কিছু কথা: শ্রদ্ধেয় শ্রীগোরাচাঁদ ভট্টাচার্য মহাশয়ের প্রবচন প্রসঙ্গে : রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।।

0
778

বিগত কয়েক দিন যাবৎ আমরা উত্তাল হয়ে উঠেছি জনৈক শ্রীদীনকৃষ্ণ দাস নামক এক কীর্তনীয়ার কিছু বক্তব্যকে কেন্দ্র করে । প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছি। ধিক্কার দিয়েছি ‌। অনেকে তো নানান গালিগালাজও করেছেন তাঁর নামোচ্চারণ করে। এমনকি এই জীবাধমা আমিও তাঁকে উপদেশ দিতে বসে হাতে কলম তুলে নিয়েছি নিজের যোগ্যতার পূর্বাপর বিচার না করে। কিন্তু নিলাম কেন ? কারণ , গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মাথার মুকুটস্বরূপ মহাগ্রন্থ , যা পরতত্ত্বের শেষ সীমা শ্রীমন্মহাপ্রভুর ভগবত্তাকে প্রমাণসহ প্রতিষ্ঠা করে সেই ‘শ্রীশ্রীচৈতন্য চরিতামৃত’ মহাগ্রন্থের বাস্তবতা ও গ্রন্থকার শ্রীল কবিরাজ গোস্বামীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কাল্পনিক, অবাস্তব , অপ্রামাণিক , ভুলে ভরা বলেছেন সেই গ্রন্থমণিকে । তাই এ প্রকার বৈষ্ণব নিন্দা শুনেও যদি চুপ থাকতাম , যদি দু-এক কথা না লিখতাম তাহলে দীনকৃষ্ণ ঠাকুরের বক্তব্যকে মেনে নেওয়া হত। তাতে সায় দেওয়া হত, সহমত পোষণ করা হত। আর সর্বোপরি বৈষ্ণব নিন্দায় সামিল হওয়া হতো তাঁর সাথে। সেকারণে নিতান্তই বিবেকের তারণায় লিখেছি।( ডেইলিহান্ট ওয়েব মিডিয়াতেই তা প্রকাশ পেয়েছে।) ঠিক একই কারণে
, একা আমি নই, অন্যান্য অনেক জ্ঞাণীগুণী, ভক্তিমান ব্যক্তিরাও প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন ।

আমি অজ্ঞানী, পামর, কীটাধমা হয়েও ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি আবার একবার আজকের এই লেখায়। কারণ , শ্রদ্ধেয় শ্রীগোরাচাঁদ ভট্টাচার্য মহাশয়ের প্রবচনের একটি ভিডিও ক্লিপিং। আমার যে কলম কেবলমাত্র মহাপ্রভু, তাঁর পার্ষদ ও তাঁর ভক্তদের কে নিয়ে লেখায় ডুবে থাকতে চেষ্টা করে সেই কলমকে ইচ্ছে করে অন্য কথা লেখাচ্ছি কেবলমাত্র নিজের বিবেক দংশিত যাতে না হয় সে কারণে।
দীনকৃষ্ণ ঠাকুরের প্রসঙ্গ ওঠার এই ঝড়ের মধ্যেই হঠাৎ পেলাম সেই ভিডিও ক্লিপিংটি। গভীর পরিতাপের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, যে কারণে দীনকৃষ্ণের প্রতি অভিযোগ জন্মেছিল মনে, এই ভিডিও ক্লিপিংটি দেখে মনে হল প্রায় একইপ্রকার অভিযোগ সৃষ্টির উপাদান বা রসদ গোরাচাঁদবাবুর বক্তব্যে ঠেসে পুরে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ , বৈষ্ণবনিন্দা ও গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের অপর এক আকর গ্রন্থ ‘শ্রীশ্রীভক্তিরত্নাকর’ সম্পর্কে কাল্পনিক আখ্যা প্রদান। সত্যি কথা বলতে কি দীনকৃষ্ণ ঠাকুরের বক্তব্য শুনতে শুনতে অভিযোগ আর ক্রোধের উদ্রেক হয়েছিল অন্তরে, আর ,গোরাচাঁদ ভট্টাচার্য মহাশয়ের কথাগুলো শুনতে শুনতে বিস্ময়ের আর ভীষণ কষ্টের জাগরণ হচ্ছিল চিত্তে । কারণ , তিনি তো আমার প্রণম্য ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব । বয়ঃজ্যেষ্ঠ এই জ্ঞানী মানুষটির মুখ থেকে অমন সব কথার প্রকাশ মন মেনে নিতে পারছিল না , দুঃখ পাচ্ছিল ।

