আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্ম ১৪ মার্চ, ১৯৩৪ সালে। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে এবং তৎপরবর্তীকালের একজন সফল বাঙালি গায়িকা ছিলেন। তার সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে “ছোট্টো পাখি চন্দনা”, “আমি আলপনা এঁকে যাই আলোয় ছায়ায়” , “আকাশ আর এই মাটি ওই দূরে” এবং “যদি অলি না চাহে ” “তারাদের চুমকি জ্বলে আকাশে”, “হাট্টি মাটিম টিম”, “মন বলছে আজ সন্ধ্যায়”।
১৩ বছর বয়সে, আল্পনা তার বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রবিন চট্টোপাধ্যায় এবং গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের দ্বারা সঙ্গীতের সাথে পরিচিত হন। তারা দুজনেই যথাক্রমে সঙ্গীত রচয়িতা ও গীতিকার হিসেবে বাংলা গানের জগতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন।
তার গান খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ছোটদের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান আল্পনা ব্যানার্জি। তার আধুনিক গানগুলো বেশি জনপ্রিয়তা পায়। তিনি ১৯৫০-এর দশকে নচিকেতা ঘোষ, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, শৈলেন মুখোপাধ্যায় এবং ভূপেন হাজারিকা সহ বিভিন্ন সঙ্গীত রচয়িতাদের অধীনে অনেক উল্লেখযোগ্য বাংলা চলচ্চিত্র এবং অ-চলচ্চিত্র গান গেয়েছিলেন।
নিম্নোল্লিখিত বাংলা ছবিতে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে ছিলেন আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়—-
কড়ি ও কমল, নৌকা বিলাস, শুভদা, সতীর দেহত্যাগ, সতীর পাতালপ্রবেশ, বিদ্যাসাগর, সাত নম্বার কয়েদী, অগ্নিপরীক্ষা, দ্রৌপদী, দেড়শো খোকার কাণ্ড, কার পাপে, ভীষ্ম, সহোদর, বিধিলিপি, ভাঙ্গাগড়া, মথুর, নাগিনী কন্যার কাহিনী , হ্যাঁ, বৌদির বোন, শিল্পী, লক্ষ্যভ্রষ্টা, ব্যক্তিগত সহকারী, নষ্টনীড়, মনময়ী গার্লস স্কুল, সন্ধ্যারাগ, একতারা, শ্রীবৎস চিন্তা, অদৃশ্য মানুষ, প্রশ্ন, পৃথিবী আমারে চায়, মা ও ছেলে, পথে হল দেরি, ওরা থাকে ওধারে, লক্ষীহীরা, রক্তসন্ধ্যা, বিক্রম উর্বশী, ছেলে কার, না, সাগরিকা, কীর্তিগড়, ছবি, অসমাপ্ত, দস্যু মোহন, বৃন্দাবন লীলা,ভসাহেব বিবি গোলাম।
এইচএমভি সারেগামার সাথে রেকর্ড করা তার কয়েকটি গান—-
ওগো তোমায়ে চাওয়া, পাপিয়া কেনো আর পিয়া ডাকো, শিয়রের দীপ যদি, যেথা আছে শুধু নীরবতা, মন বলেছে আজ সন্ধ্যায়, অমি আলপনা এঁকে যাই, এত মঞ্জরি কেন আজ ফুটেছে, আবছা মেঘের ওম গায়ে, আকাশ আর এই মাটি ওই দূরে যেথায় মেশে, তোমার মনের রঙ লেগেছে, ছোট্ট পখি চন্দনা, ফিরে ফিরে চায় কে যে, বলেছিলে তুমি গান শোনাবে, সমীরণ ফিরে চাও, ও গুনের নাইয়ারে, আমার শ্যাম শুক পাখি গো, আমি সুন্দর বলে, মাটির ঘরে আজ নেমেছে চাঁদ রে, হৃদয় আমার সুন্দর তব পায়, বকুলগন্ধে যদি বাতাস, তারাদের চুমকি জ্বলে আকাশে, যদি তোমার জীবনে।
এইচএমভি সারেগামায় রেকর্ড করা তার কয়েকটি নার্সারি ছড়া—–
আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম, যমুনাবতি সরস্বতী, সজলপুরে কাজল মেয়ে, খুকু যাবে শ্বশুর বাড়ি, হাট্টি মাটিম টিম, ময়নার মা ময়নামতি, চন্দ্রকলা বরনমালা, নাচে নাচে পুতুল নাচে, ওঠো ওঠো সুর্যাই, দোল দোল দুলুনি, ছোট্ট পাখি চন্দনা, বিদেশিনী কাদের রাণি, হই হুল্লোড় শোরগোল
, টপট উঠে পড়ো, আয় রে আয় ছেলের পাল, চরকা কাটে বুড়ি, পৌষালি সন্ধ্যা ঘুম ঘুম তন্দ্রা, কানা মাছি ভোঁ ভোঁ।
২০০৯ সালের ২৪শে জুলাইয়ে ৭৫ বছর বয়সে মারা যান আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
Leave a Reply