ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ই এক বাঙালি বিপ্লবী ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় একজন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। যুগান্তর আন্দোলনের তহবিল আদায়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত অবস্থায়, তার কার্যক্রম মূলত, বিহার, ওড়িশা এবং অধুনা উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড ব্যাপী বিপ্লবী কেন্দ্রগুলিতে ছিল।
প্রাথমিক জীবন——–
১৮৭৯ সালের ১ জুলাই কলকাতার কাছে হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অমরেন্দ্রের পিতা উপেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। উত্তরপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা এবং ভাগলপুরে মাধ্যমিক শিক্ষার পর, অমরেন্দ্র কলকাতার সুপরিচিত ডাফ কলেজে (বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ) পড়াশোনা করেন, যেখানে তার সহপাঠীদের মধ্যে ছিলেন পরবর্তী জীবনে সহ বিপ্লবী উপেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি এবং ঋষিকেশ কাঞ্জিলাল। স্নাতক শেষ করার পর, তিনি এবং তার বন্ধুরা সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির সাথে ভারতজুড়ে তার বক্তৃতা সফরে যান এবং পরে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির দ্বারা প্রভাবিত সমাজসেবা কেন্দ্র খোলেন। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময়, অমরেন্দ্র ব্রিটিশ পণ্য বয়কট চিহ্নিত করে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
প্রথম পদক্ষেপ————
রাজা পিয়ারীমোহন এবং তার পুত্র রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জির অর্থায়নে, তিনি উত্তরপাড়া শিল্প-সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন, একটি কাঠের কারখানা তৈরি করেন, ছয়টি তাঁত ক্রয় করেন এবং স্বদেশী কাপড় বিক্রি শুরু করেন। শীঘ্রই তিনি যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে সহায়তা করে নদীয়ার পোড়াগাছা ইউনিটের তত্ত্বাবধান করেন। তারা ছাত্রভান্ডার গঠনে সহযোগিতা করেছিল, যা পরে শ্রমজীবি সমবায়ে রূপান্তরিত হয়েছিল।
১৯০৩ সাল থেকে যখন যতীন মুখোপাধ্যায় সরাসরি অরবিন্দ ঘোষের আদেশে কাজ করছিলেন, তখন অমরেন্দ্র ১৯০৭ সালে শ্রী অরবিন্দের সাক্ষাত পান এবং এই কথাগুলো দিয়ে: “নিজেকে ঈশ্বর ও কাছে সমর্পণ কর এবং ডিভাইন মাদারের নামে ভারতবর্ষের সেবা করে যাও। এটাই তোমাকে আমার দীক্ষা ” দীক্ষা পেয়েছিলেন। শ্রী অরবিন্দ তাকে আরো বলেন “আমরা যদি দেশের স্বাধীনতা অর্জন করতে চাই, তবে আমাদের এর জন্য সবকিছুই উত্সর্গ করতে হবে, এবং এমনকি আমাদের জীবন ত্যাগ করতে প্রস্তুত হওয়া উচিত। যদি আমরা দেশকে মুক্ত করতে চাই, তাহলে আমাদের মৃত্যুভয় জিততে হবে।” চরমপন্থীদের আন্দোলনের তহবিল সংগ্রহের জন্য শ্রী অরবিন্দ দ্বারা উত্সাহিত, হয়ে তিনি যতীন মুখার্জির কাছাকাছি আসেন। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পিছনে, তাদের কেন্দ্রগুলি আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলির স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আশ্রয়স্থল হিসাবে, পাশাপাশি যতীন ও অন্যান্য যুগান্তর নেতাদের বৈঠকের জন্য ব্যবহৃত হত।
পরবর্তী জীবন————-
বাংলার ফিরে আসার পর, অমরেন্দ্র চেরি প্রেসের পরিচালনা গ্রহণ করে, আত্মশক্তি মুদ্রণ ও প্রকাশ করেন, স্বরাজ্য পার্টির কাঠামোর মধ্যে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশকে তার যুগান্তরের সাথীদের পূর্ণ সহানুভূতি প্রদান করেন। স্বল্প মেয়াদী কারাগার বাসের পর তিনি ১৯২৩ সালে মুক্তি পান এবং সুরেশ মজুমদার দ্বারা কর্মী সংঘ এর সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৫ সালে রেডিকাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগ দেন।
তিনি ১৯৫৭ সালে উত্তরপাড়ায় তিনি প্ররয়া হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।