শ্রদ্ধেয় গোরাচাঁদবাবু প্রথমেই বললেন, নবদ্বীপ পরিক্রমা পাগলের পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি নবদ্বীপের নয়টি দ্বীপের অতীতে অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললেন । বললেন—-“অষ্টাদশ শতাব্দীতে লেখা ভক্তিরত্নাকরের লেখক , বৃন্দাবনে রান্না করতেন—তিনি হঠাৎ মনে হল কিছু লিখবেন। তিনি নয় দ্বীপের কল্পনা করে নবদ্বীপ সম্পর্কে লিখতে আরম্ভ করলেন নয় দ্বীপের গল্প বলে। গল্প! অদ্ভুত অদ্ভুত সব গল্প আছে। আর এখন সেটাকে নিয়ে রসালো ইনকামের ব্যবসা, আয়ের ব্যবসা।”

অর্থাৎ, গোরাচাঁদ বাবু বলছেন একমাত্র নরহরি চক্রবর্তীর ভক্তিরত্নাকর ব্যতীত নয় দ্বীপের উল্লেখ আর কোথাও নেই , এ নিছকই মনগড়া কল্পনা নরহরি চক্রবর্তীর। নিঃসন্দেহে , আমি গোরাচাঁদ বাবুর মত পন্ডিত নই, মত তো দূরের কথা তাঁর পদাঙ্গুলের যোগ্যতাও আমার নেই হয়তো বা। কিন্তু তবুও লিখছি, নবদ্বীপের নয়টি দ্বীপের অস্তিত্বের কথা শ্রীবিষ্ণুপুরাণে বর্ণিত আছে। আর, সেই শ্লোককে আশ্রয় করে নরহরি চক্রবর্তীপাদ লেখেন । শ্রীশ্রীভক্তিরত্নাকর তাই বলছে—
“ভারতবর্ষ ভেদে শ্রীনবদ্বীপ হয়।
বিস্তারিয়া শ্রীবিষ্ণুপুরাণে নিরূপয়।।”

আর , বিষ্ণুপুরাণের শ্লোকটি হচ্ছে এই—

“ভারতস্যাস্য বর্ষস্য নব ভেদান্নিশাময়।
ইন্দ্রদ্বীপঃ কশেরুশ্চ তাম্রবর্ণো গভস্তিমান।।
নাগদ্বীপ স্তথা সোম্যোগন্ধর্ব স্ত্বথ বারণঃ।
অয়ং তু নবম স্তেষাং দ্বীপঃ সাগর সম্ভৃতঃ।।
যোজনানাং সহস্রনন্তু দীপোহয়ং দক্ষিণোত্তরাৎ।
সাগর সম্ভৃত ইতি সমুদ্রপ্রাপ্তবর্ত্তীতি
শ্রীধর স্বামী ব্যাখ্যা।
নবমস্যাস্য পৃথঙনামা কথনাৎ নাম্নাপি
নবদ্বীপোহয়মিতি গম্যতে।।”

নবদ্বীপ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণে। তিনি লিখেছেন—

“গঙ্গারে লইয়া যান আনন্দিত হইয়া।
আসিয়া মিলিল গঙ্গা তীর্থ যে নদীয়া।।
সপ্তদ্বীপ মধ্যে সার নবদ্বীপ গ্রাম।
একরাত্রি গঙ্গা তথা করিল বিশ্রাম।।”—-এখানেও সপ্তদ্বীপের উল্লেখ পাচ্ছি।

নরহরি চক্রবর্তীপাদ লিখেছেন—” নব দ্বীপে নবদ্বীপ বেষ্টিত যে হয়।”— অর্থাৎ, নবদ্বীপ হচ্ছে নয়টি দ্বীপ দ্বারা বেষ্টিত একটি স্থান।

অন্তর্দ্বীপ– বর্তমানের বাবলারি অঞ্চল।

সীমন্তদ্বীপ– সিমলিয়া, যার উল্লেখ শ্রীচৈতন্য ভাগবতেও আছে। বর্তমান নাম বামনপুকুর গ্রাম।

গোদ্রুম দ্বীপ–বর্তমান গাদিগাছা।

মধ্যদ্বীপ–বর্তমান মাজিদা।

কোলদ্বীপ– বর্তমান কুলিয়া।

ঋতুদ্বীপ– বর্তমান বর্ধমানের অন্তর্গত বিদ্যানগর, চাঁপাহাটি, রাহাতুল প্রভৃতি গ্রাম।

জহ্নুদ্বীপ– বর্তমান জাহান্নগর।

মোদ্রুমদ্বীপ– বর্তমান মামগাছি।

রুদ্রদ্বীপ—এই দ্বীপ বর্তমানে অবলুপ্ত। তবে রুদ্রপাড়া নামক একটি মৌজা আছে নবদ্বীপ থানায়।
তবে হ্যাঁ, গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় পূর্ব-পশ্চিম পাড়ে যে অবস্থান দ্বীপগুলির নরহরি বলেছেন— তা বর্তমানে স্বাভাবিক ভাবেই পরিবর্তিত।

