রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এর সমালোচনা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ডাক্তার মানস ভুঁইয়া।

0
399

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর:- ১৯০৯ সালের ১১ ডিসেম্বর পরাধীন ভারতবর্ষের বীর বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগোকে দ্বীপান্তরে যেতে হয়েছিল। হেমচন্দ্রের জন্ম অবিভক্ত মেদিনীপুর এর নারায়ণগড় ব্লকের রাধানগর গ্রামে। শৈশবে খাকুড়দার বড়মোহনপুর হাইস্কুলে পড়াশুনা করে মেদিনীপুর টাউনস্কুলে ভর্তি হন। এরপর ডাক্তারি পড়ার জন্য কোলকাতায় ভর্তি হলেও পড়া শেষ না করেই আর্ট কলেজে ভর্তি হন। সেখানেও পড়া অসম্পূর্ণ করে মেদিনীপুরে ফিরে আসেন। ভগিনী নিবেদিত এবং ঋষি অরবিন্দের সান্নিধ্যে এসে মেদিনীপুর শহরে গুপ্ত সমিতি গঠন করে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সঙ্গী ছিলেন ঋষি রাজনারায়ণ বসুর দুই ভ্রাতুষ্পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ বসু এবং জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু। এই গুপ্তসমিতির সঙ্গে যুক্ত হন বিপ্লবী বারিন ঘোষ এবং উল্লাসকর দত্ত। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ১৯০৬ সালে হেমচন্দ্র প্যারিসে যান। বোমা তৈরির কৌশল এবং গুপ্তসমিতি পরিচালনার নিয়ম জানতে। ১৯০৭ সালে প্যারিসে বসেই ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকার স্কেচ তৈরি করেন। সেই পতাকা ১৯০৭ এর ২২ আগষ্ট জার্মানির স্টুয়ার্টগার্টে তুলে ধরেন ভিকাজি রুস্তম মাদাম কামা।
১৯০৭ এর শেষ দিকে দেশে ফিরে আসেন হেমচন্দ্র। ১৯০৮ এ আলিপুর বোমা মামলায় হেমচন্দ্র সহ বহু বিপ্লবী গ্রেপ্তার হন। ১৯০৯ এ আলিপুর বোমা মামলার রায়ে হেমচন্দ্র কানুনগো সহ কয়েকজনের দ্বীপান্তর হয়। ১৯০৯ এর ১১ আগষ্ট তাঁর দ্বীপান্তর যাত্রাকে প্রতিবছর স্মরণ করে তাঁরই জন্মভিটা রাধানগরে গড়ে ওঠা হেমচন্দ্র সাহিত্য সভা।
এবার সেই দিনটি শনিবার পালিত হল মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে। এদিন এই উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন,’মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস চর্চার জন্য বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগকে উদ্যোগ নিতে হবে। হেমচন্দ্র সাহিত্য সভা উদ্যোগ নিলে রাধানগর গ্রামে হেমচন্দ্রের বসত বাড়িটি হেরিটেজ ঘোষণায় সহযোগিতা করব। এসব চর্চা অত্যন্ত জরুরি’।
রাজ্যের জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন এবং ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া ছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মেদিনীপুর কলেজের এসোসিয়েট প্রফেসর সত্যরঞ্জন ঘোষ, লেখিকা রোশেনারা খান, শিক্ষক ও লেখক অখিলবন্ধু মহাপাত্র, বিধায়ক জুন মালিয়া, জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক চন্দন বসু প্রমূখ। স্বাগত রাখেন হেমচন্দ্র সাহিত্য সভার চেয়ারম্যান সবিতা মন্ডল। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঘোষ।
আলোচনাসভার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মানসবাবু রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এরাজ্যের রাজ্যপালের ভূমিকা হতাশা ব্যঞ্জক। তিনি যা করছেন তা সংবিধান বিরোধী। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়’। সম্প্রতি চাষের মরশুমে প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ সরকার দিবে বলে মানসবাবু মন্তব্য করেন।