খাঁচার অন্দরে : কৌশিক চক্রবর্ত্তী।

0
527

আমার অন্তর্জলি যাত্রার পরে
তোমার নাম ধরে কেউ ডেকেছিল বারবার-
তুমি সাড়া দিতে চেয়েছিলে
ক্লিপ কাঁটা আর শূন্যতার মোড়কে
আবার সেজেও ছিলে ঠিক আগের মতোই-
আমিও মুখ তুলে দেখতে গেছি আবার…

যারা ধরে আমায় বসিয়ে দিয়েছিল তোমার দিকে ফিরে
তাদের জন্য কেনা হয়নি নতুন কোনও উপহার।
বরাবরের মতোন আমি অন্ধকারকে শরীরে জড়িয়ে
ডোমের উল্লাসকে দিয়ে গেছি অবাধ প্রশ্রয়-
এখন সময়ের সাথে সাথে
ধীরে ধীরে পচন ধরছে শরীরে
মাথা থেকে ঝরে গেছে সমস্ত চুল
হাতের আঙুলে বাসা বেঁধেছে নির্জনতা…
ঠিক যেরকম ভাবে আমি বারবার ছুটে যেতাম স্ট্রিটলাইটের তলায়
ঠিক যেমন ভাবে নিজের দিকে তাক করে রাখতাম দুর্বিনীত মাঝরাতগুলো
তেমন করে সাহস নিয়ে আজ আর উঠে দাঁড়াতে পারি না সকলের আড়ালে।

আমার অন্তর্জলিযাত্রার পরে
তোমার নৈঃশব্দ্য ছুঁয়ে গেছে পায়ের আঙুল-
যেদিন লোডশেডিঙের ঠিক পরে তুমি নিজের অজান্তেই
আঁকড়ে ধরেছিলে আমার বুকে থাকা প্রত্যেকটি দাগ
সেই বুকে আজ খুব সহজে খোঁড়া হয়েছে বাস্তুসাপের নির্লিপ্ত কবর।
আমি তোমার সঙ্গেই প্রতিদিন ছুঁতে চাইতাম গোধূলির বাদামী শিড়দাঁড়াটুকু
আজ এই শহর আমার মেরুদন্ডে গঙ্গাপুজোর অঙ্গীকারে আবদ্ধ…

আমার অন্তর্জলিযাত্রার পরে
তুমি আর তাকিয়ে দেখো নি হঠাৎ তোমার চৌকাঠে ভেসে ওঠা নতুন মৃতদেহটার দিকে-
বরং তুমি চিৎকার করে জানিয়ে দিয়েছ
তোমার ক্ষতিটুকু তুমি যত্ন করে গুছিয়ে রেখেছ রোজকার ব্যাগে
আর কেবল নির্জনতার অনুমানে আমি বারবার ছুটে গেছি খাঁচার অন্দরে।