‘শ্রীশ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্য’ গ্রন্থে শ্রীহরিদাসজী নরহরি চক্রবর্তী পাদের ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের ভৌগলিক বর্ণনা সম্পর্কে লিখেছেন —-“ভক্তিরত্নাকর পঞ্চম তরঙ্গে শ্রীব্রজমন্ডলের এবং দ্বাদশ তরঙ্গে শ্রীনবদ্বীপ পরিক্রমার যে সুবৃহৎ ও পরিষ্কার মানচিত্র তিনি অঙ্কিত করিয়াছেন , তাহাতে স্থান বিলুপ্ত হইলেও সহৃদয় ভক্তচিত্তে ও কালের পৃষ্ঠায় এই দুই স্থানের ভৌগোলিক তত্ত্ব চিরদিন অঙ্কিত হইয়া থাকিবে। ঐতিহাসিক হিসেবে এই গ্রন্থের মূল্য অত্যল্প হইলেও কিন্তু স্থানসূচক বিবরণে ইহাকে অমূল্যই বলিতে হয়।”

গোরাচাঁদ বাবু বলছেন কাল্পনা করে গ্রন্থ লিখেছেন নরহরি চক্রবর্তীপাদ , আর সুবিখ্যাত বৈষ্ণব সাহিত্য গবেষক শ্রীবিমানবিহারী মজুমদার ‘শ্রীচৈতন্য চরিতের উপাদান’ গ্রন্থে নরহরি চক্রবর্তীপাদের ভক্তিরত্নাকর সম্পর্কে লিখেছেন—-“তিনি তৎকালীন ব্রজমন্ডলের সমস্ত গ্রন্থ ও পুরাণাদি পাঠ করেছিলেন। ওই সমস্ত গ্রন্থ হইতে তিনি নানা স্থানে প্রমাণাদি উদ্ধার করিয়াছেন।… ‌. ‌ভক্তিরত্নাকর ঐতিহাসিকদের নিকট শ্রদ্ধা পাইবার যোগ্য।”

না, প্রাচীন কালে নবদ্বীপের নয় দ্বীপের অস্তিত্ব ছিল , কি ছিল না—- আদৌ সে তর্ক বিতর্ক বা সমালোচনার সম্মুখ সমরে আমি যাচ্ছি না। হয়তো বা ছিলও না। কিন্তু , আমার যে ব্যাপারটি খারাপ লেগেছে বা বলা ভাল যন্ত্রণা দিয়েছে যা আমায় তা হল শ্রীল নরহরি চক্রবর্তীপাদ সম্পর্কে আপনার তির্যক মন্তব্য। এই যে আপনি বলছেন নরহরি চক্রবর্তীর হঠাৎ মনে হল তিনি কিছু লিখবেন(!), তা আমার প্রশ্ন হল তিনি কি কেবল হঠাৎ মনে হওয়া থেকে ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থ রচনা করলেন! তাঁর লেখনীতে তো আরও অদ্ভুত অদ্ভুত সুমহান গ্রন্থ রচিত হয়েছে বলে উল্লেখ পাই গৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্যে । যেমন—শ্রীনরোত্তম বিলাস, শ্রীনিবাস চরিত্র, গীতচন্দ্রোদয় , ছন্দঃসমুদ্র , গৌরচরিত চিন্তামণি, নামামৃত সমুদ্র , পদ্ধতি প্রদীপ প্রভৃতি।

শ্রীল নরহরি চক্রবর্তীপাদ যদি ভক্তিরত্নাকর রচনা না করতেন তাহলে শ্রীমন্ মহাপ্রভু, শ্রীনিত্যানন্দ ও শ্রীঅদ্বৈত আচার্য এর অপ্রকটের পড়ে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কর্মযজ্ঞ, নাম-প্রেম প্রচার ধারা কোন পথে কোন খাতে বয়ে গেছে কিভাবে—— তা তো আমরা জানতেই পারতাম না। চৈতন্য পরবর্তী যুগ আমাদের কাছে অজানাই থেকে যেত। আর, সেই গ্রন্থকে গোরাচাঁদ বাবু বলছেন হঠাৎ মনে হবার ফসল!

