সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং : – বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল এক মহিলা মৎস্যজীবীর। মৃতের নাম মালতি সরকার(৬৫)।ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুর নাগাদ বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতীয় ভূখন্ডের সুন্দরবনের ঝিলা ২ জঙ্গল এলাকায়।মৃত মৎস্যজীবীর বাড়ি প্রত্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের লাহিড়িপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লাক্সবাগান ১১১ নম্বর গ্লাসখালি পূর্বপাড়া গ্রামে।এদিন এমন দুর্ঘটনার কথা গ্রামে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে বুধবার ভোরে ১১১ নম্বর গ্লাসখালির পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মালতী সরকার,তার প্রতিবেশী মৎস্যজীবী কিশোরী মন্ডল ও তার স্ত্রী কমলা মন্ডল প্রত্যন্ত সুন্দরবন জঙ্গলের নদীখাঁড়িতে কাঁকড়া ধরার জন্য রওনা দিয়েছিলেন ডিঙি নৌকা নিয়ে।সকাল ১১ টা নাগাদ বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া সুন্দরবন জঙ্গলের ঝিলা ২ জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার নদীখাঁড়িতে পৌঁছায়।এরপর তিন মৎস্যজীবী মিলে কাঁকড়া ধরার জন্য দোন পেতেছিলেন নদীখাঁড়িতে।আপনমনে তিন মৎস্যজীবী সেই দোন তোলার কাজ করছিলেন। সেই সময় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে। টার্গেট করে মহিলা মৎস্যজীবী মালতী সরকার কে।এরপর সুযোগ বুঝে সকলের অলক্ষ্যে আচমকা লাফ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মালতী সরকার নামে ওই মৎস্যজীবীর ঘাড়ে।তার ঘাড়ে কামড় বসায়। এরপর একলহমায় ঘাড়ে তুলে হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে যায় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের দিকে। মৎস্যজীবী দম্পতি বাঘের মুখ থেকে তাদের সঙ্গী মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করার জন্য নৌকার হাল আর কাঁকড়া ধরার শিক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের উপর।দীর্ঘপ্রায় মিনিট কুড়ি লড়াই চলে বাঘে মানুষে।লড়াইয়ের ময়দানে একে অপরের একইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ।শেষ পর্যন্ত বাঘের রুদ্রমূর্তির সামনে অসহায় হয়ে পড়ে লড়াই করা মৎস্যজীবী দম্পতি।পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রণে ভঙ্গ দেয় কিশোরী মন্ডল ও তার স্ত্রী কমলা মন্ডল।বাঘ তার শিকার কে নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে চলে যায়। এরপর হতাশ মৎস্যজীবী দম্পতি নৌকার বৈঠা বেয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।