কি চাও তুমি আমার কাছে?
জানি না কি চাই!
তবে আমার পানে অমন করে তাকিয়ে থাকো কেন?
জানি না কেন তাকিয়ে থাকি !
ভারি অবাক লাগছে তোমার কথায় !
কেন, এতে অবাকের কি আছে?
তোমাকে রোজ দেখি তুমি আমার পানেই তাকিয়ে থাকো।
অথচ বলছ জানি না কেন তাকাই !
বোধহয় তোমার কথাই ঠিক।
একটা কথা তোমায় বলব?
কি বলবে !
তোমার মুখে এক নিবিড় শান্তি !
এতো প্রশান্তি আমি কোথাও পাইনি খুঁজে!
সবুজ ধানের শীষে ভোরের শিশির বিন্দু দেখেছো কোন দিন?
তোমার মুখমণ্ডল ভোরের শিশিরাসিক্ত শিউলি !
অদ্ভুত রহস্যময় মায়া তোমার দুচোখে!
দূর– তাই আবার হয়?
আমি তো রক্ত মাংসে গড়া এক ক্ষয়িষ্ণু নারী!
ওসব তুমি বুঝবে না,
তুমি তো ভোরের আয়নায় সেভাবে নিজেকে দেখোনি কখনও!
পড়ন্ত বেলায় রঙিন সূর্যে
নীলাকাশকে সাজতে দেখেছো কোন দিন?
হেমন্তের বিকেলে রক্তিম রবির সেই কুসুম তুমি!
মনে হয় তোমার কপালে সোনালী টিপ পড়িয়ে দিয়েছে কেউ !
অমন করে বলছ কেন ?
আমি মোটেও অতো সুন্দর নই!
তার থেকেও তুমি আমার কাছে অনেক বেশি কিছু !
তাহলে ছুঁয়ে দেখো না কেন?
বড়ো ভয় হয় !
কেন?এই তো বললে বেশি কিছু !
কি করে বোঝাই তোমাকে।
ছুঁতে চেয়েছি কতোবার!
তুমি যে দূর থেকে দূরে আরও দূরে সরে যাও !
ভীষণ ভয় করে বুঝি আমাকে হারাতে ?
হারানোর ভয় আমি করিনা,
আমি জানি তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না !
ছাই জানো, আমি যেতেই পারি,
আমার তো পিছু টান নেই কিছু !
কে বলেছে তোমার পিছু টান নেই?
কে আবার আমিই বলছি !
তুমি যে আমার স্বপ্ন ,রাতের অভিসারী !
স্বপ্নের আবেশেই তো তুমি আমাকে
সারাক্ষন জড়িয়ে রাখো।
এতো সুন্দর করে বলো কেন তুমি?
তোমাকে প্রতি মুহূর্তে পাই বলে।
মায়া বাড়িয়ো না, আমাকে ছেড়ে চলে যাও তুমি!
আমি গেলে তুমি যে কষ্ট পাবে !
না পাবো না।
কিন্তু নদীর যে সমুদ্র ছাড়া গতি নেই ।
আমি তো সমুদ্র নই !
তুমি যে নীলাকাশ সমুদ্র !
তোমার শরীরে তো নামা চলে না !
শুধু দু চোখ ভরে দেখে নিতে হয় !
তুমি কি চাও আমার কাছে?
কিছুই না শুধু তোমাকে দু চোখ ভরে দেখতে চাই !
আমি তো তোমার নই বন্ধু
কেন পাগল করো আমাকে ?
জানি না গো !
হয়তো তোমার মধ্যে সব পাই বলে !
প্রেমিকা, বন্ধু, মা, দেবী, মানস কন্যা রুপে!
তুমি কেন বলো অমন পাগল করা কথা
আমি যে কোথাও কোনো খানে নেই তোমার!
কে বলেছে তুমি নেই?
তুমি তো আমার অন্তর আত্মায়
তুমি যে আমার স্বর্গীয় প্রেম !
এই যে বললে মা, মানস কন্যা?
বলেছি তো,
সব রুপে তোমাকে যে অনুভব করি চারিদিকে
প্রভাতে, দুপুরে, সন্ধ্যায়– রাতের আঁধার যেমন পৃথিবীকে জড়িয়ে ধরে !
ভোরের শিশিরকে ছুঁয়ে যেমন পাখিদের ঠোঁট ভিজে যায় !
ঠিক তোমাকেও এমনি করেই চুম্বনে চমকিত করি আমি!
উহঃ আর বোলো না অনেক হয়েছে তোমার পাগলামি!
বোঝো না কেন তোমার কথায় আমার ভিতরে শিহরণ খেলে যায় !
আমিও তো তাই চাই!
তুমিও পাগল হয়ে বলো আমার শ্বাস প্রশ্বাসে তুমি!
শুধু তোমাময় এক জোড়া দৃষ্টি
তুমি আছো জনারণ্যে আছো একাকীত্বে
শুধু একবার শুধু একবার বলো!
তুমি এভাবেই থাকবে জীবনে মরনে
মৃত্যুর পরও আমার দু চোখে ।
কামারপুকুর
হুগলি