আচ্ছা ধরে নিলাম যে নরহরি চক্রবর্তীপাদ কল্পনা করেই নয় দ্বীপের কথা লিখেছেন, কিন্তু এটা তো কোনো বিতর্ক সভা, সেমিনার নয়—তাহলে কেন গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়কে তথা সমষ্টিকে আঘাত দেওয়া ! নরহরি চক্রবর্তীপাদ তো বৈষ্ণব ইতিহাসের সুপ্রসিদ্ধ মহাজন। তাঁর মনে এতটাই দৈন্য ছিল যে তিনি রান্নার দায়িত্ব তো অনেক দূরের কথা , মন্দিরের বহিরঙ্গের সেবা করতেন নিজেকে অযোগ্য ভেবে। মন্দির মার্জন, রান্নার কাঠ আহরণ, তুলসী চয়ণ, পুষ্প সংগ্রহ ইত্যাদি । স্বয়ং শ্রীগোবিন্দদেব জয়পুরের রাজাকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন যাতে তাঁর রন্ধনের দায়িত্ব নরহরি চক্রবর্তীপাদ নেন। জয়পুরের নরেশ জয়পুর থেকে বৃন্দাবনে এসে নরহরিকে এই স্বপ্নাদেশের বৃত্তান্ত জানান ও গোবিন্দদেবের রঁসুইয়ার পদে দায়িত্ব গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। অনন্ত তাঁর গুণ। গৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্যে তাঁর গুণের কথায় বলা হয়েছে , “তিনি একাধারে সুনিপুণ গায়ক, বাদক,পাচক, বৈষ্ণব কবি ও ঐতিহাসিক ছিলেন।”— এহেন মহাজনকে গোরাচাঁদবাবু কত তাচ্ছিল্যভরে কেবল রান্নার লোক বলে দিলেন!

ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থের দ্বারা আমরা চৈতন্য পরবর্তী যুগের অধিনায়ক শ্রীনিবাস- নরোত্তম- শ্যামানন্দ প্রভুদের ঐতিহাসিক বিজয় অভিযানের কথা জানতে পারি। প্রথম গৌড়ীয় বৈষ্ণব মহাসম্মেলন খেতুরীর উৎসবের(১৫৮৩খ্রিষ্টাব্দ) এমন বিশদ বর্ণনা , বৃন্দাবনের সপ্ত দেবালয়ের ইতিহাস, বৃন্দাবনের ভৌগলিক বর্ণনা, আমাদের পূজনীয় আচার্য বর্গ সম্পর্কে জানতে পারি— এক কথায় শ্রীমন্মহাপ্রভুর পরবর্তী যুগের ইতিহাসের একটা সুবৃহৎ চিত্রের সন্ধান পাই বৃহৎ কলেবরের এই ‘শ্রীশ্রীভক্তিরত্নাকর’ আকর গ্রন্থে। সেই গ্রন্থের কিছু কথা কে নির্ভর করে আপনি ‘বোগাস’ শব্দটি প্রয়োগ করে দিলেন! এমন একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রসঙ্গে আপনি এমন ভাবে বাক্য প্রয়োগ করলেন , যে এ গ্রন্থ নরহরি চক্রবর্তীর কল্পনাপ্রসূত ও সাময়িক যেন লেখায় হাত পাকানোর চেষ্টা ব্যতীত আর কিছুই নয়।

লুপ্ত বৈষ্ণব শাস্ত্রের উদ্ধারক, সংরক্ষক, গবেষক, প্রচারক তথা ‘শ্রীবৈষ্ণব রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকিশোরী দাসজী লিখেছেন—-
“শ্রীগৌরাঙ্গ লীলা কাহিনী বর্ণনা বিষয় যেমন শ্রীচৈতন্যভাগবত, শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত পরিপূরক , তাদৃশ ভাবে শ্রীনরোত্তম বিলাস ও শ্রীভক্তিরত্নাকর পরিপূরক গ্রন্থ শ্রীনিবাস- নরোত্তম-শ্যামানন্দের সপার্ষদ মহিমা রাশি বর্ণনে।”

“নিষ্ঠাবান বৈষ্ণবদের নিকট শ্রদ্ধা পাইয়াছে ভক্তিরত্নাকর গ্রন্থ।”— শ্রীহরিদাসজী বলেছেন।

তাই , শ্রদ্ধেয় গোরাচাঁদ ভট্টাচার্য মহাশয় আপনার কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ যে, আপনি প্রবচন দিতে বসে এমন ভাবে মন্তব্য করবেন না যাতে বৈষ্ণব মহাজন ও আচার্যদের মহিমা সম্পর্কে মানুষের মনে সংশয়ের সৃষ্টি হয় , বিশ্বাস ভগ্ন হয়, ভক্তহৃদয় দুঃখ পায়। আর, বামন হয়ে চাঁদ ধরার মত , আমার মত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জনকেও কলম ধরতে হয় আপনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। অনুরোধ অন্তত ভাগবত প্রবচন এর আসরে বসে এধরনের মন্তব্য করার আগে একটু ভেবে নেবেন, একটু থেমে যাবেন ।

অধমা রাধাবিনোদিনীর ধৃষ্টতা ও ভুল-ত্রুটি নিজ গুণে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন আশা করি।

—-প্রণামান্তে
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।