম। পায়েল শারীরিক দিক থেকে বিশেষভাবে সক্ষম। তার এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কে জয় করে এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শতকরা ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে পায়েল। পরবর্তী কালে সে ভূগোল নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতে চায়। আমরা পায়েলের বাবা-মাকে বলেছি আগামী চার বছর যদি পায়েল আমাদের মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয় তাহলে তার পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় বহন করবে। তাকে পড়াশোনা করার জন্য যাবতীয় সাহায্য মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করবে। আমরা তাকে বইপত্র দিয়েও সাহায্য করবো। আগামী ভবিষ্যৎ যাতে সুনিশ্চিত হতে পারে সেজন্য বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় তার পাশে সর্বদাই থাকবে।’
বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় এর পরিচালন কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় সমাজদার বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিকে পায়েলের ফলাফল নিঃসন্দেহে তার মত আরও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েদের কাছে অনুপ্রেরণা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিজস্ব লক্ষ্যের কাছে যে কোন বাধা হতে পারে না তার প্রমাণ পায়েল আমাদের দিয়েছে। আমরা তাকে সংবর্ধনা দিতে পেরে নিজেদের গর্বিত মনে করছি। বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় আগামী চার বছরের জন্য তার স্নাতক স্তরের শিক্ষার যাবতীয় খরচ বহন করবে।’
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পায়েল জানালো, ‘আজ আমার খুব আনন্দ হচ্ছে কারণ আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। আমার বাবা সামান্য টেলারিং এর ব্যবসা করেন। মা গৃহবধূ। আমি পরবর্তীকালে ভূগোল নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করতে চাই। বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় এর পক্ষ থেকে আমার স্নাতক স্তরের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।’
পায়েলের মা প্রভাতী পাল জানালেন, ‘পায়েল ছোটবেলা থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বড় হচ্ছে। আমি ওকে আমার সাথে স্কুল এবং প্রাইভেট টিউশনে নিয়ে যাই। ও ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। আজকে বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানিয়েছে যে পায়েল যদি তাদের কলেজে ভর্তি হয় তাহলে তার যাবতীয় দায়িত্ব তারাই বহন করবে।’