মুখের ভিতর রড ঢুকে বিপত্তি, জটিল অপারেশনে খুদের পুনর্জন্ম তমলুক মেডিকেল কলেজে।

0
19

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- জটিল অপারেশনে তিন বছরের শিশুর প্রাণ বাঁচালো তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-টিম। জানালার মরচে ধরা রড নিয়ে খেলছিল তিন বছরের মৌমিতা দাস। বাড়ি হলদিয়ার ভবানীপুর থানার বাড় উত্তরহিংলি গ্রামে। খেলার সময় আচমকা পা পিছলে গিয়ে সেই রড মুখগহ্বরের উপরের অংশ ভেদ করে অনেকটা চলে যায়। মুখ দিয়ে গল গল করে রক্ত বের হতে থাকে। রডবিদ্ধ অবস্থায় বাড়ির লোকজন স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করেন। সেখান থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে অনর্গল রক্তপাতে শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি নিমতৌড়িতে বাঁক নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অর্থোপেডিক সার্জেন শিবশঙ্কর দে-র নেতৃত্বে মেডিক্যাল টিম মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়ান।
মঙ্গলবার তিন বছরের ওই শিশুকে প্রথমে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে আনা হয়। সেসময় ডিউটিতে ছিলেন অর্থোপেডিক সার্জেন শিবশঙ্করবাবু। তিনি হাসপাতালে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। এর আগেও ওই ঩চিকিৎসক হাসপাতালে একাধিক ঝুঁকির অপারেশন করে সফল হয়েছেন। এরপর শিবশঙ্করবাবুর নেতৃত্বে ইএনটি সার্জেন তিতাস কর এবং অ্যানেস্থেটিস্ট বিদিশা মুখোপাধ্যায় ও সৈকত ভট্টাচার্যকে নিয়ে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়। তিন বছরের মৌমিতাকে ওটিতে নিয়ে গিয়ে অপারেশন শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলে। ওই তিন বছরের শিশুকন্যার মুখ ভেদ করে ঢুকে যাওয়া রড টেনে বের করা হয়। ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। দেড় ঘণ্টার সফল অপারেশনের পর ওই শিশুকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়।

চিকিৎসাধীন ওই শিশুর মা বলেন বাড়ির মধ্যে মেয়ে একটি রড নিয়ে খেলছিল। সেই সময় পা পিছলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায়। তখন রডটি মুখের ভিতর ঢুকে উপরের দিকের তালুতে গেঁথে যায়। প্রথমে স্থানীয় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক এসএসকেএম হাসাপাতালে রেফার করে দেন। আমরা মেয়ের শারীরিক অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। অ্যাম্বুলেন্সে মেয়েকে নিয়ে কলকাতা যাওয়ার পথে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানকার চিকিৎসকের তৎপরতায় মেয়ের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনা খরচায় এই অপারেশন হওয়ায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়েছে।

শিবশঙ্করবাবু বলেন, ওই শিশুকে হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে আনা হয়েছিল। সেই সময় আমি ডিউটিতে ছিলাম। গোটা বিষয়টি দেখার পর দ্রুত অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিই। চারজন চিকিৎসকের একটি টিম বানিয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলে। সফল অপারেশনের পর ওই শিশুটিকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।