নিজের বাড়ি থেকেই ফরাক্কা জিআরপি গ্রেপ্তার করলো আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের মূল পান্ডাকে।

0
10

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- নিজের বাড়ি থেকেই ফরাক্কা জিআরপি গ্রেপ্তার করলো আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের মূল পান্ডাকে। ধৃত ব্যক্তির নাম আব্দুর রশিদ। তিনি বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার পারদেওনাপুর শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পারবৈদ্যনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। পাশাপাশি তিনি ওই গ্রামের কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। যদিও ধৃতের দাবি তিনি কংগ্রেসের টিকিটে জেতার কিছুদিন পরেই তৃণমূলে যোগদান করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই আব্দুর রশিদের গ্রেপ্তারির পর থেকেই এলাকায় রাজনৈতিক চাপানোতর সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত্রে মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা জিআরপি আব্দুর রশিদের বাড়িতে আসে। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নিয়ে যায় জিআরপি কর্মীরা। জিআরপি সূত্রে খবর, গত অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ তৌসিফ আলী নামের এক ব্যক্তিকে ফারাক্কা রেলস্টেশন চত্বর থেকে দুটি সেভেন এমএম পিস্তল ও চারটি ম্যাগাজিনসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অস্ত্রের কারবারি আব্দুর রশিদের নাম জানতে পারে জিআরপি কর্মীরা। এরপরেই তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে জিআরপি। শনিবার রাত্রে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রশিদের বাড়িতে হানা দেয় জিআরপি কর্মীরা। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে ফরাক্কা নিয়ে যায় জিআরপি।‌ জিআরপি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ধৃত তৌসিফ আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিহারের পাটনাই মেরামতির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। ‌ কিন্তু ট্রেনে ওঠার আগেই ফরাক্কার রেল সাব‌ওয়ের নীচেই জিআরপি তাকে আটক করে। জিআরপির জেরার মুখে ধৃত তৌসিফ জানিয়েছে, আব্দুর রশিদ আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বাংলাদেশে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকায় বিক্রির ছক কষেছিল। তার জন্যই সেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মেরামতের প্রয়োজন ছিল। এর আগেও বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করেছে আব্দুর রশিদ। ওই ছক ধরে এক‌ই কায়দায় আগ্নেয়াস্ত্র গুলি পাচার করা হতো। কিন্তু পাচারের আগেই হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল আগ্নেয়াস্ত্রগুলি। বৈষ্ণবনগর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আমাদের কাছে বেশ কিছুদিন ধরেই আব্দুর রশিদের বিষয়ে খবর আসছিল। কিন্তু হাতেনাতে ধরতে পারিনি। গতকাল ফরাক্কা জিআরপি আমাদের বিষয়টি জানায়। এরপরই বৈষ্ণবনগর থানা ও ফরাক্কা জিআরপি হানা দিয়ে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আখতার হোসেন বলেন, এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবেই পরিচিত আব্দুর রশিদ। তাই গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট দিয়ে তাকে জেতায় গ্রামবাসীরা। কিন্তু আড়ালে আবডালে অস্ত্র কারবারি সে! বিশ্বাস হচ্ছে না। ধৃতের এক আত্মীয় আতাউর রহমান জানিয়েছেন, গতকাল পুলিস এসে আব্দুরকে ধরে নিয়ে গেল। কিন্তু কেন ধরেছে জানতাম না। সংবাদমাধ্যমেই জানলাম আব্দুর রশিদ আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করতো। আমাদের মনে হচ্ছে কেউ তাকে ফাসাচ্ছে। বিজেপি নেতা তারক ঘোষ আব্দুর রশিদের গ্রেপ্তারিতে তৃনমুলকে তোপ দেগেছেন। তার বক্তব্য, তৃনমুল করলেই যে কোনও বেআইনি কাজ করতেই হবে। তার অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। তৃণমুল করা মানেই অন্যায় কাজ করা থেকে শুরু করে বেআইনি কার্যকলাপের লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া।
বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেত্রী চন্দনা সরকার জানিয়েছেন, আব্দুর রশিদ আমাদের দলের কেউ ন‌ই। সে কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। আমাদের দলের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। যুব কংগ্রেসের মালদহ জেলার সভাপতি সার‌ওয়ার জাহান বাপ্পা বলেন, আমাদের দলের টিকিটে জিতলেও আব্দুর রশিদ এক বছর আগেই তৃনমুলে যোগ দিয়েছে। তারপর থেকেই আমরা তার সাথে যোগাযোগ রাখিনি। তৃণমুলে যোগ দেওয়ার পরেই সে বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত হয়েছে।