নিন্দার ঝড় পাঁশকুড়ার নস্করদিঘিতে, মানসিক প্রতিবন্ধী পরিবার বঞ্চিত রেশন ও বার্ধক্যভাতা থেকে।

0
385

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- দরিদ্র পরিবার ,বৃদ্ধা মা মানসিক ভারসাম্যহীন, ছেলে মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। বাঁচতে হবে তবু মানসিক প্রতিবন্ধকতাকে জীবনের সঙ্গী করেই রান্নাবান্না সহ সংসারের কাজ করে চলেছে নন্দ পরিবারের অসহায় তিন সদস্য।
স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপন চলাফেরা হারিয়ে গিয়েছে জীবন থেকে। চলাফেরা করতে গেলেই বার বার পড়ে যায়, কোনোরকম কোনো কিছুকে অবলম্বন‌ করে উঠে দাঁড়ায় ছেলে সুজয়। বয়স বেড়ে ওঠার সাথে সাথেই বৃদ্ধ মা সহ ছেলে মেয়ে হারিয়েছে শারীরিক ক্ষমতা।পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নস্করদিঘী গ্রামের নন্দ পরিবারে মঞ্জরী দেবীর আর তেমন কেউ নেই রোজগার করে সংসার প্রতিপালন করার মতো। এমনিতেই সামান্য সরকারের দেওয়া রেশনটাও বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ারও মতো কেউ নেই, তাঁর ওপর তিন চার মাস আগে আঁধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও কিন্তু আঙ্গুলের টিপছাপ না মেলায় সেই থেকে রেশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হতে হয় তাঁদের। দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হলেও তাঁদের দুয়ারে পৌঁছয়নি চাল ডাল। তারপর থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও কোনো সহযোগীতা পায়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। ভোট এলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়, কিন্তু ভোটে জয়ী হওয়ার পরে প্রতিশ্রুতি রাখেনি নেতা নেত্রীরা , ঘুরেও তাকায়নি ওই অসহায় পরিবারের দিকে।স্বাভাবিক মানুষের মতো তাঁদের জীবন থেকে হারিয়েছে স্বাভাবিক ছন্দ।
৬৯ বছর বয়সী মঞ্জরী নন্দ মানসিক বিধ্বস্ত হয়ে কথা বলার মতো ক্ষমতা হারিয়েছেন, তাঁর মেয়ে প্রতিমাও মানসিক প্রতিবন্ধী। তবু মানসিক প্রতিবন্ধী দুই ছেলে মেয়ে কোনোপ্রকার মা এর সংসার আগলে রেখে চলেছে।
তাঁর মাঝে যেন গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসারের অনটন। দীর্ঘ পাঁচ মাসেরও বেশি রেশন দ্রব্য থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে ওই অসহায় পরিবার। রেশনের চাল ডাল কিছুই পায়নি তাঁরা, রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রক্রিয়া চালু হলেও অসহায় নন্দ পরিবারের বাড়িতে কেন রেশন পৌঁছয়নি তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাঁর ওপর বৃদ্ধা মঞ্জরী নন্দ বার্ধক্য ভাতা থেকেও বঞ্চিত এমনটাই অভিযোগ পরিবারের।
তবে এই অবস্থায় কিছু জমানো টাকা রয়েছে, তাতেই কোনোপ্রকার খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে হচ্ছে ওই পরিবারকে।প্রতিবেশিরা বাজার হাট করে নিয়ে এসে তাঁদের হাতে তুলে দেয়। প্রতিবেশিদের সহযোগীতায় দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে বেঁচে রয়েছে ওই পরিবার। একসময়
আই সি ডি এসে অন্যের পরিবর্তে রান্না করতেন মঞ্জরী দেবী, করোনাকালে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে কাজ খোয়া যায় তাঁর, জমি বিক্রি করেই একসময় ছোট্ট ইটের বাড়ি তুলেছিলেন, তাতেই দিনযাপন করে চলেছেন অসহায় পরিবারটি। দুবার ব্রেনস্ট্রোক হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বৃদ্ধা মঞ্জরী নন্দ।
আজ আশ্রয়ের মতো ঘর আছে কিন্ত খাওয়ার নেই, কোনোপ্রকার অন্যের বাড়ি থেকে ধার করে চাল ফুটিয়ে ভাত রান্না করে মেয়ে প্রতিমা।
সে কারনে রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের কাতর আর্তনাদ রাজ্য সরকার যাতে তাঁদের পাশে থাকেন, এবং রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকারের রেশন তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে তাঁরা হয়তো খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে।
অসহায় বৃদ্ধাকে তাঁর দুরাবস্থার কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন, কথা ঠিক মতো বলতে না পারলেও কোনো প্রকার বুঝে নিতে হয়েছে তিনি সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত,পাশে নেই রাজ্য সরকার।